জামালপুর জেলার সব মানুষের কাছে পরিচিত ও বিশেষ খাবারের নাম 'মেন্দা'। জেলার একজন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি মেন্দার স্বাদ নেয়নি। তবে, অনেকের কাছে এই খাবার 'মিলিস্ন, পিঠালি' নামেও পরিচিত। শত বছরের বেশি সময় ধরে এই জেলায় মেন্দার বেশি প্রচলিত রয়েছে। তবে অনুষ্ঠানে খাবারের আয়োজন মানেই মেন্দার মেনু্যর প্রাধান্য সবার ওপর। পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠানে মেন্দা না হলে আয়োজনটি অসম্পূর্ণ মনে হয় সবার কাছে। বিশেষ করে, চলিস্নশা অনুষ্ঠানে মেন্দার প্রচলন সবচেয়ে বেশি। মেন্দার আয়োজন হলে গ্রামে লেগে যায়, উৎসবের আমেজ, ছোট বড় সবাই দলবেঁধে চলে আসে মেন্দার স্বাদ নিতে।
জানা যায়, মেন্দা রান্না জন্য প্রয়োজন হয় গরু, মহিষ অথবা ছাগলের মাংস। তবে গরুর মাংসই সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। গরুর মাংসের সঙ্গে লাগে নানা ধরনের মসলা। যেমন : পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মরিচ, হলুদ, ধনিয়া, তেল, লবণ, সাদা এলাচ, জিরা, লবঙ্গসহ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় মসলা। মেন্দা রান্নার প্রধান উপকরণ হলো 'চালের গুঁড়া' (চালকে মেশিন/টেকির সাহায্যে মিহি করে ভাঙতে হয়)।
মেন্দার আরেকটি বিশেষত্ব হলো 'কাঁসার পাতিলে রান্না' যুগের পর যুগ ধরে এভাবে মেন্দা রান্নার প্রচলন হয়ে আসছে। মেন্দার স্বাদ এত, তাই অতুলনীয় ও লোভনীয়, যে কারও জিভে জল এসে যাবে।' খাবারটি রান্নার পর ভাতের সঙ্গে 'কলা পাতায়' পরিবেশন করা হয়। খাবারটি জেলার শত বছরের ঐতিহ্য বহন করছে।
তবে ঠিক কখন থেকে মেন্দার প্রচলন জামালপুরে শুরু হয়,তা সঠিক কেউ বলতে পারেন না। তবে অনেকেই ধারণা করেন, স্বাধীনতার আগে বিয়ে, বিভিন্ন উৎসব এবং দরবার-শালিসের পর মেন্দার আয়োজন করা হতো। তখন থেকেই যুগের পর যুগ ধরে প্রচলিত হয়ে এসেছে মেন্দা।
তাই বলা হয়ে থাকে, শত বছরের অধিক সময় ধরে কাঁসার পাতিলে মেন্দা জামালপুর জেলার ঐতিহ্য বহন করছে।