দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার সুযোগ দিয়ে নতুন আইনের অনুমোদন দিয়েছেন জার্মানির আইনপ্রণেতারা। আইনে অভিবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব লাভের সময়সীমাও কমিয়ে আনা হয়েছে।
জার্মানির সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগে শুক্রবার নতুন আইনের পক্ষে বেশি ভোট পড়েছে। সরকার মনে করছে, এই আইনের মাধ্যমে দেশটি দক্ষ কর্মীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এতে কর্মী সংকট লাঘব হবে।
চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটসসহ (এসপিডি) জোট সরকারের অংশীদার ফ্রি ডেমোক্র্যাটস (এফডিপি) ও গ্রিন পার্টি আইনটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। কট্টর ডানপন্থি দল এএফডি-র সঙ্গে এই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাট (সিডিইউ) ও ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ)।
৬৩৯টি ভোটের মধ্যে পক্ষে পড়েছে ৩৮২টি ভোট, অন্যদিকে বিপক্ষে ভোট পড়েছে ২৩৪টি। ২৩ জন আইনপ্রণেতা ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন।
নতুন আইনের অধীনে জার্মানিতে পাঁচ বছর বসবাস করলেই বিদেশিরা জার্মান পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন, বর্তমান নিয়মে যা আট বছর। এমনকি ইন্টিগ্রেশন বা জার্মান সমাজে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য অসাধারণ যোগ্যতা অর্জন করলে তিন বছরের মধ্যেই নাগরিকত্ব অর্জনের সুযোগ রাখা হয়েছে। অভিবাসী যে দেশেরই হন না কেন নতুন আইনে তিনি দ্বৈত পাসপোর্ট রাখার সুযোগ পাবেন, বর্তমানে যা সাধারণত ইইউর অন্য সদস্য দেশ ও সুইজারল্যান্ডের নাগরিকরা পেয়ে থাকেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসারের মতে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করতে পারবেন তারা। তিনি বলেন, আমাদের দক্ষ কর্মী আকৃষ্ট করার প্রতিযোগিতার দৌড়ে টিকে থাকতে হবে। এর মানে আমাদের সারা বিশ্বের যোগ্য মানুষের আমন্ত্রণ জানাতে হবে, যেমনটা যক্তরাষ্ট্র, কানাডা করে। জার্মানির নাগরিকত্বের ব্যাপারটিও আবশ্যিকভাবেই এর অংশ।
এই উদ্যোগের ফলে কয়েক লাখ তুর্কি জনগোষ্ঠী জার্মানির নাগরিক ও ভোটার হতে পারবেন, যাদের অনেকের বাবা-মা বা দাদা-দাদিরা ১৯৫০ থেকে ১৯৭০-এর দশকে অতিথি কর্মী হিসেবে দেশটিতে এসেছিলেন।
সিডিইউ-সিএসইউ নতুন আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জার্মানির নাগরিকদের মূল্যবোধ রক্ষায় তারা এর সংশোধনী দিয়েছিল। অভিবাসনবিরোধী কট্টর-ডানপন্থি এএফডির জনপ্রিয়তা বেড়ে চলায় অভিবাসনের ক্ষেত্রে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটরাও কঠোর অবস্থান অবলম্বন করতে চায়। তবে সরকার ঢালাওভাবে অভিবাসনে কড়াকড়ির বিপক্ষে। বরং অনুমতিবিহীনভাবে বসবাস করা অভিবাসী ও অপরাধীদের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। আবেদন নাকচ হওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের দ্রম্নত ডিপোর্ট করা বা ফেরত পাঠানোর জন্য সম্প্রতি নতুন আইন পাস করেছে সরকার। এই আইনের ফলে আশ্রয় আবেদন বাতিল হওয়াদের ডিপোর্টের আগে ২৮ দিন পর্যন্ত বন্দি রাখা যাবে, আগে যা ছিল মাত্র ১০দিন।