শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

শিশুর সকালের খাবার

নাজিয়া আফরিন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ নারী মৈত্রী
  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শিশুর সকালের খাবার

সকালের খাবার শিশুদের জন্য খুবই উপকারী। যেসব শিশুরা নিয়মিত সকালের খাবার খায় তারা অন্য শিশুদের চেয়ে অধিক পুষ্টিবান হয় শেখার ক্ষেত্রে অধিক আগ্রহী হয়, কাজের প্রতি মনোযোগী বেশি থাকে, ইতিবাচক আচরণ থাকে এবং ফলাফল ভালো করার জন্য সব সময় উদ্যোমী থাকে। এছাড়া বিদ্যালয়ে তাদের উপস্থিতির হারও তুলনামূলক বেশি থাকে। অপরদিকে, যারা সকালের খাবার খায় না তাদের ভেতরে উদ্যমতা থাকে না এবং পাকস্থলীর বিভিন্ন সংক্রমণজনিত রোগে ভোগার সম্ভাবনা থাকে। সকালের খাবার স্বাস্থ্যসম্মত ওজন নিশ্চিত করে। এজন্য শিশুর সকালের সঠিক খাবার নির্বাচন করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকালের খাবার যেহেতু তার সারাদিনের প্রথম খাবার তাই এটি অবশ্যই সুষম হতে হবে।

সাধারণভাবে অনেকেই রুটি আলু ভাজি সকালের নাস্তা হিসেবে গ্রহণ করেন। যদিও দুটো খাদ্য উপাদানই কেবলমাত্র শর্করা জাতীয়। এক্ষেত্রে সঠিক পুষ্টি বজায় থাকছে না। প্রোটিন জাতীয় খাবার দিয়ে সকাল শুরু করা উচিত। ডিম যেহেতু একটি আদর্শ খাবার তাই ডিম দিয়ে নানারকম রেসিপি তৈরি করলে শিশুরা খাবারের প্রতি আগ্রহী হবে। ডিম ও দুধের সমন্বয়ে পুডিং; ডিম, দুধ ও বাদামের মিশ্রণে তৈরি খাবার খাওয়ানো যায়। এছাড়াও ডিমকে একটু অন্যভাবে কর্ন ফ্লাওয়ার বা সাগু দিয়ে সু্যপ রান্না অথবা কিছু সবজি ও মাংস দিয়ে ভেজে খাওয়ানো যায়। সকালের কার্বোহাইড্রেটের ক্যালরি গ্রহণের জন্য অবশ্যই রুটি, পাউরুটি বা পরোটা অথবা সুজি, সাগু, ওটস বা কর্নফ্লেক্স খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও রুটি বা পরোটায় ঘরে তৈরি টমেটোর সস এবং মেয়নেজ ব্যবহার করে মাংসের কুচি ও সবজি কুচি দিয়ে রোল করে অথবা পাউরুটিতে ঘরে তৈরি টমেটো সস এবং চিজ বা মেয়নেজ দিয়ে ডিমে ডুবিয়ে পরিমিত পরিমাণে তেলে ভেজে বা এর ভেতর অন্যান্য সবজি ও মাংস দিয়ে স্যান্ডউইচ তৈরি, কলা, আপেল, ঘরে তৈরি কেক বা পিঠা, সবজি খিচুড়ি সঙ্গে ডিম বা চিকেন, ডিম বা চিকেন ও সবজি দিয়ে শর্মা বা স্যান্ডউইচ, চিড়ার সঙ্গে দুধ বা দই ও ফল, কর্নফ্লেক্স দুধ ও ফল, ওটসের সঙ্গে দুধ বা দই ও ফল। নুডলসের সঙ্গে ডিম বা চিকেন ও সবজি, ডিম টোস্ট ও ফল, ডিম পরোটা, সবজি ইত্যাদিও খাওয়ানো যায়। একদিকে যেমন শিশুদের পছন্দের খাবারও তৈরি করা যায় পাশাপাশি সঠিক পুষ্টির সরবরাহ করে ক্যালরির চাহিদাও মেটানো সম্ভব হয়।

প্রতিটি খাবারের উপাদান ও বৈচিত্র্যের কারণে ক্যালোরির পরিমাণ বা খাবারের গুণগতমানের মধ্যে তারতম্য দেখা দেয়। তাছাড়া শিশু কী পরিমাণ খাবার খাবে, তা নির্ভর করে তার বয়স, ওজন, উচ্চতা, শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রাসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। সেজন্য যে কোনো খাবার ও খাবারের উপাদান সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে শিশুর খাদ্য তালিকায় তা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে শিশুর সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। শিশুদের সঠিক নিয়মে বেড়ে ওঠা ভবিষ্যতের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

নাজিয়া আফরিন

স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ

নারী মৈত্রী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে