নখ কুনি বা নখের ইনফেকশন হলে হাত বা পায়ের আঙুলের নখের স্থান ধীরে ধীরে ক্ষত বড় হতে দেখা যায়। অনেক সময় কালচে রঙের হয়ে যায় এবং নখের আশপাশে ব্যথা হয়, চারপাশ ফুলে যেতেও দেখা যায়। কখনো পুঁজও হয়। ভীষণ যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হন অনেকে। এই রকম হলে আমরা এই রোগকে প্যারোনিকিয়া বলি। সাধারণ রোগীরা একে নখ কুনি বলে থাকেন।
প্যারোনিকিয়া বা নখ কুনি এক ধরনের ইনফেকশন- যা হাত বা পায়ের আঙুলের চারপাশে হয়ে থাকে। এই ইনফেকশন ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস অথবা ক্যান্ডিডা নামক এক ধরনের ইস্টের কারণে হয়ে থাকে।
নখের ইনফেকশন কারণসমূহ:
হ নখ বা আঙুলের কোনো আঘাত, যেমন-
দাঁত দিয়ে নখ কাটা, আঙুল চোষা, থালাবাসন ধোয়ার সময় আঘাত লাগা।
হ কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার থেকে যে সব ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই ত্বকের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে, সেগুলোর কারণে এই ইনফেকশন হয়ে থাকে।
হ ফাঙ্গাসের কারণেও প্যারোনিকিয়া হতে পারে, বিশেষ করে যাদের বারবার ইনফেকশন হয়।
নক কুনির লক্ষণ:
হ নখের ভেতরে ফাঁকাভাব তৈরি হওয়া।
হ নখের দুই পাশের কোনা ভেঙে যাওয়া।
হ নখের সম্মুখভাগ কিংবা নখের অর্ধেক অংশ ফ্যাকাশে হলুদ হয়ে যাওয়া।
হ নখের চারপাশের ত্বক ফোলা ও খসখসে হয়ে ওঠা।
হ সহজে নখ ভেঙে যাওয়া।
হ নখে বাজে গন্ধ বের হওয়া।
হ নখে তীব্র ব্যথা হওয়া।
যেসব কারণে নখ কুনির ঝুঁকি বেড়ে যায় :
হ ডায়াবেটিসের প্রভাবে এ রোগ বেড়ে যেতে পারে।
হ রাসায়নিক দ্রব্যের মিশ্রণ থাকে এমন কিছুর ব্যবহার যেমন- পানি, ফুড সার্ভিস, ক্লিনিং, দাঁতের চিকিৎসা, বারটেন্ডিং, হেয়ার ড্রেসিং এবং নার্সিং পেশা।
হ দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাসেও এ রোগ দেখা দিতে পারে।
হ অতিরিক্ত মেনিকিউর করা।
প্রতিরোধের উপায়:
হ হাত এবং পা পরিষ্কার এবং শুষ্ক রাখতে হবে।
হ পানি এবং রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের সময় রাবার গস্নাভস পরিধান করা উচিত।
হ দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
হ হাত বা পায়ের মৃত কোষ টেনে তোলার চেষ্টা করবেন না।
হ সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে চেষ্টা করবেন।
এই রোগের লক্ষণগুলো সহজেই শনাক্ত করা যায়, এবং ত্বক এবং নখের কোনো ধরনের ক্ষতি ছাড়াই এর চিকিৎসা করা সম্ভব। চিকিৎসা করা না হলে এই সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে অথবা নখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেজন্য এই রোগ হলে দেরি না করে একজন স্কিন চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতে হবে।
প্রাথমিক চিকিৎসা
নখের এই ইনফেকশনের জন্য, প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে ফবৎসধংরস (ংড়ষঁঃরড়হ : ঈষড়ঃৎরসধুড়ষব ১% ঞড়ঢ়রপধষ) সলু্যশন, নখের তিন পাশে ২ ফোঁটা করে, দিনে ২ বার ব্যবহার করতে পারেন।
ফাঙ্গাসরোধী ফ্লুকোনাজল জাতীয় ক্যাপসুল, ৫০ মিগ্রা দিনে ১ বার ৫-৭ দিন খেতে পারেন। তবে, তা অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করতে বা ব্যবহার করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
চম, যৌন, এলার্জি ও চুল রোগ বিশেষজ্ঞ
চেম্বার-কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার
১৪৪ বিআইটি সেন্টার, গ্রীন রোড, ফার্মগেট, ঢাকা।