বাংলা বর্ষপঞ্জিকা অনুযায়ী আশ্বিন মাস বছরের ষষ্ঠতম মাস। এ মাস এলেই শুভ্রতার ছোঁয়ায় প্রকৃতি যেন নতুন রূপে সাজে। আকাশে সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। কোমল স্নিগ্ধ হওয়ার পরশে তীরে তীরে কাশফুল দোল খায়। এ মাস এলে সবচেয়ে বেশি মোহনীয় রূপ নিয়ে আসে প্রতিটা প্রভাত। ঠান্ডা কোমল ঊষার আলো, সবুজ ঘাসের ডগায় হালকা শিশির বিন্দু আর ঝরা শিউলি ফুলের অনুপম সৌন্দর্য আশ্বিন মাসের রূপে অলংকার জড়ায়। এই মাস শরৎ ঋতুর একটি মাস। শরতের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে কবি লেখকরা লিখে গেছেন যুগ যুগ ধরে। শরৎ বন্দনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন- 'এসো শারদ প্রাতের পথিক এসো শিউলি বিছানো পথে, এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে এসো অরুণ-কিরণ-রথে'। এই ঋতুতে ফুলে ফুলে সেজে উঠে প্রকৃতি- জুঁই, কেয়া, জবা, মালতী, শাপলা-শালুক, পদ্ম, বেলি, দোলনচাঁপা, নয়ন তারা আরো নানান ফুলের বাহারে হেসে উঠে চারপাশ। আশ্বিনের রাতে বসে জোসনার হাট, মেঘমুক্ত আকাশ থেকে চাঁদ মামা শুভ্র জ্যোৎস্না ছড়ায়। দেখে মনে হয় নীলের ভুবন থেকে সাদা পরী হাত বাড়ায়। রাত্রি যতই গভীর হয় শিরশির বাতাসে ছাতিম ফুল আর গন্ধ মালতীর সুবাস ভাসে। ছাতিম ফুল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় ফুল। এই ছাতিম গাছ সম্পর্কে কবি লিখেছেন, 'ওই যে ছাতিম গাছের মতোই আছি, সহজ প্রাণের আবেগ নিয়ে মাটির কাছাকাছি.....'। আশ্বিন মাস যেতে যেতে শীতের পরশ বুলিয়ে যায় প্রাণে। এই মাসেই সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তাই উৎসবের আমেজ নিয়ে বিদায় নেয় আশ্বিন মাস।