সরকার নির্ভরতা নয়, ডেঙ্গু প্রতিরোধে হাইজিনের প্রতি বিশেষ জনসচেতনতা প্রয়োজন

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০

ডা. সামিনা আরিফ
ছোট একটি ছিদ্র ডুবিয়ে দিতে পারে একটি জাহাজ, তেমনি প্রায় ৫ মিলি সাইজের ডেঙ্গু মশা কেড়ে নিতে পারে একটি জীবন। ডেঙ্গু জ্বর যাদের হয়েছে তারাই একমাত্র জানেন এই মশার লক্ষণের ভয়াবহতার রূপ। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছিল ছোট ডেঙ্গু মশার কাছে আমি এতটাই অসহায় ছিলাম যে, কিছুই করার ছিল না। সেই সঙ্গে অনেক রোগীর কমতে থাকে রক্তের পস্নাটিলেট। শুধু রোগীই নয়, সেই সঙ্গে পরিবার পরিজনরা প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্কিত থাকে। কারণ, রোগী থাকেন জীবন মৃতু্যর সন্ধিক্ষণে। শিশু, অতি বয়স্ক, হৃদরোগী, কিডনি রোগে আক্রান্ত এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ডেঙ্গুর জটিলতার ঝুঁকি বেশি দেখা যায়। সরকারের পক্ষে পুরো বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব না। এজন্য এগিয়ে আসতে হবে নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের। আমার মতামত জনপ্রতিনিধিরা যদি নিজ নিজ এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করে হাইজিন বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজ করেন তাহলেই একমাত্র ডেঙ্গু মশা থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব। ডেঙ্গু মশা নিধনের প্রত্যাশায় না থেকে বরং ডেঙ্গু লার্ভা ধ্বংস করতে হবে। সামনে বর্ষা মৌসুম তাই নির্মাণাধীন ভবন, রাস্তাসহ ডোবানালাগুলো পানি শূন্য রাখতে হবে। ডেঙ্গু ভাইরাসবাহী এডিস মশা কামড়ালে স্থানটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিছুটা ফুলে যায় আর চুলকায়। তবে অনেক ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ফুলে যাওয়া আর চুলকানি নাও হতে পারে। এডিস মশা কামড়ালেই ডেঙ্গু জ্বর হবে তা ঠিক নয়। ডেঙ্গু ছোয়াচে রোগ নয়। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে স্পর্শ করলে, একই বিছানায় ঘুমালে কিংবা তার ব্যবহৃত কিছু ব্যবহার করলে, রোগীর সেবা করলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই। এই রোগ শুধু মশার মাধ্যমেই ছড়ায়। এডিস ভাইরাস বহনকারী মশা কামড়ালে ডেঙ্গু রোগ হয়। তবে মশা কামড়ানোর পর ভাইরাস যদি শুধু চামড়ার ওপরে লেগে থাকে তাহলে ওই স্থানটি ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান পানি দিয়ে ধুলে ভাইরাস মরে যায়। তবে রক্তের সঙ্গে ভাইরাস মিশে গেলে কোনো কিছুই করার থাকে না। আমরা জানি, ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত ৩ ধরনের হতে পারে ১। ডেঙ্গু ক্লাসিক্যাল ফিভার ২। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও ৩। ডেঙ্গু শক সিনড্রোম ফিভার। ১। ডেঙ্গু ক্লাসিক্যাল ফিভারের উপসর্গ দেখা দিলে সাধারণত সংক্রমণের ৩ থেকে ১৪ দিন পর শুরু হয়। উচ্চ জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশি-জয়েন্টে ব্যথা, ত্বকের একটি বৈশিষ্ট্যযুক্ত চুলকানি ও ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। ২। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারের উপসর্গগুলোর মাঝে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং শরীরে ফুসকুড়ি। দুই থেকে সাত দিনের মাঝে সাধারণত ডেঙ্গুরোগী আরোগ্য লাভ করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রক্তক্ষয়ী রূপ নিতে পারে- যাকে ডেঙ্গু রক্তক্ষয়ী জ্বর বা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলা হয়। ৩। ডেঙ্গু শক সিনড্রোম ফিভারের উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম উপসর্গ শরীরে ব্যথা সঙ্গে তীব্র মাথার যন্ত্রণা, মাংসপেশি এবং অস্থিসন্ধিতে (নড়হব) যন্ত্রণা, গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, চোখের পেছনে ব্যথা হতে পারে। সঙ্গে চামড়ায় লালচে দাগ থাকতে পারে। শিশুরা আক্রান্ত হয় বেশি এবং জটিলতাও বেশি দেখা যায়। শিশুদের ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগ তাই এ রোগে জ্বরের তাপমাত্রা ১০১ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। ডেঙ্গু হলেই যে তীব্র জ্বর হবে তা নয়। ২. শিশুর মধ্যে স্বাভাবিক চঞ্চলতা থাকবে না। শিশু নিস্তেজ হয়ে যায়। অযথা কান্নাকাটি করে। ৩. শিশুর মধ্যে প্রচন্ড ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। ৪. বমি বমি ভাব বা কিছু খেলেই বমি দেখা দেয়। ৫. ৬-৮ ঘণ্টার মধ্যে শিশুর প্রস্রাব না হওয়া ডেঙ্গুর মারাত্মক লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি। ৬. শারীরে লালচের্ যাশ দেখা ৭. মাথাব্যথা শরীরব্যথা পেটব্যথা হতে পারে। ৮. পাতলা পায়খানা বা পানি শূন্যতা হতে পারে। ৯. চোখ লাল হয়ে যায়। ১০. পরিস্থিতি গুরুতর হলে অর্থাৎ ডেঙ্গুর কারণে শিশুর শকে যাওয়ার অবস্থা হলে তার পেট ফুলে যেতে পারে বা শরীরে বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণও হতে পারে। যেমন- রক্তবমি বা পায়খানার সঙ্গে বমি হওয়া। শিশুদের ক্ষেত্রে দেরি না করে অতি সত্বর হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনোভাবেই সময়ক্ষেপণ করা যাবে না। বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গু হলে রোগীকে স্বাভাবিক সব ধরনের নরম খাবার খেতে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বাড়িতে ফল থেকে তৈরি করা জুস, সু্যপ, ডাবের পানি, ওরস্যালাইন বা অন্যান্য তরল খাবার প্রচুর পরিমাণে দেয়া যেতে পারে। এগুলো শরীরের পানি এবং ইলেক্টোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের কমলা, ডালিম, ডাবের পানি, পেপে পাতার জুস, হলুদ, মেথি, ব্রকলি, পালংশাক, কিউইফল ইত্যাদি খাবার খেতে পরামর্শ দিয়েছেন। যেসব খাবার ডেঙ্গু রোগীদের না দেয়া ভালো যেমন- ১. তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার ২. মসলাযুক্ত খাবার ৩. ক্যাফিনযুক্ত পানীয় ইত্যাদি। ২০২৩ সালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের ভয়াবহতা আমরা দেখেছিলাম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে ২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৩ বছরে ডেঙ্গুতে মৃতু্যবরণ করেন ৮৬৮ জন। ওই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪৮ জন। ২০২৩ সালেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতু্যবরণ করেন ১ হাজার ৭০৫ জন। ২৩ বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ মৃতু্যবরণ করেন। তারমধ্যে ২০২৩ সালেই প্রায় দ্বিগুণ মানুষের মৃতু্য হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ২০২৪ সালে ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহতা আরো বাড়তে পারে। এডিসের ঘনত্ব বেড়ে গেলে তখন ব্যবস্থা নিলে খুব বেশি কার্যকর হবে না। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু। এডিস মশার লার্ভা সাধারণত স্থায়ী ও পরিষ্কার পানিতে বেশি বিস্তার লাভ করে। এছাড়াও স্রোতহীন পানি যেমন-ঝোপঝাড়যুক্ত নালা, ভাঙা পাত্রে জমে থাকা পানি ডেঙ্গু মশার প্রজননস্থল ইত্যাদি। তাছাড়া জমে থাকা বৃষ্টির পানি, ফেলে দেওয়া পস্নাস্টিকের ব্যাগ, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, পস্নাস্টিকের বোতলসহ অনেক কিছুতেই বংশ বিস্তার করতে পারে। তবে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করতে এর উৎসস্থলে প্রাকৃতিক কিছু পদ্ধতিতে অনুসরণ করা যেতে পারে। পানিতে তেলের একটি পাতলা আবরণ দেওয়া হলে মশার লার্ভা দ্রম্নত মারা যায়। প্রাকৃতিক কিছু তেল যেমন- অভিল অয়েল (ঈঐ৩(ঈঐ২)৭ঈঐ=ঈঐ(ঈঐ২)৭ঈঙঙঐ), ভেজিটেবল অয়েল ও কেরোসিন তেল (ঈ১২ঐ১৫), অ্যাপেল সিডার, ভিনেগার (ঈঐ৩ঈঙঙঐ), সাবান, বিস্নচিং পাউডার ঈধ(ঙঈও)২সহ রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ্যই তা বিশেষজ্ঞদের সীমানা ও কার্যকরী উপাদানের পরিমাণ নির্ধারণক্রমে নিশ্চিত করতে হবে। সুস্থ থাকার জন্য আমাদের হাইজিনের প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুনই মেনে চলা উচিত। হাইজিনের অব্যবস্থাপনায় দিনে দিনে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। প্রথমত ব্যক্তিগত হাইজিনের ওপর আমাদের খুব সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত। সেই সঙ্গে পরিবেশগত স্বাস্থ্যবিধির ওপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো ক্রমেই পরিবেশ যেন দূষিত না হয় এবং রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে না পড়ে। নানারকমের দূষণ প্রতিরোধ, মশা ও বিষাক্ত পোকামাকড় নিধন, রোগ ছড়াতে না দেওয়া, নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলা, গাছ না কাটা, গাছ লাগানো, ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি সবই পরিবেশগত স্বাস্থ্যবিধির মাঝে পড়ে। পরিবেশগত হাইজিন মেনে না চললে সমষ্টিগতভাবে আমরা অসুস্থ হয়ে যেতে পারি, আমাদের জীবনধারণের জন্য আশপাশের পরিবেশ অনুপোযগী হয়ে পড়তে পারে। এছাড়া পারিবারিক/সমষ্টিগত স্বাস্থ্যবিধি বা আমরা যে বাসায় বসবাস করি তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, উপযুক্ত আলো বাতাস আসছে কিনা তা নিশ্চিত করা, খাবার তৈরির সময় সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে কিনা ইত্য্যাদি পারিবারিক স্বাস্থ্যবিধির ভেতরে পড়ে। আমরা সামাজিক প্রাণী হিসেবে আমাদের কিছু সামাজিক স্বাস্থ্যবিধি রয়েছে। অনেকগুলোই পরিবেশগত স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে মিলে গেলেও কিছু আছে যা আলাদা। যেমন: চিকিৎসা সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, হাইজিন (এসডিজি-৬)তে আমরা যথেষ্ট পিছিয়ে আছি। আমাদের মধ্যে অধিৎবহবংং-এর খুব অভাব থাকায় স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিগুলোতে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সেই সঙ্গে পাড়া, মহলস্নার শিক্ষিত জনগোষ্ঠীসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাইজিন, বায়ুদূষণ, পানিদূষণ নিয়ে কাজ করা উচিত। বর্তমানে তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত এবং আদ্রর্তা হঠাৎ করেই পরিবর্তিত হয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত অনেকাংশে দায়ী। ডেঙ্গু মোকাবিলায় চবৎংড়হধষ যুমরবহব, ঊহারৎড়হসবহঃধষ যুমরবহব এবং ঈড়সসঁহরঃু যুমরবহব-এর বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষ প্রশিক্ষণসহ কর্মসূচি প্রদানের নির্দেশ দিতে হবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে মহামারি করোনা অতি বিচক্ষণতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন।। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী মহোদয় ডেঙ্গু নিয়ে জনগনকে বিভিন্ন ভাবে সর্তক বার্তা দিয়ে চলেছেন। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষভাবে অবদান রাখছেন। তেমনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে হাইজিন বিষয়ে কাজ করলে অবশ্যই আমরা ডেঙ্গু ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাব। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও নির্বাচিত জন প্রতিনিধিসহ শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক সেমিনার, ক্যাম্প বা লিফলেট বিতরণ করতে হবে। এছাড়া হাইজিন বিষয়ে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিগুলো প্রচারণাসহ প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখতে হবে। যেমন: ১. খেলার মাঠ ও ভবনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ২. মাঠ বা ভবনে জমে থাকা পানি দ্রম্নত সরিয়ে ফেলতে হবে। ৩. সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য যে সব ফুলের টব রাখা হয়েছে সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। ৪. এডিস মশার প্রজনন স্থলে যাতে পানি জমতে না পারে তা নিশ্চিত করতে পারে। ৫. সংক্রশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকরা ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ে প্রত্যহ শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেবেন। ৬. রুটিন মাফিক কার্যকরী কীটনাশক স্কুল, কলেজ, পাড়া, মহলস্নাসহ উদ্যানে ছিটানোর উদ্যোগ নিতে হবে। ৭. জেলা উপজেলা থেকে শুরু করে শহর এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুর জন্য আলাদা বেডের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৮. পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধের ব্যবস্থা করতে হবে। ৯. ডাক্তার ও নার্সদের ডেঙ্গুর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ১০. স্বল্পমূল্যে বা বিনামূল্যে ডেঙ্গু টেস্টের ব্যবস্থা করতে হবে। ১১. বাসার আঙিনাসহ চারিপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ১২. ডেঙ্গু আক্রান্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ পরীক্ষা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা। ১৩. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটসহ জনবল প্রয়োজন। ১৪. কার্যকর কীটনাশক আমদানির উদ্যোগ নিতে হবে। ১৫. জনসচেতনতা ও জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানো প্রয়োজন। ১৬. বিত্তবানদের মশারি বিতরণের জন্য আহ্বান করতে হবে। ১৭. ডোবা, নালা, গর্ত থাকলে স্থানীয় কমিশনার দ্বারা ভরাট করাতে হবে। ১৮. অধিৎবহবংং বাড়ানোর জন্য ব্যানার, লিফলেট এগুলো বিলি করতে হবে। ১৯. পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্মকৌশল প্রণয়ন করা। ২০. সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয়দের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ করে রাস্তাসহ পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও হাইজিনের বিষয়ে সর্বোচ্চ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে। আমার ব্যক্তিগত মতামত স্বাস্থ্য শিক্ষার উন্নয়ন প্রচারণার ওপর অনেক নির্ভর করি, তাই আমাদের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যেতে হবে। এই ক্ষেত্রে সব শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তাই, আমরা প্রচারণায় কিছু মাধ্যম ব্যবহার করতে পারি যেমন ১. শ্রবণযোগ্য বেতার মাইক ইত্যাদি। ২. দর্শনযোগ্য প্রজেক্টর বোর্ড ইত্যাদি। ৩. দর্শন ও শ্রবণ উভয়ই ইত্যাদি। ৪. চলচ্চিত্র, নাটিকা, কার্টুন ইত্যাদি। ৫. পরস্পর ক্রিয়াশীল। ৬. ইন্টারনেট, প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি। এছাড়াও লেকচার, ডেমোনেস্ট্রেশন, দলবদ্ধ আলোচনা, প্যানেল আলোচনা, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। ইদানীং খুবই ইতিবাচক একটি প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তা হলো কথা ও সুরে অর্থাৎ গানের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটি পরিবেশ প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, উন্নত পরিবেশ গড়ার জন্য একটি সুন্দর মনের প্রয়োজন। আসুন আমরা সবাই মিলে একটি সুস্থ ও সুন্দর ডেঙ্গুমুক্ত পরিবেশ গড়ি। বি ফার্ম (অনার্স), এম ফার্ম, এমবিএ, ডিএইচএমএস। অধ্যক্ষ-কাম-অধীক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ও সহযোগী অধ্যাপক; ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। মোবা: ০১৭৫২-৫৭২২১৩