বাতজ্বর অন্য স্বল্পোন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বাতজ্বর ও বাতজ্বরজনিত হৃৎপিন্ডের অসুখ বিগত কয়েক দশকে উন্নত দেশগুলোয় উলেস্নখযোগ্যভাবে কমে গেলেও আমাদের মতো স্বল্পোন্নত দেশে এর প্রাদুর্ভাব এখনো অনেক বেশি। অনেক শিশুই জীবনের ঊষালগ্নে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অকাল মৃতু্যবরণ করে কিংবা চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে অন্যের গলগ্রহে জীবনযাপন করে। উচ্চ রক্তচাপের পরই আমাদের দেশে বাতজ্বর হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ। এ রোগে প্রতি বছর অনেক শিশু-কিশোর ও যুবক আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃতু্যমুখে পতিত হয়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি হাজারে ৭.৫ জন লোক এবং প্রতি হাজারে চারজন শিশু বাতজ্বর ও বাতজ্বরজনিত রোগে ভুগছে। হাসপাতালে শতকরা ৩০-৪০ ভাগ রোগী বাতজ্বরজনিত হৃদরোগের কারণে ভর্তি হয় এবং হার্ট অপারেশনের শতকরা ৭০-৮০ ভাগ বাতজ্বরজনিত হৃদরোগের কারণে হয়ে থাকে। বাতজ্বর কী? কেন হয়? কিভাবে চেনা যায়? এর বিস্তৃতি কতটা ব্যাপক? বাতজ্বরজনিত জটিলতা এবং কী করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায় সে সম্পর্কে সংক্ষেপে এখানে আলোকপাত করা হলো।
বাতজ্বর কী
অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চাদের গায়ে প্রায়ই জ্বর থাকে। জ্বরের সঙ্গে শরীরে ব্যথা হয় ও গিরা ফুলে যায়। কোনো সময় একটি বড় গিরা কিংবা একই সঙ্গে অনেক গিরা আক্রান্ত হতে পারে। একবার হলে বার বার হতে থাকে। গিরা ব্যথার পরই যে উপসর্গটি দেখা দেয় তা হলো হৃৎপিন্ডের প্রদাহ। এ প্রদাহ সাধারণ লোকের পক্ষে বুঝে ওঠা এত সহজ নয়। তবে একজন সাধারণ লোক যা বুঝতে পারে তা হলো বাচ্চার ঘন ঘন জ্বর হয়, বুক ধড়ফড় করে, শ্বাসকষ্ট হয়, বাচ্চা খেতে চায় না ইত্যাদি। যেহেতু বাচ্চার গায়ে প্রায় সময়ই জ্বর থাকে ও খাবারে অনীহার দরুন অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বাচ্চার স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে, বাচ্চা শুকিয়ে যায় এবং আশানুরূপ ওজন বাড়ে না। অনেক সময় দেখা যায় এ-জাতীয় জ্বর হওয়ার আগে বাচ্চার গলা ব্যথা করে। এ জ্বর সাধারণত পাঁচ থেকে ১৫ বছর বয়সের বাচ্চাদের হয়ে থাকে। চার বছরের নিচের কিংবা ২২ বছরের ওপর বয়সী বাচ্চাদের বাতজ্বর খুবই কম হয়।
য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক