অকারণে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন না স্ত্রী, শ্বশুরবাড়ির সেবা করতেই হবে :ঝাড়খন্ড হাইকোর্ট
প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
আইন ও বিচার ডেস্ক
অকারণে স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন না স্ত্রী। তা ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থি। স্বামীর সংসারে বয়োজ্যেষ্ঠদের সেবা তাকে করে যেতে হবে। দেশের সংস্কৃতিকে তিনি উপেক্ষা করতে পারেন না। মনুস্মৃতির কথা উলেস্নখ করে এমনটাই মন্তব্য করেছে ঝাড়খন্ড হাইকোর্ট। ওই মহিলাকে সংসার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশে স্বামীর কাছ থেকে যে ভাতা পেতেন বিচ্ছিন্ন স্ত্রী, তা-ও বাতিল করে দিয়েছেন আদালত।
বিয়েবিচ্ছেদের ওই মামলায় মহিলার বিরুদ্ধে স্বামীকে তার পরিবারের সদস্যদের থেকে দূরে সরানোর চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। তার জন্য মহিলাকে ভর্ৎসনাও করেছেন আদালত। ঝাড়খন্ড হাইকোর্টের বিচারপতি সুভাষ চাঁদ তার ২৫ পৃষ্ঠার নির্দেশ-কপিতে মনুস্মৃতির উলেস্নখ করে দেশের সংস্কৃতি এবং সংসারে বধূর ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের বেশ কিছু নির্দেশের কথাও উলেস্নখ করেছেন বিচারপতি। আদর্শ বৈবাহিক সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, দাম্পত্য এবং সংসারে স্বামী, স্ত্রীর দায়িত্ব, কর্তব্য কী হওয়া উচিত, বুঝিয়েছেন তিনি।
বলা হয়েছে, পশ্চিমের দেশগুলোতে বিবাহিত পুত্র বাবা এবং মায়ের থেকে আলাদা হয়ে থাকেন। কিন্তু ভারতীয় সংস্কৃতি তেমন নয়। এখানে বিয়ের পর স্ত্রী স্বামীর পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠেন। খুব যৌক্তিক কারণ ছাড়া তিনি স্বামীকে তার পরিবারের থেকে আলাদা থাকতে বলতে পারেন না। স্বামীকে এ বিষয়ে তিনি জোরও করতে পারেন না।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিবাহিত জীবনে স্ত্রীকেই সামাজিক দিকটির কথা মাথায় রাখতে হয়। স্বামীর কাজে উৎসাহ দেওয়া থেকে শুরু করে, তাকে বোঝা এবং তার সর্বক্ষণের আদর্শ সঙ্গিনী হয়ে ওঠা স্ত্রীর কর্তব্য। সংবিধানের উলেস্নখ করে আদালত জানিয়েছে, দেশের সংস্কৃতি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।
মনুস্মৃতির একটি অংশ উলেস্নখ করা হয়েছে ওই নির্দেশ-কপিতে। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো সংসারে বধূ যদি খারাপ হন, তবে সংসার ছাড়খাড় হয়ে যায়।
বিয়েবিচ্ছেদের পরে পারিবারিক আদালত ওই ব্যক্তিকে স্ত্রী এবং নাবালক সন্তানের ভরণপোষণের খরচ জোগাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। সেই মামলাতেই ঝাড়খন্ড হাইকোর্ট স্ত্রীকে তার কর্তব্য বুঝিয়েছেন। তার ভরণপোষণ বন্ধও করে দিয়েছেন।
তবে দম্পতির সন্তানের খরচ ওই ব্যক্তিকেই জোগাতে হবে। সেই খরচের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন আদালত।