হৃদয়ে জ্বালো শুদ্ধ প্রাণের আলো জ্যোতিষ সমাদ্দার বাবু
ফেব্রম্নয়ারি মাস শুরু হলেই বাংলা ভাষা নিয়ে সর্বত্র একটা হইচই ভাব পড়ে যায়। বানান ভুল, সাইনবোর্ড ইংরেজি না বাংলা, উচ্চ শিক্ষার বইয়ের অভাব ইত্যাদি ইত্যাদি। এ হইচই সারা বছরই হওয়া উচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সর্বত্র এখনো বাংলা ভাষা চালু করা সম্ভব হয়নি। উচ্চ আদালতে বিচারের রায় বেশিরভাগই এখনো ইংরেজিতেই লেখা হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে দুই দিনব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসবে কবিদের কণ্ঠে কবিতা পাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে দুই বাংলার বাংলা ভাষাভাষীসহ অনেক বিদেশি কবিরাও থাকবেন।
প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
ফেব্রম্নয়ারি মাস আমাদের হৃদয়কে আন্দোলিত করে অন্য আর মাসগুলো থেকে একটু ভিন্নভাবে। তার কারণ এ মাসেই রোপিত হয়েছিল স্বাধীনতার বীজ। পশ্চিমা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আমাদের মাতৃভাষাকে কলুষিত করে আমাদের চির দাসত্বের বন্ধনে আটকে রাখতে চেয়েও পারেনি। তার কারণ বাংলা ভাষা, মায়ের ভাষার স্বাধিকার রক্ষার্থে বীর বাঙালিদের বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ। আজ সারাবিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে আমাদের মায়ের ভাষা বাংলা ভাষা। বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউস প্রাঙ্গণের বটতলায় এক টুকরো চটের ওপর কলকাতা থেকে আনা ৩২টি বই সাজিয়ে যে গ্রন্থমেলার গোড়াপত্তন করেছিলেন চিত্তরঞ্জন সাহা বর্তমানে তা বাংলা একাডেমি থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে সারা বাংলার মানুষের মনের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। পুরো এক মাস সৃজনশীল মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকবে বাংলা একাডেমি চত্বর পেরিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে। ১১টি মাস অপেক্ষায় থাকা হৃদয়বন্ধনের মেলা, জাতীয় চেতনার মেলা, ঐতিহ্যের মেলা এক কথায় বইপ্রেমিকদের প্রাণের মেলা। এ মেলার সঙ্গে জড়ানো থাকে হাজার বছরের বাঙালির ঐতিহ্য, আবেগ-আকাঙ্ক্ষা, অহংকার, ত্যাগ-তিতিক্ষা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভালোবাসা।
'অমর একুশে গ্রন্থমেলা' হৃদয়বন্ধনের মেলা, জাতীয় চেতনার মেলা, ঐতিহ্যের মেলা যা আমাদের হৃদয়ে শুদ্ধপ্রাণের আলো জ্বেলে চলছে। এ মেলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজার বছরের বাঙালির ঐতিহ্য, আবেগ-আকাঙ্ক্ষা, অহংকার, ত্যাগ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভালোবাসার প্রতীক। আগামী ১ ফেব্রম্নয়ারি থেকে শুরু হবে 'অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৪'। এখন ডিজিটাল মাধ্যমে বইয়ের অফুরন্ত ভান্ডার সত্ত্বেও ছাপানো বইয়ের কদর একেবারেই কমে যায়নি। নতুন বইয়ের গন্ধে পুরো এলাকাজুড়ে একটু মধুময় সুভাষ ছড়াবে। প্রিয় লেখক ও প্রিয় বই নিয়ে পাঠকদের আগ্রহের কোনো কমতি থাকে না। সৃজনশীল মানুষের পদচারণায় মুখরিত হবে মেলা প্রাঙ্গণ। দেখা হবে, কথা হবে, আবার আড্ডাও হবে দূর-দূরান্তের কবি, লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, নাট্যকারসহ প্রথিতযশা সব মানুষের সঙ্গে একই আঙ্গিনায়। মাসজুড়ে চলবে অটোগ্রাফ দেওয়া-নেওয়া, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হবে। একে অন্যের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন হবে বই দেওয়া-নেওয়া সঙ্গে আবার একটু চা-চক্র। বই মানুষের হৃদয়ের খোরাক, ভালোবাসার প্রতীক। আলোকিত মানুষ হয়ে সমাজের ক্লেদাক্ত দূর করতে প্রেরণা জোগায় বই। শুদ্ধপ্রাণের এ মেলায় সবাইকে আহ্বান জানাই, হানাহানি বন্ধ করে হৃদয়ে শুভবুদ্ধির জাগ্রত করার। জয়তু একুশে গ্রন্থমেলা, জয়তু শুদ্ধপ্রাণের মিলনমেলা, হৃদয়ে জ্বালো শুদ্ধপ্রাণের আলো।
ফেব্রম্নয়ারি মাস শুরু হলেই বাংলা ভাষা নিয়ে সর্বত্র একটা হইচই ভাব পড়ে যায়। বানান ভুল, সাইনবোর্ড ইংরেজি না বাংলা, উচ্চ শিক্ষার বইয়ের অভাব ইত্যাদি ইত্যাদি। এ হইচই সারাবছরই হওয়া উচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সর্বত্র এখনো বাংলা ভাষা চালু করা সম্ভব হয়নি। উচ্চ আদালতে বিচারের রায় বেশিরভাগই এখনো ইংরেজিতেই লেখা হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে দুই দিনব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসবে কবিদের কণ্ঠে কবিতা পাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে দুই বাংলার বাংলা ভাষাভাষীসহ অনেক বিদেশি কবিরাও থাকবেন।
জাতীয় নজরুল মঞ্চে প্রতিদিনই নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হবে বইয়ের ম-ম গন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সুবাতাস বইবে। মানুষে মানুষে চারদিকের হানাহানি বন্ধ করে আসুন আমরা প্রাণের মেলায় সবাইকে আহ্বান জানাই, বইয়ের মাধ্যমে সুপ্ত জ্ঞানের বিকাশ ঘটুক, হৃদয়ে শুভবুদ্ধির জাগ্রত হোক জয়তু একুশে গ্রন্থমেলা, জয়তু প্রাণের মেলা, সবার হৃদয়ে জ্বালো শুদ্ধ প্রাণের আলো।