মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১
গল্প

পূজায় নতুন জামা

পুজোর পর সোনালী আর রামুর বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হলো। তারা একে অপরে প্রতিজ্ঞা করল, যতদিন বেঁচে থাকবে, সব সময় এক সঙ্গে উৎসব পালন করবে এবং যে কোনো কষ্টে একে অপরকে সাহায্য করবে
বিচিত্র কুমার
  ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
পূজায় নতুন জামা

একবারের কথা, একটি ছোট গ্রামে ছিল সোনালী নামে একটি মেয়ে। সে খুবই আনন্দিত ছিল। কারণ পুজোর সময় এসে গেছে। তার মা নতুন জামা বানিয়েছেন আর সোনালী পুজোর সকালে সেই জামাটি পরিধান করার জন্য অপেক্ষা করছিল।

পুজোর সকালে সোনালী তার নতুন জামা পরে আয়নায় নিজেকে দেখে বলল, 'ও মা, আমি তো রাজকন্যার মতো লাগছি!' তার মা হাসলেন এবং বললেন, 'ঠিক বলেছিস, কিন্তু মনে রেখ, রাজকন্যার মতো আচরণও করতে হয়!'

পুজোর দিন সোনালী সবাইকে নতুন জামা দেখাতে বের হলো। গ্রামের বাকি শিশুরাও নতুন জামা পরিধান করে পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছিল। সোনালী সবদিকে তাকিয়ে হঠাৎ দেখতে পেল, এক শিশু, রামু, তার পুরনো জামা পরেছে।

সোনালী রামুকে দেখে একটু চিন্তিত হলো। সে বলল, 'তুমি নতুন জামা কেন পরলে না, রামু?'

রামু বলল, 'আমার বাবা অনেক কাজ করেন, নতুন জামা কেনার সময় তাদের নেই।' সোনালী কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলল, 'আমি জানি! আমরা সবাই মিলে রামুর জন্য নতুন জামা কিনতে পারি।'

সোনালী ও তার বন্ধুরা মিলে রামুর জন্য নতুন জামা কিনতে বের হলো। তারা গ্রামের দোকানে গিয়ে সবার সহায়তায় সুন্দর একটি জামা কিনল।

পুজোর অনুষ্ঠানে রামুকে নতুন জামা পরে এসে আনন্দিত হতে দেখে সোনালী খুব খুশি হলো। সে বলল, 'দেখ, নতুন জামা পরলে কেমন লাগছে?' রামু হাসিমুখে বলল, 'এখন আমি যেন সত্যি রাজকুমার!'

সেদিন সোনালী বুঝতে পারল, নতুন জামা পরিধান করা থেকে বড় হলো অন্যদের সুখে সুখী করা। সারাদিন ধরে তারা এক সঙ্গে আনন্দ করে নেচে-গেয়ে পুজোর উৎসব উদযাপন করল।

পুজোর পর সোনালী আর রামুর বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হলো। তারা একে অপরকে প্রতিজ্ঞা করল, যতদিন বেঁচে থাকবে, সব সময় এক সঙ্গে উৎসব পালন করবে এবং যে কোনো কষ্টে একে অপরকে সাহায্য করবে।

এইভাবে সোনালী এবং তার বন্ধুরা শিখল, আনন্দের আসল অর্থ হলো ভাগাভাগি করা এবং সত্যিকারের উৎসব হচ্ছে একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয়ে আনন্দ করা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে