যায়যায়দিন কার্যালয়ে গাছের চারা রোপণ সহযোগিতায় উপজেলা বন অধিদপ্তর, সাভার

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

জ্যোতিষ সমাদ্দার বাবু
গাছ প্রধানত অক্সিজেন সরবরাহ করে, বায়ুমন্ডল পরিশোধন করে, মাটির ক্ষয়রোধ করে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে, জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে, প্রাণিজগতের খাদ্য সরবরাহ করে। অথচ আমরা গাছ লাগানোর বেলায় প্রায় অবহেলা করেই যাচ্ছি। প্রয়োজনে পরিপূর্ণ বয়সের গাছ কাটতে হবে কিন্তু যে গাছটি কাটা হবে সে গাছটির অভাব পূরণ করতে পারবে সে হিসেব করে আগেই আরও গাছ লাগাতে হবে। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়, তা আমরা গাছ থেকেও পাই। পৃথিবীতে যত বেশি গাছের চারা রোপণ করা হবে, তত বেশি পরিবেশ সুন্দর হবে। মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে। মানুষসহ অন্যান্য প্রাণিজগৎ যে কার্বন-ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে তা দিয়ে গাছ সালোক সংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করে। গাছ ছাড়া প্রাণিজগৎ বেঁচে থাকা অসম্ভব। এই গাছ জ্বালানির কাজেও প্রয়োজন হয়। গাছের কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করা হয়। বর্তমানে শিল্প-কর্মের প্রসার ঘটার কারণে অযথা গাছ কাটা হচ্ছে। তার ফলেই সমস্ত জীবজগতের উপর হুমকি হয়ে দেখা দিচ্ছে। একদিকে গাছ কাটা অন্যদিকে দাবানলে পুড়ে ধ্বংস হচ্ছে বনভূমি। ফলে পৃথিবীতে গাছের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ঝড়ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, খরা প্রভৃতি দিন দিন বেড়েই চলছে। গাছপালা থেকে আমরা খাদ্য, পোশাক, নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় প্রায় সবকিছুই পেয়ে থাকি। কাজেই গাছের প্রতি আমাদের সবারই যত্নবান হওয়া উচিত। অক্সিজেন তো রোপণ করা যায় না। আবার একে চোখেও দেখা যায় না। অনুভব করা যায়। গ্রহণ করা যায়। অভাব হলে বোঝা যায়। অনেক বেশি ঘাটতি হলে প্রাণ যায়। এত প্রয়োজনীয় অক্সিজেনকে আমরা কেন রোপণ করছি না? অর্থাৎ উৎপাদন করছি না কেন? এখন সময় এসেছে অক্সিজেন রোপণ করার। প্রকৃতিতে অক্সিজেন উৎপাদন করে বৃক্ষরাজি গাছপালা, লতাপাতা। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রত্যেকটি দেশের মোট আয়তনের অন্তত পঁচিশ ভাগ বনভূমি থাকা আবশ্যক। আমাদের দেশে বনভূমি আছে মাত্র ৯ শতাংশের মতো। যেকোনো দেশের জন্য বনভূমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলেন, একটি গাছ মাটি থেকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি গ্রহণ করে এবং সেই অতিরিক্ত পানি বাষ্প আকারে বাতাসে ছেড়ে দেয়। যার ফলে শুধু বনভূমিই নয়, শহরেও যেসব এলাকায় গাছ বেশি সেসব এলাকা তুলনামূলক শীতল থাকে। অন্যদিকে বাতাস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে পরিবেশকে সুস্থ রাখে। একই সঙ্গে বৃক্ষরাজির ফল হলো পশুপাখি, কীট-পতঙ্গের খাবার ও আশ্রয়স্থল। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে গাছ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রতিরোধের জন্য গাছ লাগানো জরুরি হলেও আমরা তা করছি না। ফলে বনভূমি কমার সঙ্গে সঙ্গে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি ইউনেপের মতে, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন বা উষ্ণায়নের জন্য যেসব বিষয় দায়ী তার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হচ্ছে বৃক্ষ নিধন। জলবায়ুর ক্রমশ উষ্ণতার দিকে যাচ্ছে যার জন্য ২০ ভাগ দায়ী করা হয় পৃথিবীতে বন ধ্বংসের ধারাবাহিক কার্যক্রমকে। মানুষ এখন গাছের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কিছুটা সচেতন হচ্ছে এবং আরো বেশি সচেতন করতে যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম দেশব্যাপী গাছের চারা রোপণ কর্মসূচি পালন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার যায়যায়দিন কার্যালয়ে গাছের চারা রোপণ করা হয়। পরবর্তীতে সাভার অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় এ চারা রোপণ করা হবে। সাভার উপজেলা বন অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন জাতের কয়েক শত চারা সংগ্রহ করা হয়। যে গাছগুলো সংগ্রহ করা হয় তার মধ্যে রয়েছে লেবু, বাতাবি লেবু, পেয়ারা, বুদ্ধ নারকেল, আমড়া, চালতা, তেতুল, লটকন, জাম, কাঁঠাল, মেহগনি, আমলকি, তমাল, বহেড়া, চন্দন, দেবদারু, দুলাল তুলসী, মেহেদী, বক্স বাদাম, পিচ ফল ইত্যাদি। যায়যায়দিন কার্যালয়ে সবুজ বাগানে গাছের চারা রোপণ করেন যায়যায়দিন পত্রিকার সিনিয়র ম্যানেজার মো. নুরুল হক, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রইছ উদ্দিন আহমেদ, যায়যায়দিন পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিভাগের হেড অব মার্কেটিং মো. ইব্রাহীম খলিল স্বপন, সার্কুলেশন ম্যানেজার বেলাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর, ডেপুটি সার্কুলেশন ম্যানেজার খন্দকার আব্দুর রসিদ লিটন, বিজ্ঞাপন বিভাগের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ কাজী হায়দার মুরাদ, আশরাফুল এবং মাল্টিমিডিয়া বিভাগের সাইফুল ইসলাম, আবদুলস্নাহ আল মামুন, রাফিদ বিলস্নাহ, নাহিদ হাসান ও সাবরিনা সালাম মিম। আমাদের গাছের চারা দিয়ে সহযোগিতা করেন সাভারের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ, উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান। তাদের প্রতি যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরামের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। গাছের চারা সংগ্রহের ব্যাপারে সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন ফ্রেন্ডস ফোরামের বিভাগীয় সম্পাদক জ্যোতিষ সমাদ্দার বাবু এবং তাকে সহযোগিতা করেন কেন্দ্রীয় ফ্রেন্ডস ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক অর্জুন বিশ্বাস, সাভার উপজেলা প্রতিনিধি আরজু মীর, আশুলিয়া প্রতিনিধি মো. শহীদুলস্নাহ মুন্সী, এইচ আর সি গ্রম্নপের সাভারের এক্সিকিউটিভ মো. মোমিনুর রহমান ও বন বিভাগের সহকারী সুভাষ চন্দ্র সরকার। বিভাগীয় সম্পাদক যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম।