আফগান নারীদের আশ্রয় দিতে লিঙ্গ ও জাতীয়তা প্রমাণই যথেষ্ট, ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস
২০১৫ ও ২০২০ সালে দুজন আফগান নারী আশ্রয়ের আবেদন করার পর অস্ট্রিয়ার কর্তৃপক্ষ তাদের শরণার্থী মর্যাদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা অস্ট্রিয়ান সুপ্রিম অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কোর্টের সামনে এই প্রত্যাখ্যানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল
প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
আইন ও বিচার ডেস্ক
ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস (ইসিজে) সম্প্রতি এক রায়ে বলেছে, আফগান নারীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কেবল লিঙ্গ ও জাতীয়তা পরিচয়ই যথেষ্ট। আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবান সেখানে শক্তহাতে নারীদের অধিকার দমন করেছে।
২০১৫ ও ২০২০ সালে দুজন আফগান নারী আশ্রয়ের আবেদন করার পর অস্ট্রিয়ার কর্তৃপক্ষ তাদের শরণার্থী মর্যাদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা অস্ট্রিয়ান সুপ্রিম অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কোর্টের সামনে এই প্রত্যাখ্যানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল। অস্ট্রিয়ান সুপ্রিম অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কোর্ট ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ আদালত ইসিজে থেকে রুলিং চায়।
ইসিজে তার রায়ে বলেছে, 'আবেদনকারী যদি তার মূল দেশে ফিরে যান তবে প্রকৃতপক্ষে এবং নির্দিষ্টভাবে নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে তা প্রমাণ করা অপ্রয়োজনীয়।' 'শুধু তার জাতীয়তা ও লিঙ্গ পরিচয় বিবেচনায় নেওয়াই যথেষ্ট।' এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাড়া দেয়নি।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে ইসলামপন্থি তালিবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তারা স্কুল, কাজ এবং দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতাসহ নারী অধিকারের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
গত আগস্টে তালিবান শরিয়া (ইসলামি আইন) অনুযায়ী নৈতিকতা নিয়ন্ত্রণের একটি দীর্ঘ বিধিমালা প্রণয়ন করে। নৈতিকতা মন্ত্রণালয় এ নিয়ম প্রয়োগ করেছে। তারা বলেছে, এ নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে তারা হাজার হাজার মানুষকে আটক করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান তালিবানকে একগুচ্ছ ভয়ংকর আইন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নারীদের ছায়ায় পরিণত করা হচ্ছে।
আদালতের নথিতে এএইচ নামে পরিচিত একজন নারী ১৩-১৪ বছর বয়সে প্রথমে আফগানিস্তান থেকে তার মা ও বোনদের নিয়ে ইরানে পালিয়ে যান। তার মাদকাসক্ত বাবা তার আসক্তির অর্থ জোগাতে মেয়েটিকে বিক্রি করার চেষ্টা করেছিলেন।
অন্যজন ২০০৭ সালে জন্ম নেওয়া এফএন কখনো আফগানিস্তানে থাকেননি। তিনি এবং তার পরিবার বসবাসের অনুমতি ছাড়াই প্রতিবেশী দেশ ইরানে বসবাস করছিলেন। এর মানে তাদের কাজ করার অনুমতি ছিল না এবং তিনি পড়াশোনাও করতে পারতেন না। অস্ট্রিয়ায় আশ্রয়ের আবেদন করার আগেই তিনি ইরান থেকে পালিয়ে যান।