রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

বিভিন্ন দেশে মাদক অপরাধ রোধে আইনি কাঠামো ও শাস্তি

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী ৫ গ্রাম পর্যন্ত কোকেন, হেরোইন, মরফিন ও পেথিডিন পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দেওয়া যাবে। মাদকের পরিমাণ ৫ থেকে ২৫ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড এবং মাদকের পরিমাণ ২৫ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা মৃতু্যদন্ড ও অর্থদন্ড দেওয়া যাবে।
আইন ও বিচার ডেস্ক
  ০৪ জুন ২০২৪, ০০:০০
বিভিন্ন দেশে মাদক অপরাধ রোধে আইনি কাঠামো ও শাস্তি

বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ এর বিধান অনুযায়ী মাদক সেবন ও বহনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃতু্যদন্ড। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কীভাবে মাদক মোকাবিলার আইনি কাঠামো গোছানো হয়েছে, আর শাস্তি হিসেবে কি বাংলাদেশের বিধান বেশি কঠোর? বিভিন্ন দেশের মাদক আইনে শাস্তি নিয়ে আইন ও বিচারের পাঠকদের জন্য আজকের আয়োজন।

মালয়েশিয়া

মাদক বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লে মৃতু্যদন্ড হতে পারে। এজন্য মাদক রাখার জন্য জেল, জরিমানার ব্যবস্থা আছে। অভিবাসীদের কাছে মাদক পাওয়া গেলে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে।

চীন

মাদকসহ ধরা পড়লে সরকারের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হয়। মাদক সংক্রান্ত কিছু অপরাধের জন্য ফাঁসিও দেয়া হয়।

ভিয়েতনাম

০.৫৯ কেজি হেরোইনসহ ধরা পড়লে নিশ্চিত ফাঁসি।

ইরান

প্রতিবেশী আফগানিস্তানে আফিমের চাষ হওয়ায় ইরানে এটা একটা অন্যতম সমস্যা। সেখানে মাদকসহ ধরা পড়লে বড় অংকের জরিমানা থেকে শুরু করে মৃতু্যদন্ড পর্যন্ত হতে পারে।

থাইল্যান্ড

মাদক পাচারের কারণে মৃতু্যদন্ডও হতে পারে। মাদকসেবীদের বাধ্যতামূলকভাবে নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো সে দেশে একটি নিয়মিত ঘটনা।

সৌদি আরব

মাদক বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লে মৃতু্যদন্ড প্রায় নিশ্চিত। অ্যালকোহল কিংবা মাদক সেবন কিংবা সেগুলো রাখার জন্য প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত, জরিমানা, দীর্ঘদিনের কারাবাস কিংবা মৃতু্যদন্ড হতে পারে।

সিঙ্গাপুর

মাদক বিক্রির দায়ে অভিযুক্ত হলে মৃতু্যদন্ড দেয়া হয়।

কম্বোডিয়া

মাদক রাখার দায়ে এমনকি যাবজ্জীবন কারাদন্ডও হতে পারে। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের মতো কম্বোডিয়ায় মাদক পাচারের জন্য মৃতু্যদন্ডের বিধান নেই।

ইন্দোনেশিয়া

গাঁজাসহ ধরা পড়লে সর্বোচ্চ ২০ বছরের জেল হতে পারে। অন্যান্য মাদকের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত জেলের বিধান রয়েছে। মাদক বিক্রির দায়ে মৃতু্যদন্ড হতে পারে।

লাওস

মাদকসহ ধরা পড়লে প্রায় ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আর চেতনানাশক ওষুধসহ ধরা পড়লে ১০ বা তার বেশি সময়ের জেল হতে পারে।

ফিলিপাইন্স

মাদকপাচারকারীদের জন্য মৃতু্যদন্ডের বিধান আছে। কারো কাছে ১০ গ্রামের বেশি মাদক পাওয়া গেলে তাকে পাচারকারী হিসেবে ধরে নেয়া হয়।

তুরস্ক

মাদক রাখার জন্য বড় অংকের জরিমানা ও দীর্ঘ কারাবাসের বিধান রয়েছে। মাদক বিক্রির অপরাধের শাস্তি আরো কঠোর হতে পারে।

বাংলাদেশ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী ৫ গ্রাম পর্যন্ত কোকেন, হেরোইন, মরফিন ও পেথিডিন পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দেওয়া যাবে। মাদকের পরিমাণ ৫ থেকে ২৫ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড এবং মাদকের পরিমাণ ২৫ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা মৃতু্যদন্ড ও অর্থদন্ড দেওয়া যাবে।

ইয়াবা সেবনের শাস্তি তিন মাস থেকে দুই বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড। এছাড়া ইয়াবা সরবরাহ, বিপণন, কেনা-বেচা, হস্তান্তর, গ্রহণ-প্রেরণ, লেনদেন ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে- ২০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদন্ড দেওয়া যাবে। পরিমাণ ২০০ থেকে ৪০০ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেওয়া যাবে। পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা মৃতু্যদন্ড দেওয়া যাবে।

অনুমতি ছাড়া কেউ অ্যালকোহল পান করতে পারবেন না। চিকিৎসার প্রয়োজনে সিভিল সার্জন বা সরকারি মেডিকেল কলেজের কমপক্ষে সহযোগী অধ্যাপকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো মুসলমানকে অ্যালকোহল পানের অনুমতি দেওয়া যাবে না। তবে মুচি, মেথর, ডোম, চা শ্রমিক ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তাড়ি ও পচাই এবং পার্বত্য জেলা বা অন্যান্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যগতভাবে তৈরি করা মদ পান করার ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে