বানভাসি
মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ
ভাবছে এবার বানভাসি
বান যে হলো সর্বনাশী
মানুষ পশু রাশি রাশি
থাকছে কতই উপবাসী
দেদার প্রাণের কাড়ল হাসি
দুঃখে কাঁদে বঙ্গবাসী
\হফি বছরের রীতি,
বানের জলে দিচ্ছে নাড়া
এমন দুঃখ সইবে কারা?
স্বজনকুটুম নইতো হারা
বিশ্ব বিবেক দিবেই সাড়া
অর্থবিত্তে সুখে যারা
ভাঙ্গবে বিধির এমন কারা
দিবেই বানের ইতি।
\হনদী খনন
মুহাম্মদ রফিক ইসলাম
নদীমাতৃক দেশটি আমার
জালের মতো আঁকা,
তবু কেন বন্যা-পস্নাবন
যায় না ধরে রাখা?
নদীর বুকে পলি জমে
ভরাট হয়ে গেলে,
একটুখানি বর্ষাজলে
পস্নাবন সুযোগ পেলে।
উপচেপড়া পানির চাপে
মাঠ-ফসলের ক্ষতি,
গরু-ছাগল সব হারিয়ে
পায় না খুঁজে গতি।
শুকনো কালে নদী আবার
যেন বিরান ভূমি,
সাহারার ওই খাঁ খাঁ প্রান্তর
অনা-খরা চুমি।
সময় এখন সেই ভাবনার
খনন করি নদী,
বর্ষা-খরায় হতাশা নয়
সচেতন হই যদি!
মেঘের মেয়ে
মাহমুদা জিয়াসমিন
একটু দাঁড়াও মেঘের মেয়ে
শুনো আমার কথা
কেমন করে ঝরাও বলো
বৃষ্টি হয়ে ব্যথা?
কাঁদলে তুমি আকাশ হাসে
রঙিন হয়ে চুপ-
কাঁদলে আমরা কেনই থাকে
বিষণ্নতার রূপ?
আমায় বলো মেঘের মেয়ে
এমন কেন হয়?
কেমন করে করব আমরা
জীবন রঙিনময়!
এসো গড়ে তুলি
আহাদ আলী মোলস্না
আমরা মানুষ মানুষের পাশে
আপদে বিপদে দাঁড়াব,
যতটুকু পারি, সহযোগিতার
হাত সকলেই বাড়াব।
বান খরা ঝড় আসলে আসুক
শক্ত হাতে তা সরাব,
দুঃখীদের কাছে হাসি নিয়ে যাব
খুশি দিয়ে মন ভরাব।
ছোট বড় কি-বা গরিব-ধনীর
বিভেদের ভিত নড়াব
ভুলে জাত-পাত সমাজে আমরা
শুধু ভালোবাসা ছড়াব।
তোমার জন্য আমি আছি আর
আমার জন্য তুমি;
এসো গড়ে তুলি সোনাময় করে
প্রিয় এ মাতৃভূমি।
শরৎ শোভা
মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন
ঝিলের জলে শালুক শাপলার
পাগল করা হাসি,
আকাশ, বাতাস, জলে, স্থলে
শরৎরানীর স্মৃতি।
শিশির ভেজা শিউলি ফুল
দোলনচাঁপা ঝিঙে,
সবুজ ধানে ফড়িং নাচে
গরুর পিঠে ফিঙে।
ফসলের মাঠ সবুজ প্রাচীর
মাঝে কৃষাণ পাড়া,
কাশফুল ঘেরা নদীর আঁচল
পদ্ম ফুলে ভরা।
সোনা রোদে বৃষ্টি হাসে
খেঁকশিয়ালের বিয়ে,
স্বচ্ছ জলে নীল সাদা মেঘ
ঝিল মিলিয়ে ভাসে।
নবান্নের গান কিচ্ছা পালা
পায়েস পিঠাপুলি,
ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ভুলে
খুনশুটিতে মাতি।
ঋতুরানী
জিলস্নুর রহমান জিলস্নু
শরৎ এলো কাশবনে
ছবি আঁকি আনমনে।
কিচিরমিচির পাখির ডাক
পায়রা ডাকে বাকুম বাক।
রোদবৃষ্টি মেঘের খেলা
সকাল দুপুর সন্ধ্যাবেলা।
ছাতিম, শিউলি, কাশফুল
উপচেপড়ে নদীর কূল।
ভাদ্র আশ্বিন শরৎকাল
ধাপুর-ধুপর পড়ে তাল।
শরৎ বাংলার চেনা রূপ
ঋতুরানী অপরূপ।
গড়ব নতুন দেশ
আবদুল কাদির জীবন
মনের ভেতর থাকে যদি
শক্তি-সাহস, জয়
রুখতে পারে কে আমারে
কে দেখাবে ভয়।
আমরা তরুণ লড়াই করি
বীর সেজেছি বীর
বিজয়টাকে ছিনিয়ে আনি
তাক করেছি তীর।
নতুন করে দেশটা আমার
চাই সাজাতে চাই
আমরা তরুণ এক হয়েছি
ভয় বাধা আর নাই।
শপথ করি সবাই মিলে
গড়ব নতুন দেশ
সবাই পাবে নতুন করে
নতুন পরিবেশ।
বিদ্রোহী নজরুল
এস ডি সুব্রত
নজরুল মানে সাহসী বীর
বিদ্রোহের অগ্নিবীণা
জাতীয় কবি বিদ্রোহী নজরুল
শোষকের প্রতি ঘৃণা,
নজরুল মানে লড়াকু সৈনিক
সাম্যবাদের কান্ডারি
শোষিতের কবি বঞ্চিতের কবি
ন্যায়ের পক্ষে ঝান্ডাধারী,
নজরুল মানে বিদ্রোহী কবিতা
নিঃস্বের গল্প গান
সারাটি জীবন গেয়ে গেছেন
মানবতার জয়গান।
ছড়ায় থাকুক
সাকী মাহবুব
ছড়ায় থাকুক দোয়েল পাখি
ছড়ায় থাকুক ফিঙে
ছড়ায় থাকুক কলমিলতা
ছড়ায় থাকুক ঝিঙে।
ছড়ায় থাকুক শীত-বর্ষা
ছড়ায় থাকুক গরম
ছড়ায় থাকুক হাসি-কান্না
ছড়ায় থাকুক শরম।
ছড়ায় থাকুক ভালোবাসা
ছড়ায় থাকুক আদর
ছড়ায় থাকুক জ্যৈষ্ঠ আষাঢ়
ছড়ায় থাকুক ভাদর।
ছড়ায় থাকুক নদী-নালা
ছড়ায় থাকুক বিল
ছড়ায় থাকুক হাওড়-বাওড়
ছড়ায় থাকুক ঝিল।