গল্প

দুষ্ট শিকারি ও চালাক শিয়াল

প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

ইব্রাহিম জুয়েল
প্রায় দুইশত বছরের পুরনো এই জঙ্গল। নানান পশুপাখি জীবজন্তুর সমাহার এই বনে। এই বনের প্রায় আট কিলোমিটার দূরে একটি সুন্দর গ্রাম। গ্রামে নানান মানুষ প্রায় তাদের জীবিকার তাগিদে বনে আসেন কাঠ কাটার জন্য। ইদানীং মানুষজন খুব একটা বনে আসেন না। কারণ ওই বনে ইদানীং বাঘের আনাগোনা দেয়া যাচ্ছে এবং প্রতিদিন কেউ না কেউ বন থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যাচ্ছে। বাঘের ভয়ে গ্রামের লোকরা খুব একটা বনে যায় না বললেই চলে। সবুজে ঢাকা এই বনটিতে এখন শিকারীদের আনাগোনা। একজন শিকারি প্রতিদিন বনে এসে নির্মমভাবে বনের পশুপাখিদের হত্যা করে এবং বড় বড় হরিণকে জালে বন্দি করে নিয়ে যায়। কিছুই করতে পারছে না বনের পশুপাখি। শিকারি প্রতিদিন তার সঙ্গে করে বন্দুক নিয়ে আসে। বন্দুক হাতে দেখে বনের প্রাণীরা ভয়ে পালাতে থাকে। রোজ শিকারি বনে আসে পশু শিকার করতে। বনের জীবজন্তু সবাই অতিষ্ঠ তার এই কাজে। একদিন সবাই মিলে বনে সভার আয়োজন করল। বনের রাজাকে সবাই মিলে নালিশ করল। বনের রাজা সিংহ বলল, এটা বড় সমস্যা; আমাদের একটা বুদ্ধি বের করতে হবে- শিকারিকে শিক্ষা দিতে হবে। তখন হাতি বলে উঠল, আমাদের শিয়াল মামা এই কাজে সাহায্য করতে পারবে। সবাই তার কথামতো সায় দিল। শিয়াল ও না করতে পারল না। শিয়াল বলল, কাল শিকারির একটা ব্যবস্থা করব। তবে শুনো আমার বুদ্ধি... কাল যখন শিকারি আসবে হরিণ তোমরা তাকে দেখা দিয়ে দৌড়ে পালাবে। তখন আমি শিকারীর কাছে গিয়ে বাকিটা দেখ নেব। পিন পতন নিরবতা সবাই শিয়ালের বুদ্ধি মতো ফাঁদ তৈরি করল। শিকারি কাল আসা মাত্র বনের সব হারিণ একসঙ্গে দৌড়াতে লাগলো। শিকারি এতগুলো হরিণ একসঙ্গে দেখে ভীষণ খুশি হয়ে গেল। আস্তে আস্তে শিকারি সামনে এগিয়ে যাচ্ছে তখন শিয়াল শিকারিকে দেখে বলল, শিকারি ভাই কি খোঁজতেছ, আমি কি তোমাকে সাহায্য করতে পারি। শিকারি: হ্যা! কিন্তু কি সাহায্য? শিয়াল: হরিণগুলো কেন পালাল যান? গতকাল হরিণগুলো সবাই আমাকে বলেছিল- তুমি নাকি তাদের বন্দি করতে পারবে না, তারা সবাই নাকি গুহার মধ্যে লুকিয়ে থাকবে। তাইতো সবাই তোমাকে দেখেই দৌড়ে পালাল। \হতাহলে এই ব্যাপার! আমি এখনি গুহার মধ্যে যাচ্ছি আজই- সবাইকে বন্দি করব। এই বলে শিকারি শিয়ালের কথা মতো গুহার মধ্যে প্রবেশ করল সঙ্গে সঙ্গে হাতি মামা গতকাল সভার বুদ্ধি মতো উপর থেকে গুহার মুখ বন্ধ করে দিল। শিকারি শিয়ালের কথার ফাঁদে পড়ে উচিত শিক্ষা পেল। বনের পশুপাখিদের মাঝে আবার শান্তি ফিরে এলো।