আমরা বাঙালি, আমরা মুক্ত, সীমানা ছাড়িয়ে অন্তরে মুক্ত- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৩ দিনব্যাপী ২০তম কিশোরগঞ্জ ছড়া উৎসব ও চন্দ্রাবতী মেলা-২০২৪ গত ৭ মার্চ কিশোরগঞ্জ শহরের খরমপট্রি এলাকায় সমবায় কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কবি লেখক সাহিত্যিকদের এই মিলনমেলা দেশীয় আমেজ থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে যায়। সহযোগিতায় ছিল কল্যাণমুখী সাহিত্য সংগঠন জেগে ওঠো নরসুন্দা। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ছড়া সংসদ 'সুকুমার রায় সাহিত্য পদক-'২৪' প্রদান করে। কবি ও শিশু সাহিত্যিক আলমগীর খোরশেদকে শিশুসাহিত্যে এই পদক দেওয়া হয়।

কবি, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক আলমগীর খোরশেদ কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দী গ্রামে ১৯৬৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম এ কে খোরশেদ উদ্দিন আহমেদ নারান্দী ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এ কে খোরশেদ উদ্দিন আহমেদ তৎকালীন কিশোরগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে 'হবু চন্দ্র রাজা গবু চন্দ্র মন্ত্রী' বইটি লিখে আইয়ুব সরকারের রোষানলে পড়েন এবং তুখোড় এই বক্তা প্রকাশ্য জনসভা থেকে বক্তব্য উপস্থাপনকালে মঞ্চ থেকে গ্রেপ্তার হয়ে রাজবন্দি হিসেবে দুইবার কারাবরণ করেছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জ মাল্টিপারপাস সোসাইটির দুইবারের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। মাতা মোছা. ফাতেমা খাতুন। কবি আলমগীর খোরশেদ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট পাওয়ার পস্নান্ট, প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে সিনিয়র ম্যানেজার গ্রেড-১, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। আলমগীর খোরশেদের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২৪টির মধ্যে কাব্যগ্রন্থ ৮টি, এখন দুঃসময়, পাথর সময়, চন্দ্রমুখী, কেউ আছো কি?, মুজিব মানে বাংলাদেশ, মুজিব পদাবলি, বুকের বাম পাঁজরের নিচে, গাঁও গেরামের কাব্য, গল্পগ্রন্থ ৪টি, শান্তা নামের মেয়েটি, হৃদয়ের রক্তক্ষরণ, ভালোবাসায় চোরাকাঁটা ও সম্পর্কের সমীকরণ, উপন্যাস ৩টি, দূরের নীল প্রজাপতি, জোৎস্নলোকো অমানিশা, প্রিয়দর্শিনী, শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ ৮টি, শালিক ও তার ছানারা, শেওড়া গাছের ভূত, মঙ্গল গ্রহের যাত্রী, এলিয়েনের দেশে, খোকার শততম জন্মদিন, টুঙ্গিপাড়ার খোকা, শিয়াল দাদুর সভা, ছড়াওয়ালা শিয়ালমামা ও জীবনী গ্রন্থ খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু। তিনি বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান সাহিত্য সম্মাননা, মিজাফ তারকা অ্যাওয়ার্ড, অচ্ছুৎ দুই বাংলা সাহিত্য সম্মিলন সম্মাননা ও মাদার তেরেসা সাহিত্য সম্মাননা লাভ করেছেন। আলমগীর খোরশেদ তার ক্ষুরধার লেখনী দিয়ে পাঠক সমাজকে সমাদৃত করে রেখেছেন।