এদিকে ভারতের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বিদায়ী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বার অ্যাসোসিয়েশন। সেই অনুষ্ঠানে আইনজীবীদের পাশাপাশি অন্য বিচারপতিরাও উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার বিদায়ী বক্তৃতায় তিনি বলেন, 'দেশের বিচারপতিদের মধ্যে আমাকেই মনে হয় সবচেয়ে বেশি কটাক্ষ করা হয়েছে। যারা কটাক্ষ করেছেন সোমবার থেকে তাদের হাতে আর কোনো কাজ থাকবে না।'
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার সময় প্রধান বিচারপতি তার সব সহকর্মী এবং বার আসোসিয়েশনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, 'আমরা যে সব পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করেছি, তা প্রয়োগ করার জন্য বার অ্যাসোসিয়েশন সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে।' সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কীভাবে দুই দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীকে রাজস্থানের জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, অন্য একটি মামলায় কীভাবে ডাক্তারির এক ছাত্র শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও পড়ার সুযোগ পেয়েছিল, এ সব উদাহরণ তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি সবাইকে বুঝিয়ে দেন যে কীভাবে একজন বিচারপতি সাধারণ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারেন।
এর পরেই নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, 'আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনো গোপনীয়তা ছিল না। সেই জন্যও আমাকে কম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি, কম কটাক্ষের শিকার হতে হয়নি। বিশেষ করে, সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দেশের বিচার ব্যবস্থায় আমার মনে হয়, একমাত্র ব্যক্তিত্ব এবং বিচারপতি যাকে সবচেয়ে বেশি কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। ভাবছি, যারা আমায় কটাক্ষ করেছেন সোমবার থেকে তাদের হাতে আর কোনো কাজ থাকবে না।'
সুপ্রিম কোর্টে জমতে থাকা মামলা নিয়েও চিন্তা প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, শেষ দু'বছরে ১১ হাজার মামলার বোঝা কমেছে। প্রায় ২১ হাজার জামিন মামলার নিষ্পত্তি হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবারের বিদায়ী মঞ্চে বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার হাতে মশাল তুলে দেন চন্দ্রচূড়।
বিচারপতি খান্নার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধান বিচারপতি। তাকে যোগ্য নেতা বলেও অভিহিত করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।
২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ইলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে থাকার পর সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত হন চন্দ্রচূড়। ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর দেশের ৫০তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি। তার পরে সোমবার দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। তবে প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার মেয়াদ মাত্র ছ'মাস। আগামী বছর ১৩ মে অবসর নেবেন তিনি।