দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে সমলিঙ্গ বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে থাইল্যান্ড। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজা মহা বাজিরালঙ্কর্ন ম্যারেজ ইকু্যয়ালিটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন।
সমলিঙ্গ বিয়ের আইনি স্বীকৃতি চেয়ে রূপান্তরকামীদের আন্দোলন চলছে পৃথিবীজুড়ে। প্রথম বিশ্বের কিছু দেশ ওই স্বীকৃতি দিলেও অনেক দেশই এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ করতে পারেনি। ভারতের সুপ্রিম কোর্টও সমলিঙ্গ বিয়েতে আইনি স্বীকৃতি দেয়নি। থাইল্যান্ড দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ- যারা সমলিঙ্গ বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দিল।
থাইল্যান্ডের রাজা মহা বাজিরালঙ্কর্ন ম্যারেজ ইকু্যয়ালিটি বিলে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে সেটিকে আইনে পরিণত করেছেন। সমলিঙ্গ বিয়ে নিয়ে থাইল্যান্ডের রূপান্তরকামীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর জুন মাসেই ওই সংক্রান্ত বিল পাস হয়েছিল সে দেশের সেনেটে। সেই খবর প্রকাশিত হয়েছিল থাইল্যান্ডের রয়্যাল গেজেটেও। অবশেষে প্রায় আড়াই মাস পরে খাতায়-কলমে আইনি স্বীকৃতি পেল সেই বিল। তবে সমলিঙ্গ বিয়ে আইন কার্যকর হতে সময় লাগবে আরও কয়েক মাস। থাইল্যান্ড প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ওই বিল কার্যকর হবে।
প্রথম সমলিঙ্গ বিয়ে স্বীকৃতি দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ২০০১ সালে। পরে সমলিঙ্গ বিয়ের আইনি শিলমোহর দিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্সের মতো প্রথম বিশ্বের দেশগুলো। তবে এর বাইরে তৃতীয় বিশ্বের কিছু দেশেও এই ধরনের বিয়ে আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে।
নেপাল
প্রথমেই বলা দরকার নেপালের কথা। এশিয়ার যে সমস্ত দেশ প্রথম দিকেই সমলিঙ্গে বিয়েকে স্বীকৃতি দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম নেপাল। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সমলিঙ্গে বিয়ে আইনি স্বীকৃতি পায় ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা নেপালে। ওই সিদ্ধান্ত নেপালকে রূপান্তরকামীদের নিয়ে অন্যতম উন্নত ভাবনার দেশ হিসবে প্রতিষ্ঠিত করে।
দক্ষিণ আফ্রিকা
২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আইনি শিলমোহর পায় সমলিঙ্গ বিয়ে। আফ্রিকার এই একটি মাত্র দেশেই আপাতত সমলিঙ্গ বিয়ে স্বীকৃত।
আর্জেন্টিনা
লাতিন আমেরিকায় প্রথম দেশ, যারা সমলিঙ্গ বিবাহে আইনি তকমা দেয়। ২০১০ সালে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ফুটবলপ্রেমী দেশ। বিয়ে তো বটেই, বিয়ের পরে দম্পতির যাবতীয় আইনি অধিকারও তারা দিয়েছিল আইনে।
জার্মানি
২০১৭ সালে জার্মানি মান্যতা দেয় সমলিঙ্গ বিয়েকে। বিয়ের পাশাপাশি সমলিঙ্গে বিবাহিত দম্পতিকে সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকারও দেয় ওই দেশ।
তাইওয়ান
সমলিঙ্গ বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়া এশিয়ার প্রথম দেশ হলো তাইওয়ান। দীর্ঘ আইনি যুদ্ধের পরে ২০১৯ সালে তারা সমলিঙ্গ বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেয়।
মেক্সিকো
মেক্সিকোয় রূপান্তরকামীদের আন্দোলন চলছিল বহু দিন ধরে। শেষ পর্যন্ত তারা সমলিঙ্গে বিয়েকে স্বীকৃতি দেয় ২০২২ সালে।
এ ছাড়া বেলজিয়াম, স্পেন, গ্রিস, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, পর্তুগাল, ডেনমার্ক, সুইৎজারল্যান্ড, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, চিলি, কলাম্বিয়া, কোস্টারিকা, ইকু্যয়েডর, কিউবাতেও সমলিঙ্গ বিয়ে স্বীকৃত।