সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে প্রাণবন্তভাবে সাজাতে হবে
তাসমিয়া সরকার
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
সাংস্কৃতিক সংগঠন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক উৎকর্ষতা, সামাজিক সংযোগকে মুক্তভাবে বিকাশের এক অনন্য পস্ন্যাটফর্ম। অতএব, যদি এই সাংস্কৃতিক সংগঠনের বাজেট বৃদ্ধি করা যায়, তবে তা শিক্ষার্থীদের জন্য লাভজনক হবে এবং সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রম ও সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হবে। কিন্তু সম্ভাব্য পরিমাণ বাজেট বৃদ্ধি করা হলেও তা সবসময় সংগঠনগুলোর মান উন্নয়নের জন্য কার্যকরভাবে কাজে লাগে, এমনটি আমরা প্রত্যক্ষ করি না। তাই প্রয়োজন হলে বাজেটের সঠিক ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করা এবং সময়ের সঙ্গে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানাচ্ছি, যাতে করে সেই অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়। সেইসঙ্গে এইসব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মতামত এবং প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি এবং পদক্ষেপগুলো নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানাচ্ছি, যেন তা শিক্ষার্থীদের চাহিদা এবং প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
অসুস্থ রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস
সুজন ইসলাম
শিক্ষার্থী, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের যে অসুস্থ রাজনীতি বছরের পর বছর চলে আসছিল তা বাংলাদেশের শিক্ষার মান উন্নয়নের পথকে তীব্রভাবে ব্যাহত করেছে। সাধারণত একটি বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চিত করে উন্নত শিক্ষা এবং গবেষণা। যেখানে নেট ঘাটলেই দেখা যায়, উন্নত দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একের পর এক উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে চিন্তা ভাবনা ও আবিষ্কার করতে ব্যস্ত সেখানে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলে আসছিল এক অসুস্থ রাজনীতির প্রতিযোগিতা, যা শিক্ষার্থীদের উন্নত চিন্তাভাবনার পরিবর্তে নেতা হওয়ার জন্য নেতার পিছনে ঘুরতে শিখায়। আমার প্রিয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র শিক্ষানবিশ হিসেবে আমার প্রত্যাশা যেন জবি সুন্দর একটি শিক্ষামুখর পরিবেশ আমাদের জন্য উপহার দেয়। তদ্রূপ আমিও একজন জবিয়ান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শ্রদ্ধেয় ভাই-বোনদের প্রতি আবেদন রাখব যেন আমার বিশ্ববিদ্যালয় তার গৌরব না হারায়। আমরা হয়ে উঠতে পারি গর্বিত জবিয়ান।
সেশনজটের সম্ভাবনা কম হোক
সাজ্জাতুল কাউছার বাপ্পী
শিক্ষার্থী, ফাইনান্স বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের এক আতঙ্কের নাম সেশনজট। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাডেমিক কার্যক্রমে বিলম্ব করায় সৃষ্টি হয় এই সেশনজট। একজন শিক্ষার্থী দীর্ঘ সিঁড়ি বেয়ে, বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীর এই স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত না হয়। নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে যেন এই একাডেমিক পড়ালেখা না করতে হয়। একটি স্বনামধন্য ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সেশনজটের কারণে নির্ধারিত বয়সের চেয়ে বেশি বয়সে পদার্পণ করায়, অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি চাকরি থেকে। এই সেশনজট যেন ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ। আমরা জবি ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এ ধরনের হুমকির মুখোমুখি হতে চাই না। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আবাসন সমস্যা দূরীকরণ ভাতা ব্যবস্থা চালু হোক
আজহারুল ইসলাম শুভ্র
শিক্ষার্থী, পরিসংখ্যান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানের পর নতুন সূর্যোদয়ের বাংলাদেশ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন অভিভাবক শূন্যতার পর এসেছেন নবনিয়োগকৃত উপাচার্য। নতুন দেশে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চাই গুণগত পরিবর্তন। দেশের ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়টির শুরু থেকেই রয়েছে তীব্র আবাসন সমস্যা। আবাসন সমস্যার জন্য এখানকার ছাত্রদের প্রতিনিয়ত করতে হয় যুদ্ধ। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য কেরানীগঞ্জে ২০০ একর জমি বুঝিয়ে দেওয়া হলেও তার কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপাচার্য আসলেও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের তেমন কোনো প্রশাসনিক ভূমিকা দেখা যায়নি। তাই নতুন উপাচার্যের কাছে দাবি দ্রম্নততার সঙ্গে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে গবেষণাভিত্তিক দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু হোক। এবং সাময়িকভাবে আবাসন সমস্যা দূরীকরণে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট এমাউন্টের ভাতার ব্যবস্থা করা হোক।
গবেষণামুখী বিশ্ববিদ্যালয় চাই
মোস্তফা হাসান
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
যে জাতি শিক্ষার মানোন্নয়ন ও গবেষণায় যত বেশি ভালো, সে জাতি তত বেশি উন্নত। '২৪-র এর নতুন দেশে আমরা এমন এক বিশ্ববিদ্যালয় চাই যেখানে পড়াশোনার পরিবেশ থাকবে মানসম্মত। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিক্ষার কাজ ও গবেষণা করতে পারবে এবং সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা বিকাশের সুযোগ ও বিশ্বমানের শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পায়। তাছাড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে আরও উন্নত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক উন্নতি, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির দিকে আরও বেশি নজর দিতে হবে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার উন্নতি সাধন করতে হবে। বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সঙ্গে সহযোগিতা করে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য আন্তর্জাতিক সুযোগ তৈরি করতে হবে। এতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
গ্রন্থাগার আধুনিকভাবে সাজানো হোক
আফ্রিয়া অলিন
শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ
গ্রন্থাগার একটি জাতির মেধা, মনন, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। বই পড়ার আগ্রহ থেকেই উৎপত্তি হয় গ্রন্থাগারের। গ্রন্থ মানুষের জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তার করে আর এ কাজে সাহায্য করে গ্রন্থাগার। জ্ঞানই আলো আর এই আলোর সমাহার রয়েছে গ্রন্থাগারে। খ্রিষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে রোমে সর্বপ্রথম সার্বজনীন গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়। কালের পরিক্রমায় গ্রন্থাগারে এসেছে নানা পরিবর্তন। এক সময় গ্রন্থাগার ছিল সম্ভ্রান্ত মানুষের আভিজাত্যের প্রতীক। ধীরে ধীরে গ্রন্থাগার প্রসারের ফলে তা সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে চলে এসেছে। বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। তাই গ্রন্থাগারেও এসেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। স্মার্ট গ্রন্থাগারের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মধ্যে মেশিন লার্নিং, বিকন অথবা আইবিকন, মোবাইল কিয়স্ক, মোবাইল অ্যাপস এবং আরএফআইডি ইত্যাদি প্রযুক্তি বিদ্যমান। প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক দেশ থেকে অন্য দেশের গ্রন্থাগারের বই পাঠ করা সম্ভব হয়। এসবই সম্ভব হয়েছে ই-গ্রন্থাগারের জন্য।