গল্প
রনির নতুন পাঞ্জাবি
প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
ফারজানা ইয়াসমিন
রানার ছোট ভাই রনি ঈদে নতুন পাঞ্জাবির জন্য কান্না করছে। কিন্তু এবার ঈদে নতুন পাঞ্জাবি কেন হবে না। রানার বাবা অনেক দিন ধরে অসুস্থ। রিকশা চালাতো আগে। মা মানুষের বাসায় কাজ করে যে টাকা পায়। তা দিয়ে ঘরভাড়া আর খাওয়া কোনোরকমে চলে। রানা আগে স্কুলে যেত। এখন টাকার জন্য স্কুলে যাওয়া বন্ধ। পান, সিগারেট বিক্রি করে সংসারে সাহায্য করে। ছোট ভাই রনি যেন স্কুলে যেতে পারে তার জন্য এই কাজ করে সে।
রনির কান্না দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল রানার। তাই সে ইফতারের পরে আবারও চকলেট, চিপস, পানি বিক্রির জন্য বের হয়। রাস্তায় হঠাৎ রানা দেখে একজন লোকের পকেট থেকে মানিব্যাগ পড়ে যায়। কিন্তু লোকট বুঝতে পারল না। রানা দৌড়ে গিয়ে মানিব্যাগ তুলে লোকটির পেছনে দৌড়াতে লাগল। এর মধ্যেই লোকটি বাজারের মধ্যে অনেক দূরে চলে গেছে।
তবুও রানা হাল ছাড়েনি। সে লোকটাকে খুঁজে বের করে তার মানিব্যাগটা ফিরিয়ে দেয়। লোকটি রানার সততা দেখে খুব অবাক হন। সে রানাকে জিজ্ঞেস করে তুমি জানো এখানে কত টাকা আছে?
রানা উত্তর দেয়, আমি খুলে দেখি নিই। আপনাকে হারিয়ে না ফেলি তাই দৌড় দিয়েছি। এটা আমার না। তাই খুলে দেখা উচিত না।
লোকটি বুঝতে পারে। রানা বয়সে ছোট হলেও অনেক বড় মাপের মানুষ। লোকটি রানাকে তার পরিবারের কথা জিজ্ঞেস করে। রানা লোকটিকে তার পরিবারের অবস্থার কথা বলে।
রানা লোকটিকে জানায়, সে তার ছোট ভাই রনির কান্না দেখে পাঞ্জাবি কেনার টাকা জোগাড় করতে এসেছে। এটা শুনে লোকটি আরও খুশি হন। সে উপহার হিসেবে রানাকে ও তার ছোট ভাই রনির জন্য দুটো পাঞ্জাবি কিনে দেন। রানা নিতে রাজি না হলেও জোর করে লোকটি উপহার দেন। কারণ সে এত ছোট একটা মানুষের সৎ আচরণে মুগ্ধ হয়েছেন।
নতুন পাঞ্জাবি পেয়ে রনি অসম্ভব খুশি। সে তার বন্ধুদের সঙ্গে নতুন পাঞ্জাবি পরে ঈদগাহে যাবে নামাজ পড়তে। অনেক মজা হবে। রানার বাবা মাও রানার সততার জন্য অনেক খুশি হলেন। অভাব তাদের সন্তানকে অসৎ বানাতে পারেনি।