মোহাম্মদ রফিকুল কাদেরের কবিতা
প্রকাশ | ১৪ জুন ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া
\হ
মগজের জঞ্জাল সরিয়ে তাকে বললাম-
'সহজ করে ভাবো, সহজ হও, সরল পথে চলো।
স্নায়ুকে শিথিল করো, চেতনাতে দাও শান
ক্রোধ, বাসনা, হিংসা, দ্বেষ'কে বলো- শুভ বিদায়।'
অতঃপর, আমি এই দুঃখের সাগরে ভাসতে ভাসতে
বদ্বীপের কিনারে পেয়েছি ঠাঁই, পেতেছি সংসার,
চেতনার পলিতে প্রতিনিয়ত চাষ করছি বনসাই।
অভ্যেসের চাষাবাদে- দুঃখকে আমি করে নিয়েছি বামন।
নেই কারো কাছে কোনো দাবি,
নেই কারো প্রতি কোনো অনুযোগ,
নেই কোনো অভিযোগ;
সকলকে করেছি ক্ষমা-
জানের দুশমনকেও দিয়েছি বিনা শর্তে মাফ,
সকলের পদতলে বসে নিজেও চাই নিঃশর্ত ক্ষমা।
জনতা ও নির্জনতা
\হ
উর্দি ঢাকা মুখ আর মুখোশের বিস্তার সর্বত্র
কোথায় হারালো সেসব সহজ-সোনার মানুষ
কোথায় লুকালো সফেদ মনের আমজনতা?
স্বার্থ-সভ্যতা-প্রযুক্তির দেয়ালে মাথা ঠুকে আর্তি,
আর্তের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি উপহাস হয়ে ফিরে আসে,
বোবা সময়ে বিস্ময়ে বিহ্বল, চরাচর জুড়ে কেবলই নির্জনতা!
বেদনাপুরাণ
\হ
বোবা সময়ে জানতে চেয়ো না
আমার কুশল- আমি কেমন আছি।
মন বিষাদে ভরা- আকাশ চির অধরা,
আমি সদা মাটির কাছাকাছি।
ফিরে যায় ফেব্রম্নয়ারি-মার্চ, আগস্ট-ডিসেম্বর,
বোবা-কালা-অন্ধ হয়ে আছি বরাবর-
মুদ্রাস্ফীতিকালে স্থির কি কোনো কিছুর দর?
আমার জীবনের দামই বা কত? আমারই বা কি কদর?
চাল-ডাল, নুন-তেল, জল-জ্বালানির দামে হাহাকার,
সময়ের কশাঘাতে বাড়ছে ক্ষুধার জ্বালা ঘরে ঘরে বাংলার,
প্রিয়তমা, তাই তোমার কথা মনে পড়ে না আর,
কেবল দ্রব্যের উচ্চমূল্যের কথাই মনে পড়ে বারবার।
আমি মাঠের কৃষক থাকি ধুলো-কাদায় মাখামাখি
আমি- প্রান্তিকজন চির অভাজন আছি সদা মাটির কাছাকাছি
এই বোবা সময়ে জানতে চেয়ো না
আমার কুশল- আমি কেমন আছি।
মনোলগ
কতখানি ছিল পরিচয় তার সাথে
কতখানি চেনাজানা?
ছিল কি প্রাগ-পুরানা হিসাবনিকাশ;
হৃদয়ের লেনাদেনা?
দিয়েছিলে তারে কতখানি প্রতিশ্রম্নতি
শুভ্র হৃদয়ের কত আবেগ-অনুভূতি?
হৃদয়ের উর্বর জমিনে কি পেতেছিল বসত;
সে কি বেঁধেছিল ঘর?