ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ধোঁয়া ওড়া এক কাপ চা হাতে বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি দেখা। মাঝে মাঝে বৃষ্টির মুখরতায় দু'চার ফোঁটা পানি ছিটকে লাগছে শরীরে। বিদু্যৎ চমকানোর আলো আর মেঘের ডাকে শব্দে মাঝে মাঝে শিহরিত হয়ে উঠছে শরীর। অথবা আকাশ ভেঙে পড়া বৃষ্টিতে বক্ষ পিঞ্জর প্রসারিত করে দুই হাত দিয়ে বৃষ্টিকে আলিঙ্গন করার মুহূর্ত বৃষ্টির শীতল পানি শরীর বেয়ে পড়ার যে অনুভূতিটা!
জানেন, এই মুহূর্তগুলোর তুলনা হয় না! জগতের কোনো কিছুর বিনিময়ে এগুলো ক্রয় করা যায় না, যায় না বিক্রি করা কিংবা কাউকে বলে বোঝানো। এই বিষয়টা সম্পূর্ণ অনুভূতির আর অনুভবের। এই অনুভূতিটা শব্দ এবং ভাষার বাইরের। যেটা বলার শব্দ কোনো অভিধানে নেই। কিঞ্চিত ধারণা যেখান থেকে পাওয়া যায় সেটা হল 'বৃষ্টি বিলাস'!
পরীক্ষা শেষে ঘুরতে বের হতেই মেঘময় আকাশ আমাদেরকে ঘিরে ধরল। আমাদের একজন প্রথমে বন্ধুদের সবাইকে অনুরোধ করল বৃষ্টিতে ভেজার জন্য। কিন্তু আমরা কেউই রাজি হলাম না। ঘোরাঘুরি শেষে যখন চলে আসব বিজয় সড়কে আকস্মিকভাবে বৃষ্টিটা বেড়ে গেল। একটা ছাতায় ছয় জন আশ্রয় নেওয়ার বৃথা চেষ্টা করলাম। ব্যর্থ হয়েই শুরু হলো বৃষ্টিতে ভেজার অভিযান। অতঃপর ইতিহাস! কিন্তু হুট করে কখন যে এই তথাকথিত বৃষ্টি বিলাসটা পহেলা আষাঢ় বা বর্ষার শুরুতে হয়ে গেছে বুঝিনি! পরে অবশ্য খুবই ভালো লাগল যে আষাঢ় বিলাসটাও হয়ে গেছে!
ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বেশি আনন্দের সময়গুলোর একটা ছিল। আমি জানি না এই সেরা মুহূর্তটা কখনো ভুলতে পারব কিনা। বন্ধুরা এভাবে পাশাপাশি থাকলে প্রতিটা দিনই পহেলা আষাঢ় এ পরিণত হবে। প্রতিটি সন্ধ্যা বৃষ্টি এবং বন্ধুত্বের উচ্ছল মুখরতায় মুখরিত হোক সবার জীবন। এই আষাঢ় সবার হৃদয়ে আনন্দের বৃষ্টি নিয়ে আসুক প্রতিটি দিন। সবার সন্ধ্যা হোক বৃষ্টিময়।
সদস্য, ফ্রেন্ডস ফোরাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়