আইনজীবীদের জন্য এখনই কালো কোর্ট-গাউন ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক?

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে মামলা শুনানিকালে আইনজীবীদের কালো গাউন পরিধানের বাধ্যবাধকতা শিথিলের কার্যকারিতা রহিত থাকলেও ৭ জুলাই থেকে আবার কালো কোর্ট ও গাউন পড়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও অধস্তত্মন আদালতে শুনানির সময় আইনজীবী-বিচারকদের নিয়মিত পোশাক কালো কোট ও গাউন পরিধানের বাধ্যবাধকতা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে ৭ জুলাই থেকে আদালতে শুনানির সময় আইনজীবী-বিচারকদের নিয়মিত পোশাক কালো কোট ও গাউন পরিধান করতে হচ্ছে। প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়- যা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে মামলা শুনানিতে আইনজীবীদের গাউন পরিধানের আবশ্যকতা শিথিল করে গত ২৬ মে জারি করা বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা রহিত করা হলো। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের কারণে গত ২৬ মে এ দুটি পোশাক পরিধানের ওপর বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের নতুন করে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধস্তত্মন দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত ও ট্রাইবু্যনালের বিচারকরা এবং আইনজীবীদের মামলা শুনানিকালে পরিধেয় পোশাক সংক্রান্ত গত ২৬ মে'র দেয়া বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করা হলো। আগামী ৭ জুলাই থেকে এ বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হয়। এর আগে তাপপ্রবাহের কারণে দেশের অধস্তন আদালতে শুনানির সময় আইনজীবী-বিচারকদের কালো কোট ও গাউন পরিধানের যে বাধ্যবাধকতা ছিল, তা তুলে দেয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তখন প্রধান বিচারপতির নেয়া ওই সিদ্ধান্ত বিজ্ঞপ্তি আকারে জারি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের আলোচনাক্রমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সারাদেশে এখনো তীব্র তাপপ্রবাহ কমে গিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। ঠিক এই অবস্থায় বিশেষত জেলা পর্যায়ের অধস্তন আদালতে এখনো কোর্ট ও গাউন পরার পরিবেশ ফিরে আসেনি। গরমে হিট স্ট্রোকে আইনজীবী মারা যাওয়া পর্যন্ত আমাদের দেখতে হয়েছে। এজলাস চলাকালীন সময়ে গরমে বিজ্ঞ বিচারক ও আইনজীবীদের অসুস্থ হয়ে পড়ে যাওয়া এবং জ্ঞান হারানোর খবরও আমরা শুনেছি। প্রিয়জনদের কাছে অপ্রিয় হয়ে শরীর-মনের ওপর জুলুম করে বিচারক-আইনজীবীরা কাজ করেন। গরমে নিষ্ঠুর, অমানবিক ও কট্টর কোর্ট ড্রেস থেকে রেহাই পাওয়া তাদের জন্য একটু আরামদায়ক ছিল। সারাদেশে গরম কমে যাওয়ার আগেই আবার কালো কোর্ট ও গাউন ফিরিয়ে আনা কতটা দরকারি ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। অথবা কেনইবা এখনো আমরা মৌসুম অনুযায়ী স্থায়ীভাবে ড্রেসকোডের কথা চিন্তা করছি না, সেটাও ভাবনার বিষয়।