সাক্ষ্য আইনের সংশোধন লক্ষ্যে খসড়া প্রস্তুত করেছে আইন কমিশন
প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
আইন ও বিচার ডেস্ক
বর্তমান সাক্ষ্য আইনের অসম্পূর্ণ ও ত্রম্নটিপূর্ণ অংশগুলো চিহ্নিত করেছে আইন কমিশন। একই সঙ্গে নতুন আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি প্রাথমিক খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছে। রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা, উচ্চ আদালতের সাবেক বিচারপতিরা, জেলা জজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন অংশীজনের মতামত আহ্বান করা হয়। এদের মধ্যে অনেকেই তাদের মতামত দেন। তা পর্যালোচনা করেই এই খসড়াটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে খসড়ার একটি কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিশন এই খসড়া প্রস্তুত করেছেন। কমিশনের অপর দুই সদস্য হলেন- সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর। প্রস্তাবিত সাক্ষ্য আইনের খসড়ায় দোষ স্বীকারোক্তির সুস্পষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দলিল বলতে অডিও, ভিডিও, ডিজিটাল নথিসমূহ, যে কোনো ধরনের ডিজিটাল উপাত্ত, কম্পিউটার কার্যক্রম, শব্দ বা চিত্র ধারণকারী যে কোনো ধরনের ডিস্ক বা টেপ ও অপর যে কোনো প্রকার উপাত্ত ধারক, ডিজিটাল স্বাক্ষর, সার্টিফিকেট ও ডিজিটাল মাধ্যমে কৃত যোগাযোগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়ায় মৃতু্যকালীন ঘোষণার বিধানটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি তার আসন্ন মৃতু্যর আশঙ্কা করে এবং ওই আসন্ন মৃতু্যর আশঙ্কা হতেই যদি তিনি বক্তব্যটি প্রদান করেন তাহলে যে কার্যধারায় তার মৃতু্যর কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন ওঠে তার প্রকৃতি যেমনই হোক না কেন, সে বক্তব্যসমূহ প্রাসঙ্গিক।
বিদ্যমান সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতাপরবর্তী ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনটি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় অন্যতম পদ্ধতিগত আইন হিসেবে বিভিন্ন বিচার আদালতে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। যুগ ও সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অপরাধ ও সামাজিক বিরোধের ধরন ও প্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের বিরোধ ও অপরাধের বিস্তৃতি লাভ করছে। তাই ওই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিদ্যমান সাক্ষ্য আইনসহ অন্য আইনগুলোকে আরও যুগোপযোগী করা প্রয়োজন, যাতে বর্তমান সময়ে উদ্ভূত বিরোধ ও অপরাধের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
আইন কমিশন দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রচলিত সাক্ষ্য আইনটি প্রয়োজনীয় পরিমার্জনের মাধ্যমে নতুন করে ইংরেজির পরিবর্তে বাংলা ভাষায় প্রণয়ন ও প্রবর্তনে সুপারিশ প্রেরণ করেছে।