শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
গল্প

পূজার খুশি

বাতাসে ভেসে বেড়ায় শিউলী ফুলের মিষ্টি সুবাস, অজানা পুলকে শিহরিত হয় মন প্রাণ! বাতাসে কান পাতলেই যেন শোনা যায় ঢাক কুঁড় কুঁড় ধ্বনি! শুভ্র সতেজ শরৎ প্রকৃতি যেন দিয়ে যায় দুর্গা মায়ের আগমনী বার্তা!
শ্যামল বণিক অঞ্জন
  ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
পূজার খুশি

দূর্বাঘাসে শিশির বিন্দু সকালের নরম রোদে ঝিকমিক করে! সারা দিন কেমন যেন ভ্যাপসা গরম, রৌদ্র মেঘের লুকোচুরি খেলা, থেকে থেকে বৃষ্টি, পাকা তালের ঘ্রাণে ম-ম করে চারদিক! বাতাসে ভেসে বেড়ায় শিউলী ফুলের মিষ্টি সুবাস, অজানা পুলকে শিহরিত হয় মন প্রাণ! বাতাসে কান পাতলেই যেন শোনা যায় ঢাক কুঁড় কুঁড় ধ্বনি! শুভ্র সতেজ শরৎ প্রকৃতি যেন দিয়ে যায় দুর্গা মায়ের আগমনী বার্তা!

শরৎ এলেই সুজয়ের মনটাও কেমন যেন ছটফট করে! সারাক্ষণ মনজুড়ে কেবল ভাবনা একটাই কখন আসবে পূজার দিন! নতুন জামা জুতা কেনার ধুম! খাওয়া দাওয়া ঘুরাঘুরি! ঢাকের আওয়ার প্রাণ ভরে ধূপের ধোঁয়ার ঘ্রাণ অনুভব করা, আরতি প্রতিযোতায় অংশ নেওয়া, পূজার দিনগুলোতে মন্ডপে মন্ডপে সবার সঙ্গে ঘুরে প্রতিমা দেখার মজাটাই যে অন্য রকম এক আনন্দ!

গত বছর মহলস্নার পূজায় আরতি প্রতিযোতায় সুজয় প্রথম স্থান অর্জন করেছিল! সেই ক্রেস্টটা বের করে সুজয় মাঝে মাঝেই দেখে আর মনের অজান্তেই যেন হারিয়ে যায় স্মৃতির অভয়ারণ্যে! মা মাঝে মাঝে কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলেন, এক জিনিস বারেবারে দেখার মধ্যে বিশেষ কি আছে? সুজয় বলে, আমার কেন জানি এটা দেখতে খুব ভালো লাগে মা! কত জন প্রতিযোগীই না ছিল সেই প্রতিযোগিতায়! আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড় ছেলে মেয়েরাও তো ছিল! সবার মধ্য থেকে আমার প্রথম হওয়াটা কি কম কথা, বলতো মা? মা মৃদু হেসে বলেন, তাও তো ঠিক! বাবা এসে বলেন, দেখতে হবে তো ছেলেটা কার? ওর বাবাও তো জীবনে কোনো দিন কোনো কাজে ব্যর্থ হয়নি! মা বললেন, হয়েছে হয়েছে- বুঝেছি এবার থাম! এমন সময় সুজয়ের মায়ের ফোনে একটা ফোন এলো রিসিভ করে বলল, হ্যালো ঠাকুরজি! কেমন আছ? মা সুজয়কে ডেকে বললেন, সুজয়! এই সুজয়! এই নাও

কে? মা: পিশিমনি।

হ্যালো পিশিমনি! পূজায় আসবে না?

পিশুকে নিয়ে চলে এসো! আর শোন এবার পূজায় আমাকে খুব সুন্দর দেখে একটা বেস্নজার কিনে দেবে কিন্তু!

পিশিমনির অন্তপ্রাণ হলো সুজয়! যাকে কিনা এই ছোট পিশিমনি সব থেকে বেশি আদর স্নেহ করেন, সব আবদার হাসি মুখে মিটান।

প্রায় ছাব্বিশ সাতাশ মিনিটের মতো মোবাইলে কথা হলো পিশিমনির সঙ্গে। কখনো সুখের কথা, কখনো ছোট্ট মনের লুকায়িত কিছু বেদনার কথা চাওয়া পাওয়ার কথা বলে ফোন রেখে কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে চলে গেল সুজয়! আর মাত্র কয়েকটা দিন পরেই দুর্গা পূজা, কিন্তু এরই মধ্যে ছোট্ট সুজয়ের মনেপ্রাণে ওর ভুবনজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে পূজার আমেজ, পূজার খুশি, পূজাকে কেন্দ্র করে নানারকম পরিকল্পনায় যেন মহাব্যস্ততার মধ্যে কাটছে সুজয়ের দিন রাত!

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে