দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের ছয়জন সম্মানিত গ্র্যাজুয়েট বিভিন্ন আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী মুজিবুল হক চুন্নু। জামালপুর-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবুল কালাম আজাদ। রংপুর ৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তেরোতম ব্যাচের শিক্ষার্থী জনাবা ডক্টর শিরীন শারমিন চৌধুরী।
চাঁদপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ষোলোতম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং একইসঙ্গে আইন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডক্টর সেলিম মাহমুদ। কুড়িগ্রাম-৪ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন বত্রিশতম ব্যাচের শিক্ষার্থী বিপস্নব হাসান পলাশ। এবং হবিগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন বত্রিশতম ব্যাচের শিক্ষার্থী ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল।
কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে ৫৭ হাজার ৫৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মুজিবুল হক চুন্নু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ১৯৭৯-৮০ সালে অনার্স ও ১৯৮০-৮১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। মো. মুজিবুল হক চুন্নু সহকারী জজ (বিসিএস জুডিশিয়াল) হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। সমাজের সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করার জন্য তিনি ১৯৮৬ সালে চাকরি ছেড়ে রাজনীতি শুরু করেন এবং পরবর্তী সময়ে আইন পেশায় যোগ দেন।
রংপুর-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান স্পিকার ডক্টর শিরীন শারমিন চৌধুরী আবারও নির্বাচিত হয়েছেন। প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও ১৯৯০ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএমএ ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হন। শিরীন শারমিন চৌধুরী একজন কমনওয়েলথ স্কলার। ২০০০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে পিএইচডি লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল সংবিধানিক আইন ও মানবাধিকার।
এলএলএম পাস করার পর তিনি ১৯৯২ সালেই বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে তার ১৫ বছর অ্যাডভোকেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
চাঁদপুর-১ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ডক্টর সেলিম মাহমুদ নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করার গৌরব অর্জন করেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনবিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ডক্টর মাহমুদ যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এনার্জি-ল' অ্যান্ড পলিসি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার অসামান্য গবেষণা কর্মের জন্য যুক্তরাজ্যের এ বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় তাকে স্পেশাল ডিন এওয়ার্ড প্রদান করেন।
ডক্টর সেলিম মাহমুদ ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করলেও কিছুকাল তিনি একজন আইনজীবী হিসেবে কাজ করে যান। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই অনুষদে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারের এনার্জি অ্যান্ড রেগুলেটরি কমিশন ট্রাইবু্যনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি একই প্রতিষ্ঠানে ইতোপূর্বে ট্রাইবু্যনালের সদস্য হিসেবে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এছাড়াও ডক্টর সেলিম মাহমুদ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির ২০০৯-১২ মেয়াদের সদস্য ছিলেন।