সকাল ৬টা বাজতেই ঘড়ির অ্যালার্ম বেজে উঠল এবং সঙ্গে সঙ্গে সাজুর ঘুম ভেঙে গেল। সে বুঝতে পারল আজকের দিনটা তার জন্য একটা বিশেষ দিন হতে চলছে। দিনটা ছুটির দিন ছিল। এই দিনটার জন্য সে অনেক দিন অপেক্ষা করছিল- কারণ সাজুর বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে সাজুকে সময় দিতে পারে না। তাই তারা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে ছুটির দিনে পাহাড় দেখতে যাবেন। যেমন কথা তেমন কাজ।
সাজু তাড়াতাড়ি করে বিছানা থেকে উঠল এবং তার বাবাকে গুড মর্নিং জানাল। রান্না ঘরে ঢুকতেই সাজুর নাকে ভূরিভোজের গন্ধ পেল। সাজু দেখে খুব খুশি হলো। সাজুর বাবা একজন পরিশ্রমী মানুষ। খুব ভোরে উঠেই রান্না শেষ করে এবং সেগুলো প্যাকেট করে নেয় দুপুরে খাবার জন্য।
সাজুর বাবা বলল, সাজু তুমি কি পাহাড় ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত?
সাজু বলল, হঁ্যা, আমি প্রস্তুত।
অতঃপর, তারা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। পাহাড়ি রাস্তা অনেক উঁচু নিচু তার সঙ্গে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য, সুউঁচু গাছ, নির্মল বাতাস, ছোট বড় মনোরম পাহাড় তারা উপভোগ করতে থাকে এবং শৈশবের স্মৃতি গল্প করতে করতে পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে যায় কীভাবে বুঝতেই পারেনি। তারা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়, তাদের নিচে প্রসারিত উপত্যকা সবুজ রঙিন বন্যফুলে সজ্জিত চারপাশ। তারা একটি পাথরের পাশে বসে সঙ্গে নেওয়া খাবার ভাগাভাগি করে খায়। তাদের মধ্যে তৃপ্তির হাসি; বাবার সঙ্গে সাজুর এই প্রথম পাহাড় দেখা।
দিন গড়িয়ে যাচ্ছে তারা পাহাড় থেকে নেমে আসে এবং তাদের শরীর বেয়ে ঘাম পড়ছে। পাহাড়ের নিচে ছোট হ্রদে গোসল করে এবং মাছ ধরে এভাবে সারা বিকাল কাটিয়েছে।
সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গেই তারা ঘরে ফিরে; তারা অনেক ক্লান্ত ছিল; কিন্তু তারা অনেক হ্যাপি ছিল এই দিনটার জন্য। কারণ সম্পূর্ণ দিনটা ছিল তাদের জন্য অনেক মূল্যবান।
জোছনা রাতে বারান্দায় বসে সাজু ও তার বাবা বারান্দায় বসে সারাদিনের আনন্দ ও অভিজ্ঞতার কথা বলতে বলতে ঘড়ির কাঁটা আবার বেজে উঠল। তারা বুঝতে পারল তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনটা শেষ হলো।