রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

অবসরে গেলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম এ হাফিজ

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ০৪ জুন ২০২৪, ০০:০০
অবসরে গেলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম এ হাফিজ

১ জুন বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ কর্মজীবন শেষ হলেও রীতি অনুযায়ী ৩০ মে তার বিচারিক কর্মদিবসের শেষ দিনে আদালতে বিচারাসীন থাকাবস্থায় তাকে বিদায়ী সম্ভাষণ দেওয়া হয়। বিদায় সম্ভাষণের সময় তিনি বক্তব্যে বলেন, প্রতিপক্ষকে হয়রানি করতে মিথ্যা মামলা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মিথ্যা মামলা ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপিল বিভাগে একমাসের কিছু বেশি সময় দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে গেলেন বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ।

বিদায়ী ভাষণে বিচারপতি আব্দুল হাফিজ বলেন, সময়ের বিবর্তনে অপরাধের ধরন প্রতিনিয়ত পাল্টে যাচ্ছে- যা আমাদের সন্তানদের ভয়াভহ অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। পারিবারিক সম্প্রীতি, সংস্কৃতি, দীর্ঘদিনের লালিত মূল্যবোধ ইত্যাদিতে ভাঙচুর হচ্ছে। কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান ঘটেছে। মাদক, সামাজিক অনাচারসহ অস্ত্রের প্রতিযোগিতা হুমকি ও আশঙ্কার বিস্তার ঘটেছে। আর এগুলো টেকসই উন্নয়ন, শান্তি, প্রসারিত ভালোবাসা, ধৈর্য ও সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধক হয়ে উঠেছে। আমার ধারণায় সমস্যার শেকড় প্রোথিত আছে দেশের গরিষ্ঠ সংখ্যক মানুষ ও মানবতার প্রতি পরিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না হওয়ায়।

তিনি বলেন, সম্পদ-সম্পত্তি, অপরাধ, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং অধিকার বিষয়ক মোকদ্দমায় প্রতিনিয়ত মিথ্যা মামলা দায়ের হচ্ছে। প্রতিপক্ষকে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিচার বিভাগকে এর ভার বহন করতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে এটা মিথ্যা মামলা নির্ধারিত হয়তো বা ঠিকই হচ্ছে কিন্তু এতে আদালতের প্রচুর সময় নষ্ট হচ্ছে। মিথ্যা মামলা ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিচারপতি আব্দুল হাফিজ বলেন, দুর্নীতি আমাদের সব অর্জনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দুর্নীতির ব্যাপকতা অনেক। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের হাত থেকে অফিস আদালতকে মুক্ত রাখতে হবে। একজন বেতনভোগী কর্মকর্তা কীভাবে কোটি কোটি এমনকি শত কোটি টাকার মালিক হন তা দেশবাসীকে হতবাক করে। তাই এগুলোকে রোধ করতে রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে।

বিদায় বেলায় অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষে সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বিচারপতির কর্মজীবন উলেস্নখ করে সম্ভাষণ জানান। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের অপর বিচারপতিরা এ সময় এজলাসে ছিলেন।

এর আগে সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, গত ২৪ এপ্রিল হাইকোর্টের তিন বিচারক যথাক্রমে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরদিন তিনজনকে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে