আধুনিক জীবনের এক নীরব মহামারি বিষণ্নতা- যা একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। বর্তমান সময়ে বৈশ্বিকভাবে উলেস্নখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিক জীবনের দ্রম্নতগামিতা, প্রতিযোগিতা, আর্থিক চাপ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি বিষণ্নতা তৈরির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারিগর। বিষণ্নতা শুধু মানসিক অসুস্থতা নয়, এটি দৈনন্দিন জীবন, কাজ ও সম্পর্কেও গভীর প্রভাব ফেলে। বিষণ্নতা সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী দুঃখ, হতাশা, এবং আগ্রহের অভাবের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এটি দৈনন্দিন কার্যকলাপের ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং কখনো কখনো গুরুতর শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
লক্ষণ ও উপসর্গ
দীর্ঘস্থায়ী দুঃখবোধ : দীর্ঘ সময় ধরে দুঃখ, শূন্যতা, বা হতাশা অনুভব করা।
আগ্রহের অভাব: আনন্দদায়ক কার্যকলাপগুলোতে আগ্রহ বা আনন্দের অভাব।
অবসাদ: সব সময় ক্লান্তি বা শক্তিহীনতা অনুভব করা।
ঘুমের সমস্যা: অনিদ্রা, অতিরিক্ত ঘুম, বা নিয়মিত ঘুমের অভাব।
ক্ষুধা ও ওজন পরিবর্তন : ক্ষুধা কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া- যা ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটাতে পারে।
আত্মসম্মান ও আত্মবিশ্বাসের অভাব: নিজেকে অযোগ্য বা অমূল্য মনে করা ও অতিরিক্ত আত্ম-সমালোচনা।
মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা: মনোযোগের অভাব, চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অসুবিধা।
আত্মহত্যার চিন্তা বা প্রচেষ্টা: জীবনকে অর্থহীন মনে করা এবং আত্মহত্যার চিন্তা বা প্রচেষ্টা।
বিষণ্নতার কারণ
বিষণ্নতার কারণগুলো বিভিন্ন হতে পারে ও এগুলো সাধারণত জৈবিক, মানসিক, এবং সামাজিক উপাদানের সংমিশ্রণে ঘটে।
জৈবিক কারণসমূহ
নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতা: মস্তিষ্কে সেরোটোনিন, ডোপামিন ও নোরইপিনেফ্রিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারগুলোর ভারসাম্যহীনতা বিষণ্নতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলো মনের অবস্থা, ঘুম, এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।
জিনগত প্রভাব: পারিবারিক ইতিহাসে বিষণ্নতা থাকলে বিষণ্নতার সম্ভাবনা বেশি হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে বিষণ্নতার জন্য নির্দিষ্ট জিনগুলোর ভূমিকা থাকতে পারে।
হরমোনাল পরিবর্তন: থাইরয়েড হরমোনের অভাব বা অতিরিক্ততা, মেনোপজ, বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের ব্যবহার বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকলাপ: বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের হিপোক্যাম্পাস ছোট হতে পারে।
শারীরিক অসুস্থতা ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা: কিছু কিছু শারীরিক অসুস্থতা, যেমন ক্যানসার, হৃদরোগ, বা দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রদাহ: প্রদাহ ও ইমিউন সিস্টেমের কিছু পরিবর্তন বিষণ্নতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।
মানসিক কারণসমূহ
মানসিক চাপ: দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ, যেমন: কাজের চাপ, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কে সমস্যা, আর্থিক সমস্যা, বা কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
আত্মসম্মানের অভাব: কম আত্মসম্মান, আত্মবিশ্বাসের অভাব, বা নিজেকে নেতিবাচকভাবে দেখা বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়ায়।
আত্মসমালোচনা: নেতিবাচক চিন্তাভাবনা ও নিজেকে নেতিবাচকভাবে দেখা বিষণ্নতা বাড়াতে পারে। কেউ যদি ক্রমাগত নিজেদের সমালোচনা করে বা অতিরিক্তভাবে দোষ দেয়, তাহলে বিষণ্নতা বাড়তে পারে।
আত্মসম্মানহীনতা: শিশু বয়সে বা জীবনের অন্যান্য পর্যায়ে মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন বা অবহেলার শিকার হলে বিষণ্নতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
ট্রমা ও আঘাত: জীবনযাত্রায় কোনো বড় ট্রমা বা আঘাতজনিত ঘটনা, যেমন প্রিয়জনের মৃতু্য, দুর্ঘটনা, বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
সম্পর্কের সমস্যা: ব্যক্তিগত সম্পর্কে সমস্যা, যেমন: বিয়েবিচ্ছেদ, বিচ্ছেদ বা পরিবারের সঙ্গে বিরোধ বিষণ্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
একাকিত্ব ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: দীর্ঘ সময় ধরে একাকী থাকা বা সামাজিক সমর্থনের অভাব বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
পারফেকশনিজম: উচ্চ মানসিক প্রত্যাশা বা পারফেকশনিজম বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
সামাজিক কারণসমূহ
সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: পরিবার, বন্ধু বা সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্নতা বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়ায়। একাকিত্ব ও সামাজিক সমর্থনের অভাব মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
পারিবারিক সম্পর্ক: পারিবারিক সমস্যা, যেমন সম্পর্কের টানাপড়েন, পরিবারে কলহ, বা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অমিল বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
আর্থিক সমস্যা : দারিদ্র্য, ঋণ, বা আর্থিক নিরাপত্তার অভাব বিষণ্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। আর্থিক চাপ মানসিক চাপ সৃষ্টি করে- যা বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
কর্মক্ষেত্রের চাপ: কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাজের চাপ, সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের সমস্যা, বা চাকরির নিরাপত্তাহীনতা বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়ায়।
শিক্ষার ক্ষেত্রে চাপ: ছাত্রদের ক্ষেত্রে, শিক্ষার চাপ, পরীক্ষার ভয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসিক সমর্থনের অভাব বিষণ্নতা সৃষ্টি করতে পারে।
সম্পর্কের সমস্যা: প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী বা অন্যান্য ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মধ্যে সমস্যা বিষণ্নতার কারণ হতে পারে। সম্পর্কের বিচ্ছেদ বা বিয়েবিচ্ছেদ বিষণ্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
বুলিং বা হয়রানি: স্কুল, কর্মক্ষেত্র বা অন্যান্য স্থানে বুলিং বা হয়রানির শিকার হলে বিষণ্নতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক প্রত্যাশা: সমাজের বা সংস্কৃতির নির্দিষ্ট প্রত্যাশা ও মান অনুযায়ী চলতে না পারা ব্যক্তির ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে- যা বিষণ্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
প্রত্যাখ্যান ও বৈষম্য : যে কোনো ধরনের সামাজিক বৈষম্য, যেমন বর্ণ, লিঙ্গ, ধর্ম, বা যৌন অভিমুখের ভিত্তিতে বৈষম্য বা প্রত্যাখ্যান, বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিষণ্ন্নতার প্রভাব
মানসিক প্রভাব
দুঃখ ও হতাশা: বিষণ্নতা অনুভূতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে- যা দীর্ঘ সময় ধরে দুঃখ ও হতাশার কারণ হতে পারে।
আত্মমর্যাদার অভাব: আত্মসম্মান ও আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দিতে পারে।
আত্মহত্যার প্রবণতা: গুরুতর বিষণ্নতার ক্ষেত্রে আত্মহত্যার চিন্তা বা প্রচেষ্টা হতে পারে।
শারীরিক প্রভাব
অবসাদ: শারীরিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হওয়া ও শক্তির অভাব।
ঘুমের সমস্যা: অনিদ্রা, অতিরিক্ত ঘুম, বা অনিয়মিত ঘুমের সমস্যা।
ক্ষুধার পরিবর্তন: ক্ষুধা কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া- যা ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটাতে পারে।
শারীরিক অসুস্থতা: দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্নতা শারীরিক অসুস্থতা, যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
সামাজিক প্রভাব
সম্পর্কের সমস্যা: পরিবার, বন্ধু, বা সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন।
সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: সামাজিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণে অনিচ্ছা বা অক্ষমতা- যা একাকিত্ব ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
কর্মজীবনে প্রভাব: কর্মক্ষেত্রে কর্মক্ষমতা হ্রাস, অনুপস্থিতি বা চাকরি হারানোর ঝুঁঁকি।
অন্যান্য প্রভাব
মনোযোগের অভাব: মনোযোগ ও মনোসংযোগের সমস্যা- যা কাজ বা পড়াশোনার ক্ষতি করতে পারে।
স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা : স্মৃতিশক্তি হ্রাস এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
নেতিবাচক চিন্তাভাবনা: ক্রমাগত নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং হতাশাব্যঞ্জক চিন্তা।
অলসতা ও উদাসীনতা: দৈনন্দিন কার্যকলাপে অনীহা ও উদাসীনতা।
মাদকাসক্তি: কিছু মানুষ মাদক, অ্যালকোহল বা অন্যান্য পদার্থের অপব্যবহার করতে পারে বিষণ্নতার মোকাবিলায়।
বিষণ্নতার প্রভাবে সৃষ্ট বিভিন্ন রোগ ও শারীরিক সমস্যা:
বিষণ্নতা শুধুই মানসিক অসুস্থতা নয়, এটি শারীরিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটাতে পারে এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
হৃদরোগ
উচ্চ রক্তচাপ: বিষণ্নতা উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
হৃদরোগ: বিষণ্নতা হৃৎপিন্ডের কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বিষণ্ন ব্যক্তিদের হার্টঅ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে।
ডায়াবেটিস
বিষণ্ন্নতা এবং ডায়াবেটিসের মধ্যে দ্বিমুখী সম্পর্ক রয়েছে। বিষণ্নতা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এবং ডায়াবেটিস থাকা ব্যক্তিদের বিষণ্নতায় ভোগার ঝুঁকিও বেশি থাকে।
ইমিউন সিস্টেম দুর্বলতা
সংক্রমণ: বিষণ্নতা ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে দিতে পারে, ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
দীর্ঘমেয়াদি রোগ: ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হলে দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যেমন ক্রনিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ।
পাচনতন্ত্রের সমস্যা
ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম: বিষণ্নতা এবং উদ্বেগ পাচনতন্ত্রের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম।
আলসার: দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্নতা এবং মানসিক চাপ পাকস্থলীতে আলসার সৃষ্টি করতে পারে।
বাতের রোগ
আর্থ্রাইটিস: বিষণ্নতা এবং মানসিক চাপের ফলে জয়েন্টের প্রদাহ এবং ব্যথার ঝুঁকি বেড়ে যায়- যা আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ হতে পারে।
হাড়ের সমস্যা
অস্টিওপোরোসিস: বিষণ্নতা হাড়ের ঘনত্ব কমাতে পারে, ফলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে।
শারীরিক ব্যথা:
বিষণ্ন্নতা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার কারণ হতে পারে, যেমন মাথাব্যথা, মাইগ্রেন, পিঠের ব্যথা ইত্যাদি।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা : বিষণ্নতা এবং উদ্বেগ শ্বাসকষ্টের সমস্যা যেমন অ্যাজমার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ওজন সম্পর্কিত সমস্যা
স্থূলতা: বিষণ্নতা খাদ্যাভ্যাসে প্রভাব ফেলতে পারে- যার ফলে, ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে।
ওজন কমে যাওয়া: কিছু ক্ষেত্রে বিষণ্নতা খাদ্যে অরুচির কারণ হতে পারে, ফলে ওজন কমে যেতে পারে।
অনিদ্রা:বিষণ্ন্নতা ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে, ইনসমনিয়া বা অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে। এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
স্মৃতিভ্রংশ
বিষণ্নতা স্মৃতিভ্রংশ এবং অ্যালঝাইমার রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অ্যালকোহল এবং মাদকাসক্তি
বিষণ্নতা অনেক সময় ব্যক্তিকে অ্যালকোহল এবং মাদকের প্রতি আসক্ত করতে পারে, যা স্বাস্থ্যের ওপর আরও ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে।
বিষণ্নতা নিয়ন্ত্রণে করণীয়
বিষণ্নতা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল ব্যবহার করা যেতে পারে:
মনরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য গ্রহণ:
থেরাপি: মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারদের কাছ থেকে সাইকোথেরাপি বা কাউন্সেলিং গ্রহণ করুন, যেমন কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি বা ইন্টারপার্সোনাল থেরাপি।
ওষুধ: প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন
নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম মস্তিষ্কে সেরোটোনিন ও এন্ডোরফিনের মাত্রা বাড়ায়, যা মন ভালো রাখে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং শর্করা ও চিনি কম খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ও নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
স্ট্রেস ব্যবস্থাপনা
যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন: যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন মানসিক চাপ কমাতে এবং মানসিক সুস্থতা বাড়াতে সহায়ক।
বিশ্রাম ও শিথিলকরণ: বিশ্রাম ও শিথিলকরণ কৌশল ব্যবহার করতে হবে, যেমন ডিপ ব্রিদিং বা পেশি শিথিলকরণ।
সামাজিক সমর্থন
পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন: আপনার অনুভূতি এবং চিন্তাভাবনা শেয়ার করুন। প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান।
সাপোর্ট গ্রম্নপে যোগদান: বিষণ্নতার জন্য সাপোর্ট গ্রম্নপে যোগদান করুন। একই ধরনের অভিজ্ঞতার মানুষের সঙ্গে কথা বলুন।
ব্যক্তিগত যত্ন
নিজের যত্ন নিন: নিজের জন্য সময় নিন এবং আপনার পছন্দের কাজগুলো করুন। এটি হোক হবি, বই পড়া, বা সৃজনশীল কিছু।
স্ব-সমালোচনা কমান: নিজেকে কম সমালোচনা করুন এবং নিজের প্রতি সদয় হন।
নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
বিষণ্নতার লক্ষণগুলি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
কর্মক্ষেত্রে পরিবর্তন
কাজের সময় ও ব্যক্তিগত সময়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে প্রয়োজনে সহকর্মীদের সহযোগিতা নিয়ে কাজের চাপ কমানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে। বিষণ্নতা একজন ব্যক্তির জীবনের বিভিন্ন দিককে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে, সময়মতো চিকিৎসা ও সমর্থন না পেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। চিকিৎসা ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শকের সাহায্য নিয়ে বিষণ্নতার নেতিবাচক প্রভাব কমানো সম্ভব।
ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, নীলফামারী সদর, নীলফামারী।
(চিকিৎসক, কবি, ছড়াকার, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক )