বাংলা কথাসাহিত্যিক আধুনিকতা বড় ও স্পষ্ট চেহারা নিয়ে জাহির হয় তিরিশের দশকে। চলিস্নশের প্রজন্মের কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে সৈয়দ ওয়ালীউলস্নাহ, জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী, সমরেশ বসু ও শওকত ওসমান ছাড়া বাদবাকি লেখকরা ওই আধুনিকতাকে তেমন উলেস্নখ্যভাবে ধারণ করতে পারেননি। তা সত্ত্বেও দেশভাগপূর্ব এ অঞ্চলে গল্প-উপন্যাস লিখে কম-বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছিলেন আবুল ফজল, শওকত ওসমান, আবু ইসহাক ও শামসুদ্দীন আবুল কালাম। আজকের আলোচনা এদের নিয়েই।
চারের দশকের প্রধান প্রধান ঘটনা হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, মন্বন্তর, পাকিস্তান আন্দোলন, রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও দেশভাগ। এ দশককে পটভূমি করে উপন্যাস লিখেছেন আবু ফজল, সরকার জয়েনউদদীন আবু রুশদ, রশীদ করীম প্রমুখ। ওপরে উলিস্নখিত সব ঘটনার কথাই তারা কম-বেশি লিখেছেন তাদের উপন্যাসে। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, দু'তিনজন ছাড়া অন্যরা প্রগুক্ত সময়পর্বটিকে ঠিকমতো বুঝতে পারেননি।
আবুল ফজলের গোড়ার দিকের উপন্যাস, 'চৌচির' সবার্থে দুর্বল রচনা। এ সম্পর্কে আমি আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তার উলেস্নখযোগ্য উপন্যাসের নাম 'রাঙা প্রভাত।' এ অঞ্চলে পাকিস্তানি আমলের গোড়ার দিকে যে অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ বজায় ছিল সেটা তিনি উপন্যাসে তুলে এনেছেন। হিন্দু-মুলমান সাংস্কৃতিক সম্পর্কিত মূল্যবোধ এ রচনার শক্তিমালী দিক যা এ সৎ লেখককে চিনতে সাহায্য করে। 'রাঙা প্রভাত'-এ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও দেশভাগে কথা আছে। আছে মুসলমান নায়কের সঙ্গে হিন্দু নায়িকার প্রেম ও মিলনের প্রসঙ্গ। এ সাহসিকতা প্রশংসাযোগ। কিন্তু এ উপন্যাসের দুর্বল দিক হচ্ছে ভাবালুতা। শিক্ষিত নায়কের গ্রাম সংস্কার চেষ্টা, নারী শিক্ষা চালু রাখার উদ্যোগ, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাবে এমন প্রতিষ্ঠান স্থাপন। এসবের মধ্য থেকে তা স্পষ্ট হয়। কিন্তু সমাজকে নির্মোহ দৃষ্টিতে দেখা ব্যাপারটা এখানে অনুপস্থিত। সেজন্য প্রয়োজন ছিল বিজ্ঞাপনসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণী মন যা আবুল ফজলের মধ্যে নেই। তবু যতটুকু আছে সেটাকেই আমরা সাধুবাদ জানাব। উপন্যাস হিসেবে সেটাকেই আমরা সাধুবাদ জানাব। উপন্যাস হিসেবে সার্বিক বিবেচনায় 'রাঙাপ্রভাত' কতখানি সার্থক এ প্রশ্ন থেকে যায়। কেননা হৃদয়গ্রাহী ভাসা আর শিল্পসম্মত রহস্যমতার দেখা আমরা এখানে পাই না। চরিত্রগুলোও যে বেড়ে উঠতে পারেনি। চরিত্রের বৈশিষ্ট্য তো ফুটে ওঠে সংলাপের মাধ্যম। বর্ণনার ভেতর দিয়ে যদি চরিত্রের বিশেষত্ব তুলে ধরা হয় তবে সেটা অবশ্যই লেখকের দুর্বলতা। অথচ লেখক সেই কাজটাই করেছেন। এ গ্রন্থে সংলাপের পরিবর্তে বড় হয়ে উঠেছে বক্তৃতা। 'রাঙাপ্রভাত'এর পটভূমি বাংলাদেশের পশ্চাৎপদ গ্রাম। গ্রামরে জীবন উপজীব্য হলেও এখানে উপেক্ষিত হয়েছে বৃহত্তর জনজীবন। লেখকের দেখাটা সম্পন্ন হয়েছে বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে, হৃদয়ের দিক থেকে নয়। আবার যথেষ্ট শিল্পও হয়ে উঠতে পারেনি এ উপন্যাস। কথাসাহিত্যেকের সামগ্রিক জীবনচেতনার অভাব এজন্য দায়ী।
শামসুদ্দীন আবুল কালামের লেখক পরিচিতি, দাঁড়িয়ে আছে প্রধানত দুটি গ্রন্থের ওপর। এক, 'কাশবনের কন্যা' দুই. কাঞ্চনমালা।' বহুকাল পরে ২০০৩-০৪ সালে প্রকাশিত হয় তার সর্বশেষ উপন্যাস কাঞ্চনগ্রাম। ঢাউস এ বইটির রচনা অসম্পূর্ণ থাকা অবস্থায় প্রবাসে তার মৃতু্য হয়। 'কাশবনের কন্যা, ও কাঞ্চনমালা ধারণ করেনি সমসাময়িক রাজনীতি। দেশবাস্তবতা বলতে যা বোঝায় তা এ গ্রন্থে নেই। দারিদ্র্য ও দুর্ভিক্ষের যে মর্মন্তক চিত্র পাওয়া যায় আবু ইসহাক, শওকত ওসমানদের লেখায় তাও এখানে অনুপস্থিত। অপরাজনীতি, দেশভাগ এগুলো কিন্তু শওকত ওসমান, আবু রুশদ প্রমুখের উপন্যাসেও দেখা যায় না। কিন্তু তারা জীবনের অনেক প্রসঙ্গ-অনুষঙ্গকে সথাসাহিত্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে চমৎকারভাবে মেলাতে পেরেছেন। শামসুদ্দীন আবুল কালামের সে যোগ্যতা ছিল বলে মনে হয় না।
'কাশবনের কন্যা'র ও 'কাঞ্চনমালা' উভয়েরই উপজীব্য প্রেম। 'কাশবন্যের কন্যা'র পটভূমি বরিশভুলর প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম। এক-দেড়শ' বছর আগের গ্রামের থেকে সেই গ্রামের কোনো পার্থক্য নেই। শামসুদ্দীন গল্প বানাতে পারেন। উলিস্নখিত উপন্যাসদ্বয়ে আমরা দেখি নিটোল ও স্থূল কাহিনি। গল্পের গতি খুব ধীর। জহির রায়হানের 'হাজার বছর ধরে উপন্যাসে যেমন গ্রামবাংলার কিছু চিরায়ত সত্য প্রতিভাত হয়েছে, তেমন কিছুও আমরা খুঁজে পাই না। তাহলে কি ঔপন্যাসিক হিসেবে শামসুদ্দীন আবুল কালাম ব্যর্থ? না, তিনি পুরোপুরি ব্যর্থ নন। কেননা গল্প বলা ঢঙের মধ্যে একটা আন্তরিক সুর আমরা পাই। সাদামাটা গ্রামীণ দার্শনিকতা, আদর্শবাদী কতাবার্তা বিরক্তিকর মনে হলেও শিকদার ও হোসেনের প্রেমের গল্প আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। ওপরে উলিস্নখিত তিনটি উপন্যাসের মধ্যে আমি 'কাশবনের কন্যা'কেই সবচেয়ে বেশি নম্বর দেব। তুলনায় 'কাঞ্চনমালা অনেকটা নিষ্প্রভ। এ বইয়ের চরিত্র সত্তরের দশকে নির্মিত অসংখ্য সিনেমার ইচ্ছা পূরণের গল্পের খুব কাছাকাছি।
উপন্যাসকে তার সমসময়ের রাজনীতি; তা থেকে জাত অস্থিরতা ধারণ করতেই হবে, এমন কথা আমি বলতে চাই না। 'সূর্যদীঘল বাড়ি' তেমনই একটা কাজ যেখানে সমসাময়িক রাজনীতির বিশেষ কোনো ছাপ নেই। দেশভাগের মতো অত বড় ঘটনার উত্তাপ নেই। আবু ইসহাক এ উপন্যাস লিখেছেন দুর্ভিক্ষের পটভূমিতে। দুর্ভিক্ষের অবসান হলে কাহিনীর পাত্রপাত্রীরা শহর থেকে গ্রামে ফিরে আসে। গ্রামে ফিরেও কিন্তু তারা শান্তি পায় না। অভাব-অনটন তাদের পিছু ছাড়ে না। তার ওপর নানারকম উৎপাতের মোকাবিলা করতে হয় তাদের। 'সূর্যদীঘল বাড়ি'র কেন্দ্রীয় চরিত্র জয়গুণ। এর গল্প প্রধানত জয়গুণেরই মর্মস্পর্শী জীবনযুদ্ধের গল্প। আর জয়গুণ তো গ্রামবাংলার চিরায়ত মায়ের প্রতিনিধি। দেশভাগের আগে এবং দেশভাগের অনেক বছর পরও ভারতবর্ষের গ্রামগুলো কতটা পিছিয়ে-পড়া চিল, কতখানি ক্ষুধাপীড়িত, বিবর্ণ ও কুসংস্কারশাসিত ছিল তার একটা নির্ভরযোগ্য দলিল ইসহাকের এ উপন্যাস। জয়গুণের পরিবারের লোকজন যে জীবনযাপন করেছে তাকে মানবেতর জীবন বললেও কিছু কম বলা হয়। উপন্যাসটি পড়ার পর আমার ভেতর অপরাধবোধ জেগে উঠেছিল। মানুষের সভ্যতা-সংস্কৃতি, শিক্ষাদীক্ষা, নাগরিক জৌলুস প্রভৃতি ফাঁপা বলে মনে হয়েছিল। এই যে মনে হওয়া- এই জীবনবোধ জেগে ওঠা, এটা উপন্যাসটির সদর্থক দিক অবশ্যই। আমরা যদি শিল্প হিসেবে উপন্যাসের বিচারে প্রবৃত্ত হই, তাহলে 'সূর্যদীঘল বাড়ি'র ত্রম্নটিসমূহ চোখে না পড়ে যায় না। বাস্তবের অসংখ্য উপাদান এতে আছে। গ্রামের পথ-ঘাট, জলা-জঙ্গল, গরিব মানুষের বাড়িঘর, গোয়াল, হাটবাজার ... সর্বত্র পৌঁছে গেছে লেখকের দৃষ্টি। কিন্তু অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি ও সৃজনী ভাষারীতি বলতে আমরা যা বুঝে থাকি, সেই জিনিস এখানে কোথায়? অনেক সম্ভাবনা নিয়েও উপন্যাসটি, তাই, ঠিকভাবে দাঁড়াতে পারল না। তবে এর ভালো দিক হচ্ছে, বেশি কথা না বলা। নির্মোহ দূরত্ব ও নিরাসক্তি শেষ পর্যন্ত গ্রন্থটিকে পাঠযোগ্য করে তুলেছে।
'জলাঙ্গী', 'দুই সৈনিক,' 'জাহান্নাম থেকে বিদায়' প্রভৃতি উপন্যাস আমাদের জানায়, শওকত ওসমান অত্যন্ত কালচেতন লেখক। এমন একজন লেখক যখন তার সমকালের চালচিত্র এড়িয়ে কুড়ি/পঁচিশ বছর পেছনের গ্রামজীবন নিয়ে লিখতে বসেন তখন বুঝতে হবে তার মনের গঠন স্বতন্ত্র ধাঁচের। এবং তা ঔপন্যাসিক হিসেবে তার আলাদা বৈশিষ্ট্যও তুলে ধরে। বলছি 'জননী'র কথা। 'জননী' শওকত ওসমানের সর্বাধিক পরিচিত এবং সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস। এটা ১৯৪৫ সালে রচিত। প্রকাশিতও হয়েছে কাছাকাছি সময়ে, 'সওগাত' পত্রিকায়। বই আকারে বেরিয়েছে ১৯৬১/১৯৬২ সালে। উপনিবেশ ভারতবর্ষে নগরের বিকাশ ঠিকমতো হয়নি, ফলে তা কৃত্রিম মনে হয়। অভিন্ন কারণে গ্রামের ওপর তার প্রভাবও ক্ষীণ। শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠার সঙ্গে নগরের বিকাশ যে সূত্রে সম্পর্কিত, বাংলাদেশে শহরপত্তনের সঙ্গে গ্রামের পরিবর্তন ও বিকাশ, অন্তত ওই সময়পর্বে, কি তেমনি ঘনিষ্ঠসূত্রে আবদ্ধ? আমার তা মনে হয় না। সেজন্য নতুন গড়ে ওঠা শহরের চাকচিক্য থেকে নিস্তরঙ্গ গ্রামগুলোর ব্যবধান অপরিবর্তিতই ছিল। যে কারণে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো লেখক শহরের নব্য জৌলুসের দ্বারা প্রতারিত হননি, সেই একই কারণ শওকত ওসমান বা তার মতো লেখকদের উদ্বুদ্ধ করেছিল নগরের দীপ্তিশূন্য স্থবির গ্রামসমাজের গল্প লিখতে। ঠিক এই জায়গায় শওকত ওসমানের সততা টের পাওয়া যায়। 'জননী'তে আমরা কী দেখতে পাই? দেখি গত শতাব্দীর প্রথমার্ধের গ্রামগুলোর ছবি- অর্থনৈতিক অবস্থা; হিন্দু-মুসলমানের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সব ধরনের শ্রমজীবী মানুষের দারিদ্র্য এবং আরও অনেক কিছু। আর চরিত্রের কথা যদি বলি, তাহলে বলতেই হবে; ওই কেন্দ্রীয় চরিত্র তো বটেই, আরও কিছু পাত্রপাত্রীর ছবি যে দক্ষতার সঙ্গে লেখক অঙ্কন করেছেন তা বাংলা উপন্যাসে খুব সুলভ বস্তু নয়। ভাষা নিয়ে অবশ্য আপত্তি আছে আমার। 'জননী'তে প্রযুক্ত কথাভাষা আমার ভালো লাগেনি। পরে অবশ্য ভেবেছি, জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, মাহমুদুল হক, আখতারুজ্জামান ইলয়াস, হাসান আজিজুল হক প্রমুখের কথাসাহিত্য পাঠের পর ওই উপন্যাসটি পড়েছি বলেই বোধ হয় আমার ওরকম উপলব্ধি হয়েছে। ভাষা শিল্পর্কে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে যদি সাধারণভাবে উপন্যাসের সার্বিক অর্জনের কথা চিন্তা করি; তাহলে বলতে হয়, মহৎ উপন্যাসের উপাদানে ঋদ্ধ থাকা সত্ত্বেও 'জননী' তা হতে পারেনি। তাই বলে সীমিত পরিসরে যতখানি সাফল্য দেখাতে পেরেছে এ গ্রন্থ তার মূল্য অস্বীকার করি কীভাবে? কীভাবে বিস্মৃত হই তার বিষয়বৈচিত্র্য ও রচনারীতির পার্থক্য যা 'ক্রীতাসের হাসি' থেকে 'জননী'কে কিংবা 'সূর্য তুমি সাথী' থেকে 'দুই সৈনিক'কে স্পষ্টভাবে আলাদা করেছে?
বাংলা গদ্যের দুই শতাধিক বছরের ইতিহাসে বিদ্যাসাগর, অক্ষয়কুমার দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র ছাড়াও আছেন বিশ শতকের অন্তত চারজন খুব উলেস্নখযোগ্য লেখক- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর ও সতীনাথ ভাদুড়ি। চারের দশকের কথাকোবিদগণ যখন লিখতে শুরু করেন ততোদিনে মানিক-বিভূতিদের প্রধান উপন্যাসগুলো বেরিয়ে গেছে। বাংলা উপন্যাস যথেষ্ট আধুনিক হয়ে উঠেছে এবং সংশ্লিষ্ট লেখকরা তাদের দক্ষতা ও নৈপুণ্য প্রদর্শনও করেছেন। এসব তথ্য মাথায় থাকলে এটা পরিষ্কার ধরা পড়ে যে, চারের দশকে আবির্ভূত লেখকরা, দু-একজন ছাড়া তাদের কথাসাহিত্যে কোনো ধরনের আধুনিক চেতনা বা মনন, কিংবা ভাষা বা চিন্তসংক্রান্ত দীপ্তি সরবরাহ করতে পারেননি। শিল্পের প্রধান কাজ সুরুচি তৈরি করা, আঘাত বা প্রশ্নবিদ্ধ করা, মনকে প্রভাবিত করা। অভিজ্ঞতার ঐশ্বর্য ও সৃজনী রুচি ব্যতিরেকে একটি গল্প উপন্যাস হয়ে উঠতে পারে না। কথাসাহিত্যকে কথাশিল্প করে তোলার জন্য যে ধরনের সাংকেতিকতা, রহস্যময়তা ও জীবনচেতনা অপরিহার্য, সেসবের শোচনীয় অভাব দৃশ্যমান উলিস্নখিত লেখকদের রচনায়। বাংলা উপন্যাসের ঋদ্ধ ঐতিহ্য ও ইতিবাচক বিবর্তনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই কিংবা থাকলেও তা অত্যন্ত ক্ষীণ।