একদিন গ্রামের পাড়া-মহলস্নার সবাই শুনল, মামা নতুন জামা বানিয়েছেন। কিন্তু এ জামা কোনো সাধারণ জামা নয়, এটা বাঘের জামা! গ্রামের সবাই বিস্মিত হয়ে গেল, 'মামার গায়ে বাঘের জামা কেমন হয়?'
মামা বললেন, 'এ জামার মধ্যে ঢুকলে আমি যেমন বাঘের মতো ভয়ানক, তেমনি কোনো কিছুকে ভয় পেতে হয় না!'
গ্রামের ছোট্ট ছেলে রবিন, জামাটা দেখতে গেল। জামাটা ছিল রং-বেরঙের উজ্জ্বল সুতোর কাজ করা- যার মধ্যে ছিল বড় বড় বাঘের দাঁত আর কাঁটা। রবিন যখন জামাটা দেখল, সে হাসতে হাসতে বলল, 'মামা, আপনার জামা তো বাঘের মতো ভীষণ মজার!'
মামা জামাটা পরে গ্রামের মাঠে গেলেন। সেখানে কিছু ছেলেমেয়েরা খেলছিল। মামার বাঘের জামা দেখে তারা একে অপরকে বলল, 'ওই দেখো, মামা বাঘ হয়ে গেছে!'
মামা জামার মধ্যে ঢুকে সবাইকে দেখানোর জন্য কেঁপে কেঁপে হাঁটছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে জামার সেলাই খুলে গেল আর জামাটা সরে গিয়ে পড়ে গেল। গ্রামের লোকরা চিৎকার করতে করতে বলল, 'আহা, মামা তো আসলে একজন!'
তবে মামা খুব তাড়াতাড়ি জামা পরলেন আবার এবং হাসতে হাসতে বললেন, 'আমার জামার মধ্যে ঢুকলে আমি বাঘ হই, কিন্তু জামা ছাড়া আমি তো শুধু মামা!'
সবাই হাসির মধ্যে বলল, 'তাহলে মামা, আমরা জানি, তুমি বাঘের জামা পরলেই বাঘ, কিন্তু যখন তুমি জামা ছাড়, তখন তুমি আমাদের প্রিয় মামা!'
মামা সব সময় বলতেন, 'একটা জামা আসলে কেবল জামা, কিন্তু আমাদের হাসি আর খুশি কখনোই জামার মধ্যে আটকা পড়ে না।'
এভাবে মামার বাঘের জামা গ্রামের সবাইকে আনন্দ দিল, আর সবাই হাসি-আনন্দে দিন কাটাল।