পাখিদের আজকের আলোচনা সভায়, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ ঘুরে, বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা, পান্ডিত্ব অর্জনকারী একটি ময়না পাখি ছিল, সেই পাখিটাই ওই আলোচনা সভার সভাপতি। বিভিন্ন ধরনের পাখিদের বক্তব্যে, নানান রকমের সমস্যার কথা ওঠে আসে। সমস্যাগুলো শুনে সাধ্য মতো সেই সমস্যার সমাধান দেয়াই ছিল সভাপতির মূল কাজ।
আলোচনা শেষে সভাপতি মহাশয় তার সমাপনী বক্তব্যে বলেছিলেন, 'বন্ধুগণ, আমাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রজাতির পাখি, আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এর প্রধান কারণ, আমাদের প্রতি মানুষের সহানুভূতির ভীষণ অভাব, কমে গেছে ভালোবাসা। লাগানোর থেকে অনেক বেশি গাছপালা কেটে আমাদের আশ্রয়হীন করে দেয়ার মতো নানান রকমের বিরূপ আচরণে, বর্তমানে খুবই খারাপ পরিবেশে আমরা বসবাস করছি। আমাদের জীবন প্রতিটি মুহূর্তেই হুমকির মুখে, এভাবে বেঁচে থাকাটা সত্যিই কষ্টকর। শীতের সময় আমাদের অতিথি পাখিরা এখানে এসে নানান রকমের দুর্ভোগে শিকার হয়, কখনো কখনো প্রাণ পর্যন্ত হারাতে হয়, দুর্ধর্ষ পাখি শিকারিদের আক্রমণে। তাই এখন আর ওরা নিরাপত্তার অভাবে আসতে চায় না। দিন-দিন কমে যাচ্ছে অতিথি পাখিদের এই দেশ ভ্রমণের সম্ভাবনা।
এটা শুধু আমাদের জন্যই নয়, এ দেশের মানুষের জন্যও ভীষণ লজ্জার। সে যাইহোক, মানুষকে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া কিংবা শেখানো, কোনোটাই আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে পড়ে না, তাই আমরা আর মিষ্টি সুরে গাইব না গান, ভোরে ও সন্ধ্যায় আমাদের কলরবে মুখরিত হবে না বাঁশ বাগান, বিকালের খোলা আকাশের দেখা যাবে না আগের মতোন, নৈপুণ্য প্রদর্শনকারী পাখিদের ভেলা।
ধরে নাও, আমাদের প্রতি মানুষের অবিচারের বিরুদ্ধে, এভাবেই করে যাব আমরা প্রতিবাদ। আমরা কোনো সংঘাত চাই না, আমরা পছন্দ করি না রক্তপাত, আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী। আমাদের প্রতিবাদের ভাষা একটু অন্যরকম, অন্যরকম আমাদের ভালোবাসা। আমাদের এই সুশৃঙ্খল প্রতিবাদে- যদি সন্তোষজনক সফলতা না আসে, তবে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম মাসের প্রথম দিনে আমরা সকল প্রজাতির পাখিগুলো আবারও আলোচনায় বসব। সবার মতামতের ভিত্তিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আপনারা ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনার পাশাপাশি- সবাই সাবধানে থাকবেন, সেই প্রত্যাশা করে, সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে, আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি।'
পাখিগুলোর করতালির শব্দে সভাপতির বক্তব্য শেষ করার মাধ্যমে, সভার কার্যক্রমের আপাতত সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।