ঢাকায় আরো ৩টি এবং চট্টগ্রামে আরো ২টি অর্থঋণ আদালত হচ্ছে
প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
আইন ও বিচার ডেস্ক
ব্যাংক ও অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ আদায়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আরও পাঁচটি অর্থঋণ আদালত গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। ঢাকায় তিনটি ও চট্টগ্রামে দুটি আদালত গঠন করা হবে। আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে এসব আদালত গঠনের বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রতিটি আদালতের জন্য একজন করে যুগ্ম জেলা জজ ও পাঁচজন সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ৩০টি পদ অনুমোদন করা হয়েছে।
দেশে বিচারাধীন অর্থঋণ মামলার তুলনায় আদালতের সংখ্যা কম। এ কারণে বিপুল পরিমাণ ঋণখেলাপি হয়ে আছে। নানা কারণে ঋণ আদায়েও বিলম্ব হচ্ছে। এ জন্য গত বছর ঢাকায় ১৩টি ও চট্টগ্রামে চারটি নতুন অর্থঋণ আদালত গঠনে ১০২টি পদ সৃজনের জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়।
ওই প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষে সম্প্রতি পাঁচটি নতুন অর্থঋণ আদালত গঠনের বিষয়ে ৩০টি পদ সৃজন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন শেষে ফাইলটি সচিব কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখানে অনুমোদনের পর ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে (সারসংক্ষেপ) অনুমোদনের জন্য যাবে। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় ৩০টি পদের বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পৃষ্ঠা অঙ্কন করবে। পরে সরকারি আদেশ (জিও) জারি করা হবে।
অর্থঋণ আদালত গঠনসংক্রান্ত আইন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সরকারের নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও খেলাপি ঋণের লাগাম টানা যাচ্ছে না। উল্টো দিন দিন তা বাড়ছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে তিন মাসেই বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। এক বছর আগে ২০২৩ সালের মার্চে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা এবং গত ডিসেম্বরে ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৯ শতাংশ।
সুপ্রিম কোর্টের তথ্যানুসারে, বর্তমানে আট বিভাগীয় শহরের মধ্যে ঢাকায় চারটি, চট্টগ্রামে একটি, খুলনায় একটি ও ময়মনসিংহে একটি অর্থঋণ আদালত রয়েছে। অন্য চারটি বিভাগীয় শহরে কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থঋণ আদালত নেই। এসব বিভাগ ও জেলা শহরে বর্তমানে যুগ্ম জেলা জজ পদমর্যাদার বিচারক অর্থঋণ আইনে মামলা গ্রহণ ও বিচারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থঋণ আদালতের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের অর্থঋণ আদালতগুলোয় খেলাপি ঋণের অভিযোগে ৭৬ হাজার মামলা বিচারাধীন। এসব মামলায় আটকে রয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার ২১৬ কোটি টাকা। ২০০৩ সালে অর্থঋণ আদালত গঠনের পর থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে পৌনে দুই লাখ মামলা।