উপকূলীয় মানুষের পাশে শিক্ষার্থীদের মানবিক 'হাসিঘর ফাউন্ডেশন'

প্রকাশ | ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

বোরহান উদ্দিন
কক্সবাজারের উখিয়ায় মানবিকতার আলো ছড়াচ্ছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সংগঠন 'হাসিঘর ফাউন্ডেশন'। 'অসহায় মানুষের মুখে ফুটাবো হাসি'- এই সেস্নাগানকে বুকে ধারণ করে ২০২১ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত, পথশিশু ও ভবঘুরে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বিনামূল্যে সহযোগিতা করার জন্য বিভিন্ন মানবিক কাজ করে থাকেন যেমন : অসহায় মানুষের আর্থিক সহায়তা প্রদান, ঈদবস্ত্র, শীতবস্ত্র প্রদান, রমজানে ইফতার বিতরণ, সুবিধাবঞ্চিত ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসামগ্রী সহায়তা প্রদান, ঘূর্ণিঝড়ের সচেতনতামূলক মাইকিং, রক্তদানসহ নানামুখী মানবিক কার্যক্রম উলেস্নখযোগ্য। বর্তমানে উখিয়া উপজেলার ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সংগঠনটির মাধ্যমে মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি অন্য শিক্ষার্থীদের মানবিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান এবং সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছেন। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ে মানুষকে সতর্কবার্তা দিতে মাইকিং ও আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে কাজ করেন সংগঠনের বড় সদস্যরা। নির্দিষ্ট সময় পর পর মুমূর্ষু রোগীর প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদানও করে থাকেন। মাদক প্রতিরোধে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জন সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করছেন তারা। হাসিঘর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার আলাপচারিতায় আমাদের জানান, 'শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী কাজে উৎসাহী করা আমাদের অন্যতম একটি লক্ষ্য। ছোট থেকেই অসহায়, দুস্থ, পথশিশু ও রাস্তার ভবঘুরে মানুষ দেখলে তাদের জন্য মায়া কাজ করত।' তাই সংগঠনের মাধ্যমে সাধ্যমতো তাদের সাহায্য করে যাচ্ছি। মানুষের জন্য কাজ করতে পেরে, নিজের অনেক ভালো লাগে। মানবিক কাজে মানুষের অনেক দোয়া ও ভালোবাসা পেয়েছি, যা আত্মতৃপ্তি দেয়। সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সদস্য, ওয়াফি আলম ফাতেমা বলেন, কক্সবাজারের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছি। সবাইকে সামাজিক, মানবিক ও স্বেচ্ছাসেবী কাজে যুক্ত করার মাধ্যমে আগামীর মানবিক বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখি। সংগঠনের সদস্যরা ২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে, ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির প্রতি ভালোবাসা থেকে কক্সবাজার লাবণী পয়েন্টে বিশ্বের সবচেয়ে বড় (মেসির) ছবি হাতে আঁকেন। যার দৈর্ঘ্য ৩৪ ফুট, প্রস্থ ২২ ফুট কাপড়ের উপর এক্রেলিক রং ব্যবহার করে ফুটিয়ে তুলা হয়। ছবিটি সারা ফুটবল বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তরুণদের ক্রীড়ামুখী করা, ক্রীড়ায় উৎসাহী করার জন্যই মূলত ছবি আঁকার এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বলে জানান তারা। উপকূলীয় অঞ্চল উখিয়ায় এভাবেই নিঃস্বার্থভাবে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের সংগঠন 'হাসি ঘর ফাউন্ডেশন' যারা স্বপ্ন দেখছেন, মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টির মাধ্যমে আগামীর মানবিক বাংলাদেশ? বিনির্মাণের।