প্রযুক্তির থাবায় শুষ্ক চোখ

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
সাধারণত বয়স ৫০ পেরোলে শুষ্ক চোখ বা ড্রাই আইয়ের সমস্যা দেখা যেত। কিন্তু এখন কম বয়সিদের মধ্যে এই সমস্যা উলেস্নখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা, লেন্সের ব্যবহার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকা, ধূমপানের কারণে এমন হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ড্রাই আই কী চোখে প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি উৎপন্ন হলে চোখ জ্বালাপোড়া, খচখচ করা বা চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দেয়। ড্রাই আইয়ের প্রাথমিক লক্ষণ এগুলো। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে পরবর্তী সময়ে চোখে প্রদাহজনিত সমস্যাসহ নানা ধরনের ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একই সঙ্গে দুটো চোখে বা একটা চোখেও এই সমস্যা হতে পারে। লক্ষণ এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো- চোখ শুষ্ক লাগা, কাঁদতে না পারা, চোখে খসখসে বা শুষ্ক অনুভূতি হওয়া, চোখ চুলকানো এবং লাল হয়ে যাওয়া। এ ছাড়া দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়া, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, সব সময় মনে হবে যে চোখে কিছু পড়েছে। সেইসঙ্গে চোখের পাতা ফুলে যেতে পারে বা চোখ খুব ক্লান্ত মনে হতে পারে। এ রকম সমস্যা অনুভূত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কেন হয় বয়স ৫০ পার হলে চোখের টিয়ার প্রোডাকশন বা পানি উৎপাদন ক্ষমতা কমতে শুরু করে। তখন ড্রাই আই বা শুষ্কতা চোখের সমস্যা দেখা দেয়। কম বয়সিদের ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা, ধূমপান বা ধোঁয়াযুক্ত স্থানে বেশি থাকা এই রোগের প্রধান কারণ। নিয়মিত চোখে লেন্স ব্যবহার বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া অ্যালার্জি, বাতের সমস্যা, লুপাস, থাইরয়েডসহ নানা রোগ থাকলে শুষ্ক চোখের সমস্যা হতে পারে। অ্যান্টি-হিস্টামাইন, ডিকনজেন্সটেন্ট, অ্যান্টি- ডিপ্রেশেন্ট ওষুধের পাশাপাশি প্রেশার, ব্রণ, গর্ভনিরোধক ওষুধ দীর্ঘদিন খেলেও ড্রাই আই হয়। কী করবেন ড্রাই আইয়ের সমস্যা থাকলে প্রথম কাজ হচ্ছে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ও ড্রপ ব্যবহার করা। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে অল্প দিনেই এই সমস্যা কেটে যাবে। পাশাপাশি দিনে তিন থেকে চার লিটার পানি পান করতে হবে। ধূমপান বা অ্যালকোহল কিংবা অন্যান্য সফট ড্রিংকস যেমন সেভেনআপ/কোকা-কোলা এই ধরনের পানীয় পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। কম্পিউটার কিংবা মোবাইল স্ক্রিনে বেশিক্ষণ তাকাবেন না। কাজ করতে হলে স্ক্রিনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি গস্নাস দিয়ে চশমা বানিয়ে নিন। পানিযুক্ত ফল ও ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে। একনাগাড়ে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকবেন না। ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলুন। চোখে যেন এসির বাতাস না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন। খুব অসুবিধা না হলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে না থাকাই ভালো। ওমেগা-থ্রিসমৃদ্ধ খাবার চোখের জন্য বিশেষ উপকারী। তাই বেশি করে সামুদ্রিক মাছ, কড লিভার অয়েল, আখরোট বা বিভিন্ন ধরনের মিক্সড বাদাম, টক দই ও সয়ামিল্ক খান।