ভুল তথ্য দিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় মামলার বাদীকে জরিমানা, আসামিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধে ব্যর্থতায় কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম) কৌশিক আহাম্মদ খোন্দকার গত ২৮ জুলাই দুটি পৃথক মামলার রায়ে আসামিদের বেকসুর খালাস দিয়ে বাদীকে এ দন্ড প্রদান করেন। একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ আমির হোসাইন এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রথম মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমার ছড়া ইউনিয়নের মাইজপাড়ার ইউনুসখালী গ্রামের মো. শরিফের পুত্র বেলাল উদ্দিন জমিজমার বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষ সংঘবদ্ধভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহকারে ইউনুসখালী এলাকায় হামলা করে গুরুতর আহত করার মিথ্যা অভিযোগ এনে ২০১৫ সালের ২৯ আগস্ট মহেশখালী থানায় ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
যার মহেশখালী থানা মামলা নম্বর:৩৬, তারিখ : ২৯/০৮/২০১৫ ইংরেজি। জিআর মামলা নম্বর : ২৭৫/২০১৫ ইংরেজি (মহেশখালী)। মহেশখালী থানার এসআই আলমগীর হোসেন মামলাটি তদন্ত করে ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়েছেন মর্মে উলেস্নখ করে আদালতে চার্জসিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন।
বিচার ও রায়
মামলাটি বিচারের জন্য ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রম্নয়ারি আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় বাদী বেলাল উদ্দিন ও সাক্ষীরা জবানবন্দি ও জেরায় আদালতে অসংগতিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। একইভাবে কথিত আহতদের চিকিৎসা সনদের সঙ্গে এজাহার ও সাক্ষীর বক্তব্যে কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
আসামিদের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার কুমানসে মিথ্যা তথ্য উপাত্ত দিয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে আদালতের কাছে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। এ অবস্থায় বিচারক কক্সবাজারের এসিজেএম কৌশিক আহাম্মদ খোন্দকার গত ২৮ জুলাই মামলার আসামিদের বেকসুর খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
মিথ্যা মামলার বাদী বেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ এনে প্রতারণার দায়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারায় মিস মামলা দায়ের করা হয়। যার নম্বর : মিস-০৩/২০২৪ (কক্সবাজার এসিজেএম আদালত)। মিথ্যা মামলার বাদী বেলাল উদ্দিন কর্তৃক দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে আসামিদের হয়রানি, আদালত ও রাষ্ট্রের সময় নষ্ট ইত্যাদি বিষয়ে আদালত থেকে জবাব চাওয়া হয়। পরে মিথ্যা মামলার বাদী বেলাল উদ্দিনের প্রদত্ত জবাব আদালতের কাছে গৃহীত হয়নি।
ভবিষ্যতে মিথ্যা মামলা প্রতিরোধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার স্বার্থে বিচারক কৌশিক আহাম্মদ খোন্দকার ৭ আসামির প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে কৌঁসুলির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ প্রদান, একইসঙ্গে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০(৫) ধারা মতে রাষ্ট্রের অনুকূলে ট্রেজারি চালানমূলে ৩ হাজার টাকা জমা করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধে ব্যর্থতায় বাদী বেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।