গল্প
বানভাসিদের পাশে
প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
মো. আব্দুর রহমান
আজও রীতিমতো ক্লাস চলছে। রাফিরা সবাই মনোযোগ সহকারে স্যারের কথা শুনছে। স্যার একপর্যায়ে বললেন, 'সোনা মনিরা তোমরা কী দেশের বন্যার পরিস্থিতি সম্পর্কে জান?' ওরা সবাই চুপ করে রইল। আসলেও ওরা তেমনটা জানে না। জানার কথাও নয়। কারণ ওরা কখনো বন্যা দেখেনি। ওদের এখানে বন্যা হয়নি। তারপরও আমতা আমতা সুরে রাফি বলল, 'স্যার! শুনেছি দেশে কিছু কিছু এলাকায় অনেক পানি হয়েছে।'
তারপর স্যার একে একে মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথাগুলো শোনালেন। তুলে ধরলেন বাড়ি ছেড়ে গাছের আগায় আর বিভিন্ন ছাদে- চালে মানুষের আশ্রয় নেওয়ার মতো ভয়ংকর দৃশ্যপট! বাড়ি ভাঙন, গবাদি পশুসহ সর্বস্ব হারানো দিশেহারা মানুষের দুর্দশার কথা! আরও শুনালেন খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং বস্ত্র সংকটের কথা। সর্বশেষে বললেন, 'এই মুহূর্তে আমাদের সবাইকে তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।'
এভাবেই ক্লাশ শেষের ঘণ্টা পড়ল এবং স্যার চলে গেলেন। স্যারের কথায় বন্যার্তদের জন্য ওদের মনটায় খুব মায়া অনুভব হলো। তাইতো ওরাও তাদের জন্য কিছু একটা করতে চায়। কিন্তু, কীভাবে সম্ভব? ওরাতো ছোট মানুষ। আর সেখানে যাবেইবা কীভাবে?
ঠিক কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখতে পেল, ওদের স্কুলের বড় ভাইয়ারা টাকা তুলছে। যার যা সামর্থ্য আছে সেই অনুযায়ী দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং সেগুলো দ্রম্নত বন্যার্তদের এলাকায় পাঠানো হবে। এইবার ওরাও আর দেরি করল না। সেদিনের সবার টিফিনের টাকাগুলো দ্রম্নত এক জায়গায় করে বড় ভাইদের হাতে তুলে দিল। সবার সঙ্গে ওরাও সহযোগিতায় শামিল হলো।
এরপর সবাই আলোচনার মাধ্যমে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল। না! এতটুকুতে বসে থাকলে মোটেই চলবে না। যেভাবেই হোক বাসায় গিয়ে অবশ্যই বাবা-মা'কে এবং পাড়ার লোকজনকে সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করতে হবে। আর সেটা আজই। যেমন ভাবা তেমন কাজ। তাই তো স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে, ওরা সবাই বানভাসিদের পাশে দাঁড়ানোর কাজ শুরু করে দিল।