সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট হবে কক্সবাজারের টেকনাফে

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত পাওয়া জমির দখল সার্ভে করে ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্দোবস্ত নেওয়া জমিতে একইসঙ্গে আরসিসি সীমানা পিলার পুঁতে জমি চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। বন্দোবস্ত নেওয়া জমিটা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিনসহ কক্সবাজার বিচার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন

প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছরা ইউনিয়নের উত্তর শীলখালী সমুদ্রসৈকত ঘেঁষা মেরিন ড্রাইভ রোডের পাশে গড়ে তোলা হবে 'বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট'। আন্তর্জাতিক মানের এ রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য ৩ একর ৩৪ শতক অকৃষি খাসজমি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের অনুকূলে দীর্ঘ মেয়াদি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, 'বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট' স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ জমি চেয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন টেকনাফের বাহারছরা ইউনিয়নের শীলখালী মৌজার উত্তর শীলখালী এলাকায় সমুদ্রসৈকত ঘেঁষা মেরিন ড্রাইভ রোডের পশ্চিম পাশে সমুদ্রসৈকতের পূর্ব পাশে বিএস ৩০২৭, ৩০২৮, ৩০২৯, ৩০৩০, ৩০৩৩, ৩০৩৪ দাগের ৩ একর ৩৪ শতক অকৃষি খাসজমি 'বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট' স্থাপনের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি বন্দোবস্ত দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব প্রেরণ করে। যে প্রস্তাবের দীর্ঘ মেয়াদি বন্দোবস্ত মামলা নম্বর : ০১/২০২৩-২০২৪ (টেকনাফ)। ভূমি মন্ত্রণালয় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া প্রস্তাবটি ১৯৯৫ সালের অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালার ১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে গত ২২ নভেম্বর অনুমোদন দেয়। অনুমোদন দেওয়া জমিটির জন্য নামমাত্র ১ লক্ষ ১ টাকায় প্রতীকী সেলামি নির্ধারণ করা হয়। গত ২১ ডিসেম্বর সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষে চালানমূলে সরকারি কোষাগারে ১ লক্ষ ১ টাকা প্রস্তাবিত জমির জন্য নির্ধারিত সেলামি জমা করা হয়। এরপর গত ২৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী জমি গ্রহিতা হিসেবে এবং সরকারের পক্ষে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জমি দাতা হিসেবে ৩ একর ৩৪ শতক অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদানের রেজিস্ট্রার্ড চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। একই দিন কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ এ টি এম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পাদিত চুক্তিপত্রটির দলিল হস্তান্তর করেন। চুক্তিপত্রটি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন, কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুলস্নাহ আল মামুন, অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহম্মদ খোন্দকার, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গা, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদ, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী জজ ওমর ফারুক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহিদ ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মনজুর আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত পাওয়া জমির দখল সার্ভে করে ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্দোবস্ত নেওয়া জমিতে একইসঙ্গে আরসিসি সীমানা পিলার পুঁতে জমি চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। বন্দোবস্ত নেওয়া জমিটা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিনসহ কক্সবাজার বিচার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। সূত্রটি জানিয়েছে, চুক্তি সম্পাদনের পর সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে জমিটির নামজারি খতিয়ান সৃজন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জন্য বরাদ্দ পাওয়া জমির লোকেশনটা খুবই মনোমুগ্ধকর ও চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। খুব সহসায় বন্দোবস্ত পাওয়া জমিতে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সূত্র মতে, বন্দোবস্ত পাওয়া জমিতে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেখানে থাকবে, বিচারসংক্রান্ত গবেষণার অবারিত সুযোগ। থাকবে গবেষণাধর্মী বিচারিক তথ্য-উপাত্ত। থাকবে মিউজিয়াম। সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। বিভিন্ন দেশের গবেষকদের গবেষণায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা। থাকবে, গবেষণায় নিয়োজিতদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা, রিসোর্ট ও রেস্ট হাউস। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বমানের একটি ইনস্টিটিউট হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন অত্যাধুনিক বিচারিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কার্যক্রমের জন্য আধুনিক পস্ন্যান, ডিজাইন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জনবল কাঠামোও সৃজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। সূত্র মতে, সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটটি নির্মিত হলে এটি হবে দেশের প্রথম এবং একমাত্র আইন, আদালত ও বিচার বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রাজধানীর বাইরে এটি হবে প্রথম স্থাপনা।