বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইনের ফাঁক পূরণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিলেন সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে সব ধর্মের নাগরিকের ওপরে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইন কার্যকর করার যে আর্জি কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, তার পক্ষে রায় দিলেন সুপ্রিম কোর্ট। নিজেদের ১৪১ পাতার রায়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ১৮ বছর আগে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইন কার্যকর হলেও এখনো দেশে বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটছে।
পর্যবেক্ষণে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ বলেন, বিভিন্ন ধর্মের পার্সোনাল আইন এবং বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইনের অধীনে বাল্য বিবাহের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এরই সঙ্গে বেঞ্চ বলেন, এই আইনে বেশ কিছু ফাঁকফোকর রয়ে গেছে তা সংশোধন করা প্রয়োজন। তবে সব ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করা হলো না বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইন।
উলেস্নখ্য, বাল্যবিয়ে প্রসঙ্গে জনস্বার্থে মামলা করে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অভিযোগ করেছিল, বাল্যবিয়ে রোধের আইন সঠিকভাবে কার্যকর করা হচ্ছে না। এই আবহে আদালত জানান, অপ্রাপ্তবয়স্কদের পছন্দমতো বিয়ে করার অধিকারের যুক্তি দিয়ে আইন লঙ্ঘন করে বাল্যবিয়ের অনুমতি দেওয়া যায় না।
মামলার পর্যবেক্ষণে আদালত জানান, বাল্যবিয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট নাবালক বা নাবালিকার জীবনসঙ্গী বাছার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ফলে, কোনোরকম ব্যক্তিগত আইনের ভিত্তিতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইনের অবমাননা করা যাবে না। আদালত এই আবহে বলেছে, '১৯২৯ সালের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইনটির নানা ধারা ২০০৬ সালে সংশোধন করা হলেও এখনো কিছু ফাঁক রয়ে গেছে। সেসব ফাঁক পূরণ করতে হবে সরকারকে।'
ইন্ডিয়া চাইল্ড প্রোটেকশন স্টাডি গ্রম্নপের 'টুওয়ার্ডস জাস্টিস: এন্ডিং চাইল্ড ম্যারেজ' প্রতিবেদনটি বলেছে, ভারতে প্রতি মিনিটে তিনজন মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৮-২০২২ সালের ডেটাতে মাত্র ৩,৮৬৩টি বাল্যবিয়ে রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু, আদমশুমারির হিসেব অনুযায়ী, প্রতি বছর ১৬ লাখ বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়।