জার্মানিতে অপরাধ বাড়ছে, বিশেষ করে বার্লিন ক্রমশ অনিরাপদ হয়ে পড়ছে। জার্মান পুলিশ অবশ্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেষ্ট রয়েছে। গত বছর জার্মানিতে সহিংস অপরাধের নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। পুলিশের প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে এই তথ্য।
জার্মানির ভেল্ট আম সনটাগ পত্রিকা শুধু সেই তথ্য পেয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, গত বছর সহিংস অপরাধের ঘটনা আগের চেয়ে ৮ দশমিক ৬ ভাগ বেড়েছে যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পুলিশ মোট দুই লাখ ১৪ হাজার ৯৯টি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।
এর মধ্যে গুরুতর এবং শারীরিক ক্ষতি হয়েছে এমন অপরাধের ঘটনা রয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার পাঁচশ ৪১টি- যা এক বছরের মধ্যে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
ইচ্ছাকৃতভাবে শারীরিক ক্ষতি করার মামলাও বেড়েছে ৭ দশমিক ৪ ভাগ।
সামগ্রিকভাবে জার্মানিতে অপরাধ ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৫ ভাগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়নে। এই সংখ্যা করোনা পূর্ববর্তী সময়, মানে ২০১৯ সালের তুলনায় ৯ দশমিক ৩ ভাগ বেশি।
একই সময়ে সন্দেহভাজন অপরাধী গ্রেপ্তারের হার ৭ দশমিক ৩ ভাগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.২৪৬ মিলিয়নে। এই সন্দেহভাজনদের মধ্যে ৪১ দশমিক ৩ ভাগ মানুষের জার্মান পাসপোর্ট নেই। জার্মান পাসপোর্ট নেই এমন মানুষের মধ্যে যারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৪০২,৫১৪ জন শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী কিংবা জার্মানিতে অনিয়মিত পথে প্রবেশ করেছেন।
গত বছর জার্মানিতে অনুমতিব্যতিত প্রবেশের অপরাধ আগের বছরের তুলনায় ৪০ ভাগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার একশ ৫৮তে। আর অনুমতি ব্যতীত জার্মানিতে অবস্থানের হার ২৯ ভাগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৭ হাজার ৫৯টিতে।
নথিভুক্ত অপরাধের এক তৃতীয়াংশই (১.৯৭১ মিলিয়ন) চুরির ঘটনা যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১০ দশমিক ৭ ভাগ।
বার্লিনে চুরির ঘটনা সবচেয়ে বেড়েছে। আগের বছরের তুলনায় রাজ্যটিতে এই অপরাধ বেড়েছে ৩৫ দশমিক ২ ভাগ।
জার্মানির রাজধানী যে রাজ্যে সেই রাজ্যটি অন্যান্য অপরাধেও শীর্ষে রয়েছে। গত বছর সংঘটিত অপরাধের কথা বিবেচনা করলে রাজ্যটি এখন জার্মানির মধ্যে বসবাসের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। তারপরেই রয়েছে ব্রেমেন, হামবুর্গ এবং সাক্সনি আনহাল্টের অবস্থান।
পুলিশের পরিসংখ্যান আরো জানাচ্ছে, গত বছর যেসব অভিযোগ জমা হয়েছে তার মধ্যে ৫৮ দশমিক ৪ ভাগ সমাধান হয়েছে।
জার্মানির নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হ্যের্বার্ট রয়েল মনে করেন, জার্মান সমাজের মানসিকতায় পরিবর্তন আসায় অপরাধ বাড়ছে। গাজা এবং ইউক্রেন যুদ্ধও সমাজে বিভাজন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা বিপজ্জনক পরিস্থিতির মতো। হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানো এবং পরবর্তী সময়ে ইসরায়েল প্রতিশোধ নিতে গাজায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরুর পর জার্মানিতে রেকর্ড হারে ইহুদিবিদ্বেষ এবং ইসলামভীতি বেড়েছে।