ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে নিজের করা মামলা থেকে এফিডেভিটের মাধ্যমে ১২ আসামিকে বাদ দিতে আদালতে এসেছিলেন বাদী আব্দুল মজিদ। তিনি গত ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলেন রংপুরে নিহত হওয়া শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মুন্নার বাবা।
কিন্তু কোনো আসামির নাম তো বাদ দেওয়া হলোই না, উল্টো আদালতে পাঁচ ঘণ্টা আটক থাকেন আব্দুল মজিদ। পরে জামিন নিয়ে ছাড়া পান তিনি। গত ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নূরুজ্জামান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ ১২৮ জনকে আসামি করে ছেলেকে হত্যার অভিযোগে মামলা করেছিলেন আব্দুল মজিদ।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে রংপুর কোতোয়ালি থানাকে এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। মামলার বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন পস্ন্যাটফর্মে প্রকাশ পায়, নিহত মুন্না ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।
এই মামলায় আসামির তালিকায় একাধিক বিএনপির কর্মীসহ একজন সাংবাদিকের নাম থাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে সর্বত্র। এরপর গতকাল আব্দুল মজিদ ১২ আসামির নাম প্রত্যাহার চেয়ে এফিডেভিটের কাগজ আদালতে দাখিল করেন। এ সময় বিচারক জানতে চান, তিনি কেন এই আসামিদের নাম প্রত্যাহার করতে চাচ্ছেন। তখন বাদী আদালতকে জানান, তিনি আসামিদের চেনেন না।
বিচারকের জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে আব্দুল মজিদ জানান, তার কাছে ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছিলেন হাজি শাহ আলম ও অ্যাডভোকেট রায়হানুজ্জামান নামে দুই ব্যক্তি। আদালত এফিডেফিট গ্রহণ করে আব্দুল মজিদকে কাঠগড়ায় আটক থাকার নির্দেশ দেন।
পরবর্তী সময়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন দিয়ে পাঁচ ঘণ্টা পর মুক্ত হন তিনি। জানা গেছে, আব্দুল মজিদ যে দুই ব্যক্তির প্ররোচনায় মামলাটি করেছিলেন, তাদের একজন হাজি শাহ আলম লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলমের ভাই। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজন সক্রিয় নেতা। অপর ব্যক্তি রায়হানুজ্জামান পেশায় আইনজীবী।
গোটা বিষয়ে জানতে আদালত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সাংবাদিকরা আব্দুল মজিদকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এই মামলার আসামিদের বিষয়ে এখনো ভালোভাবে কিছু জানি না। নানামুখী চাপে আছি বলে সেখান থেকে সটকে পড়েন তিনি।