হিসেবের খাতা যেমনটি ছিল তেমনই থাকুক পড়ে
এখন বৃষ্টিবিঘ্নিত সময়ের গর্জন
যে গল্প বলা হয়নি এখনো তাই শুরু করা যাক
অতীত পেরিয়ে ভবিষ্যতের সিঁড়িতে পা রাখি
বর্তমান তো ক্ষণিকের খেলা, জীবনও তো তাই।
নিরীহ কিংবা দন্ড্য-অতীত খুঁচিয়ে মুক্তো পেলে মন্দ না
ভবিষ্যতের ভাতের জোগাড় নিশ্চিত হতে পারে
বারবার এই সিঁড়িতে পা রাখা ফুসফুসে চাপ বাড়ে
তাই হিসেবের খাতা পাতা উল্টায়।
অতীত-গল্প বেমালুম ভুলে যাওয়ার কথা কপচায় যতবার!
ততবার তুমি ভবিষ্যতের দীক্ষায় বলীয়ান হয়ে ওঠ
উত্তাল সময়ের মজবুত পায়ে
শিকল পরিয়ে দেয় অতীতের হাত।
মীমাংসা যদি না হয় কখনো, থাকা যে যায় না
থাকতে তো চাই, থাকা কি সহজ? বারবার ফিরে দেখি
অতীতের হাত নিষিদ্ধ কালো থাবা হয়ে আসে, বুকে বিঁধে
তাই হিসেবের খাতা পাতা উল্টায়।
রক্তনালিতে বয়ে চলে নদী, লালজলনদী...
সেখানে পড়েছে প্রবাহরোধের চর
তাই পিঁপড়েরা গড়েছে আবাস।
ভালোবাসা নদী হয়ে রয়ে যাবে আর কতকাল!
যদি না নিলামে ওঠে সেই নদী
ক্লান্তিতে বাঁধে বেদনা বধের দুর্জয় ঘাঁটি
তাই হিসেবের খাতা পাতা উল্টায়।
আবশ্যকের প্রতিবাদী ঝড় বর্তমানের ক্ষণিক সময় ঘিরে
ড্রেসিং টেবিলে দন্ডায়মান আয়না সাক্ষী।
আলমারি ভরা বইয়ের স্তূপ বিদ্রম্নপ করে-
জ্ঞানের আধার কতখানি খালি আর কতখানি ভরা
এক চামচের মূল্যে কি আর কুয়ো ভরা যায়!
তাই হিসেবের খাতা পাতা উল্টায়।
পূর্ণ হলো কি আমার জীবন?
দিয়েছি কি কিছু মায়াময় পৃথিবীকে?
মুখটি লুকিয়ে পাওয়া যাবে কি পাড়, মুখ যদি নাই থাকে!
সূর্য শাসায় হাতের মুঠোয় আগুনের গোলা নিয়ে
পূর্ণিমা চাঁদ ড্যাব ড্যাব করে বেড়ালের চোখে মমতা ছড়ায়
আমার এখন ওসব কিছুতে যায় না, আসে না।
তবু সংঘাত ভেতরে ভেতরে, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা
তাই হিসেবের খাতা পাতা উল্টায়।
বসন্তে ছিল পলাশ ফুলের ফাগুন ফাগুন খেলা
তারুণ্য ফিকে হলো কেন বলো অলস দুপুরে।
যৌবন মৌবনে ঢিল ছুঁড়ে হয়ে গেছে নীলে ভোকাট্টা ঘুড়ি।
শেষ বেলা তাই, নয় সহস্র কিলোমিটারের দূরত্বে বসে
আমাকে পালাতে আত্মজা ডাকে।
তাই হিসেবের খাতা পাতা উল্টায়।