কোনো আদালত যদি একবার মনে করে কোনো অভিযুক্ত জামিন পাওয়ার যোগ্য, তবে তার জেলমুক্তিকে আটকে রাখা যায় না। জামিন সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে এই পর্যবেক্ষণ ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের। বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাশির বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। এর আগে পাটনা হাইকোর্ট চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল একটি খুনের মামলায় অভিযুক্তের জামিনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে উচ্চ আদালত জানিয়েছিল, জামিনের নির্দেশ কার্যকর হবে নির্দেশনামা জারির ৬ মাস পরে।
মামলার শুনানি চলাকালীন সাম্প্রতিক সময়ে জামিনের নির্দেশের ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রবণতারও সমালোচনা করেন শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের মন্তব্য, 'এটি খুব অদ্ভুত বিষয়। কোনো কোনো আদালতে ছয় মাস বা এক বছর পর জামিন দেওয়া হচ্ছে। এটি নতুন প্রবণতা। অর্থাৎ, কাউকে জামিন দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তিনি মুক্তি পাচ্ছেন ছয় মাস পর। এটি কী হচ্ছে?
সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। সেই মামলায় অভিযুক্তকে আগেই অন্তর্বর্তী জামিনের নির্দেশ দিয়েছিলেন শীর্ষ আদালত। সোমবার শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেন, অন্তর্বর্তী জামিনের নির্দেশই চূড়ান্ত। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনো আদালত একবার যদি মনে করে অভিযুক্ত জামিন পাওয়ার যোগ্য, তবে সেই নির্দেশ কার্যকর করতে বিলম্ব করা যায় না। সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, 'অভিযুক্ত জামিন পাওয়ার যোগ্য, তা আদালতে নিশ্চিত হওয়ার পরেও যদি জামিনে বিলম্ব হয়, তবে সেই সিদ্ধান্ত সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১-এ বর্ণিত অভিযুক্তের অধিকারের পরিপন্থি।'
উলেস্নখ্য, ১৯ এপ্রিল পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতি অংশুমান পান্ডের বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়েছিল। অভিযুক্ত জামিন পাওয়ার যোগ্য; সে কথা বিবেচনা করলেও হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, ৬ মাস পর মুক্তি পাবেন তিনি। ৬ মাস পর ৩০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনের নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত।