রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
ওকালতি কচড়া

যেভাবে দেখতে শিখছি

এস এম তাসমিরুল ইসলাম উদয়
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
পোশাকে যে মানুষটিকে দেখা যায় তার ভেতরে এই মানুষটি বাদে কি অন্য কোনো মানুষ আছে নাকি পোশাকই তার শেষ পরিচয়, এ নিয়ে আমার অনুসন্ধান গত এক বছর চলমান ছিল। এই অনুসন্ধান আরও চলবে।

ব্যক্তিগত উপলব্ধি হলো, বাংলাদেশ পুলিশ একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ আছে বললে ভুল হবে, ম্যাকিয়াভেলি কিংবা চাণক্যের রাজনৈতিক কলাকৌশল চর্চায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অদ্বিতীয় বললে বাড়িয়ে বলা হবে না। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলে সন্ত্রাস দমন, ক্রাইম সাপ্রেস, শক্তির তৈল মর্দন, অপরাধ জিইয়ে রাখা, সন্দেহ বাতিকতা, ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ পেয়ে অপ্রতিরোধ্য দানব হয়ে উঠা; এসবই এই প্রতিষ্ঠানের আদি ও অনন্তকালের চর্চা। ব্রিটিশ থেকে আজও চলমান কারণ এখনো কাঠামোগতভাবে তার মৌলিক কোনো রিফর্মেশন সাধন সম্ভব হয়নি। সৎ রাজনৈতিক উদ্যোগ ব্যতীত এই রিফর্মেশন হবেও না।

পুলিশের প্রতি আমার আগ্রহের কমতি নেই। হয়তো অনেকেরই সেই আগ্রহ বিদ্যমান। একজন মানুষ সার্ভিসে ঢোকার আগে-পরে এমন আকাশ-পাতাল পরিবর্তন হলো কী করে? কোন প্রক্রিয়ায় সে আজকের পুলিশ হয়ে উঠল?

এ দেশে পুলিশকে কাছে থেকে জানার সুযোগ কম। সাধারণ নাগরিকদের ঘৃণা হোক, ভয় হোক অথবা পুলিশি কৌশলের অংশ হোক; পুলিশ এই সমাজে থেকেও সমাজ থেকে আলাদা একটি গোত্রে পরিণত হয়েছে।

পোশাকে যে মানুষটিকে দেখা যায় তার ভেতরে এই মানুষটি বাদে কি অন্য কোনো মানুষ আছে নাকি পোশাকই তার শেষ পরিচয়, এ নিয়ে আমার অনুসন্ধান গত এক বছর চলমান ছিল। এই অনুসন্ধান আরও চলবে। পুলিশের ওপর একাডেমিক বই, থিসিস পেপার, উপন্যাস, বায়োগ্রাফি সংগ্রহ, ব্যক্তি পর্যায়ের সুসম্পর্ক, পেশাগত সংঘাত সব মিলে এ সময়টুকুতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা ঝুলিতে উঠেছে। কখনো মনে হয়েছে পোশাকে সমস্যা, কখনো মনে হয়েছে এই পোশাক কেবল তারাই পরতে পারে- যারা মানুষ হিসেবে সমস্যার। কখনো বা পুলিশকে তুলনা করেছি দুষ্ট জিনের সঙ্গে- যাকে বশে রাখার একমাত্র উপায় হলো, আইনের মারপঁ্যাচের ব্যবহার! আবার কখনো মনে হয়েছে ন্যারেটিভগুলোতে কোথাও ভুল হচ্ছে, না হলে পুলিশের কোনো ন্যায়সঙ্গত দায়িত্ব পালন কিংবা মানবিক আচরণ মনকে তৃপ্ত করবে কেন? পুলিশের নিজস্ব একটি মনস্তাত্ত্বিক

দৃষ্টি ভঙ্গি আছে।

সে সোসাইটি-রাষ্ট্র কাঠামো দ্বারা প্রতিনিয়ত প্রভাবিত হয়ে চলেছে। সরকারি আদেশে সে অন্ধ হয়ে গিয়ে মানবাধিকার পায়ে পিষে ফেলতে প্রস্তুত। আবার সুযোগ পেলে মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে উঠার চেষ্টা। দিন শেষে পুলিশিং একটি চাকরি। পুলিশকে দেখা এখনো শেষ হয়ে যায়নি, তাকে আরও নিরপেক্ষ ভাবে দেখতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে