ঋতু পরিবতের্নর সময় অনেকের ‘জ্বর জ্বর’ লাগে। ঋতু পরিবতর্ন ছাড়াও এমন লাগতে পারে। শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ, যে কারোই এমন বোধ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অনেকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে বলেন, ‘আমার জ্বর জ্বর ভাব হয়; কিন্তু থামোির্মটারে শরীরের তাপমাত্রা বেশি পাওয়া যায় না’।
এসব ক্ষেত্রে সাধারণত জ্বর জ্বর বোধ হয়, গা ম্যাজম্যাজ করে ও শরীরে অস্বস্তি লাগে। এ অবস্থাকে বলে লো গ্রেড ফিভার বা নিম্নমাত্রার জ্বর।
এরকম জ্বর নিয়ে খুব একটা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আবার এই জ্বরকে একেবারে উপেক্ষা করাও ঠিক নয়। এমন সমস্যা হলে কী করা উচিত সে বিষয়ে কিছু কাযর্করী উপায়:
তাপমাত্রা রেকডর্ রাখুন
সত্যি সত্যি জ্বর আসে কি-না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রথমে নিয়মিত দিনে চার থেকে পঁাচবার টানা পঁাচ থেকে সাত দিন ভালো থামোির্মটারে জ্বর মাপা উচিত। যদি তাপমাত্রার তালিকায় দিনে বা রাতে জ্বর উঠতে দেখা যায়, তবে সতকর্ হওয়া উচিত।
বুঝতে হবে জ্বরের ধরন
অনেক সময় উষ্ণ আবহাওয়া, ভারি পোশাক পরা, পানিশূন্যতা বা অনেকক্ষণ রোদে হাঁটাচলার কারণে হতে পারে। শিশুদের দঁাত ওঠার সময়ও এমন জ্বর ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এটি যক্ষ্মা, থাইরয়েডের সমস্যা, পেটের নানা জটিলতা, ডায়াবেটিস বা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগেরও উপসগর্ হতে পারে। কখনো সন্ধি বা মাংসপেশির কিছু প্রদাহ, প্রস্রাবে বা কান-গলা-দঁাতের সংক্রমণে এ রকম জ্বর আসতে পারে। তাই এ ধরনের জ্বরের কারণ খুঁজতে অন্যান্য উপসগর্ অনুসন্ধান করতে হবে।
উপসগর্ কী বলে
নিম্নমাত্রার জ্বরে অনেকরকম উপসগর্ দেখা দিতে পারে। যেমন: খাবারে রুচি কমে যাওয়া, দীঘের্ময়াদি সদির্-কাশি, শ্বাসকষ্ট, কান ও গলা ব্যথা, বমি ভাব ও পেটব্যথা, ওজন হ্রাস, অস্থিসন্ধি ও পেশিতে ব্যথা, পেটে হজমের গোলমাল ইত্যাদি।
বিশ্রামেই মুক্তি
জ্বরের সঙ্গে অন্য কোনো উপসগর্ বিশেষ করে অরুচি, ওজন হ্রাস ইত্যাদি না থাকলে আতঙ্কিত না হয়ে যথেষ্ট বিশ্রাম নিন।
প্রচুর পানি খান
পযার্প্ত পানি পান করুন এবং প্রচুর শাক-সবজি, ফলের রস, প্রচুর তরলসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার পরিমিতহারে গ্রহণ করুন। আলাদা করে মাথায় রাখুন পেঁপে, কমলালেবু, কলা ও আনারসের কথা। এ সময় প্রচুর তরল খেতে হবে, সেটা ফলের রস হলে বেশি ভালো।
জ্বর দীঘর্স্থায়ী হলে
এমন জ্বর জ্বর ভাব দীঘর্স্থায়ী হলে এবং অন্যান্য উপসগর্ থাকলে সঠিক রোগ নিণর্য় ও চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তবে কোনোভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক ও জ্বরনাশক ওষুধ খাবেন না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামশর্ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নিণর্য় করে যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে।