রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

'ভিজিটর যেন হাসিমুখে ফিরে যায়'

সাইফুল ইসলাম পলাশ
  ২৫ জুন ২০২৪, ০০:০০
'ভিজিটর যেন হাসিমুখে ফিরে যায়'

কয়েক বছর আগে পঞ্চগড়ের একটি আদালতে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য গিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন পর পুরনো স্টেশনে যাওয়ার কারণে আদালত কর্মচারী ও আইনজীবীরা ঘিরে ধরলেন। বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিল।

কথা প্রসঙ্গে একজন আইনজীবী বললেন, 'স্যার, আমাদের এখানে খুব ভালো একজন বিচারক এসেছেন।'

আমি বললাম, 'বিচারকত সবাই ভালো। এখানে যারা আছেন সবাই সৎ ও জ্ঞানী।'

তিনি বললেন, 'কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তবুও তিনি সবার চেয়ে আলাদা।'

কীভাবে বলুনতো?

বললেন, 'স্যারের কোর্টে আমরা নিঃসংকোচে সব ধরনের সাবমিশন রাখতে পারি। তিনি শুনানিকালে গভীর মনোযোগী শ্রোতা এবং শুনানি শেষে সংক্ষিপ্ত কারণসহ সিদ্ধান্ত শুনিয়ে দেন। এত অমায়িক ব্যবহার করেন যে, বিপক্ষে আদেশ গেলেও মন খারাপ হয় না। এজলাস ত্যাগকারী আইনজীবীদের দেখে বোঝার উপায় নেই আদেশ পক্ষে গেছে নাকি বিপক্ষে। কারণ সবার মুখেই হাসি লেগে থাকে।'

সাহিত্যিক বাদল সৈয়দ বলেছেন, আপনার কাছে কেউ কোনো কাজ নিয়ে এলে তিনি যেন বিদায়ের সময় হাসিমুখে ফিরে যান। এই কথাটা আমার কাছে স্ববিরোধী মনে হতো। কেননা, কেউ এসে যদি তার কাঙ্ক্ষিত সেবাটি না পান বা তার কাজটা না হয় তাহলে কীভাবে তিনি হাসিমুখে বিদায় নেবেন।

তবে আইনজীবীর এই কথাটা শোনার পর আমার সেই ধারণাটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

একজন বিচারক সম্পর্কে এমন মন্তব্য শুনে গর্বে বুকটা ভরে উঠল। বিচারকের নামটা জানার পর বুঝলাম, মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়ার জন্য শুধু সততা ও জ্ঞানই যথেষ্ট নয়, সেবাবান্ধব আচরণটাও অত্যাবশ্যক। সেবাগ্রহীতা ভালো ব্যবহার পেলে তিনি তার কাঙ্ক্ষিত সেবাটি না পেলেও আজীবন মনে রাখে।

সাইফুল ইসলাম পলাশ, অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, রাজশাহী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে