বিচ্ছেদ হলেও সন্তানের কাছে পিতামাতার সম্পর্ক বদলায় না: দিলিস্ন হাইকোর্ট
প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
আইন ও বিচার ডেস্ক
বিয়েবিচ্ছেদের পরেও স্কুলে ভর্তির ফর্মে পুত্রের পিতার জায়গায় তারই নাম রাখার আর্জি নিয়ে এক ব্যক্তি আদালতের দ্বারস্থ হন। তিনি জানান, তার সাবেক স্ত্রী ফের বিয়ে করেছেন। কিন্তু, ছেলের স্কুলে ভর্তির ফর্মে মায়ের নামের জায়গায় নিজের নাম রাখলেও বাবার নামের জায়গায় দ্বিতীয় স্বামীর নাম রেখেছেন মহিলা। এ ব্যাপারে আদালত জানিয়েছে, আবেদনকারী যখন জীবিত, তখন ছেলের স্কুলে ভর্তির ফর্মে বাবার নাম মুছে ফেলে মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর নাম দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। মা হিসেবে তার নিজের নাম ছেলের স্কুলের রেকর্ডে রাখার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সন্তানের পিতা হিসেবে নথিতে আবেদনকারীর নাম রাখার অধিকার কেড়ে নিতে পারেন তিনি।
২০০৬ সালের মার্চ মাসে জন্ম হয় শিশুটির। ২০১২ সালে প্রথম স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত দু'টি স্কুলে পড়াশোনা করেছিল সে। সেই দু'টি জায়গাতেই ছেলেটির পিতা হিসেবে যাবতীয় নথিতে মামলাকারীর নাম নথিভুক্ত করা ছিল।
এর মধ্যেই ২০১৫ সালে বিয়েবিচ্ছেদ হয়ে যায় দম্পতির। আবেদনকারীর অভিযোগ, ২০১৬ সালের পর যে স্কুলে ভর্তি হয় শিশুটি, সেগুলোর রেকর্ডে তার নাম নেই। বদলে, তার সাবেক স্ত্রীর দ্বিতীয় স্বামীর নাম শিশুটির অভিভাবক হিসেবে রয়েছে।
পাল্টা হলফনামায় মহিলা জানান, আবেদনকারী শিশুটির জন্মদাতা পিতা হলেও তাদের সম্পর্ক এতটাই তিক্ত ছিল যে, তিনি চান না, আবেদনকারীর নাম তার নাবালক পুত্রের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত থাকুক। তিনি জানান, তার বর্তমান স্বামী শিশুটিকে তার নিজের পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং পিতার স্নেহেই তাকে মানুষ করছেন তিনি।
সে কথা শোনার পর আদালত জানিয়েছেন, এটা স্পষ্ট যে আইনের বদলে আবেগ দ্বারাই পরিচালিত হয়েছিলেন তিনি। তার যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি বলেছেন, 'মহিলা এবং আবেদনকারীর মধ্যে সম্পর্ক যতই তিক্ত হোক না কেন, তাদের বিয়েবিচ্ছেদ ঘটলেও তা শিশুর পিতা হিসেবে তার পরিচয় বদলে দিতে পারে না।'
হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, বিয়েবিচ্ছেদ উলিস্নখিত বিবাহের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তানের 'পেরেন্টাল স্ট্যাটাস'-এর ওপর প্রভাব ফেলে না। বিচারপতি সি হরি শঙ্কর সাফ জানিয়েছেন, শিশুটির বাবা হিসেবে স্কুল রেকর্ডে তার নাম রাখার জন্য আবেদনকারীর আর্জি প্রত্যাখ্যান করা যাবে না। এর পরেই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, শিশুটির স্কুলের নথিতে মায়ের নামের পাশাপাশি বাবার নাম হিসেবে মামলাকারীর নামও রাখতে হবে। সমস্ত নথিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছে দিলির্স্নল হাইকোর্ট।