জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জ্ঞানের আঙিনা, মননের মহাকাব্য
আস্রাফুল ইসলাম রানা
শিক্ষার্থী, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, এটি শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি আমাদের সবার মনের মন্দির/মসজিদ। তার দীর্ঘ ইতিহাস আমাদের সঙ্গে যেন কাব্যের মতো জড়িয়ে থাকে। প্রতিটি ইট, প্রতিটি প্রাচীর, যেন স্বপ্নের সঙ্গে সংগ্রামের অমর গল্প বলে যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় অতীত আমাদের শেখাচ্ছে কীভাবে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হবে, কীভাবে জীবনের প্রতিটি কঠিন পথে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। জগন্নাথ আমাদের জন্য শুধু শিক্ষার নয়, চিন্তার ও মনের মুক্তির এক নতুন দিগন্ত। সে আমাদের শেখাবে সত্যিকারের মানুষ হওয়া, আমাদের বিবেকবুদ্ধি জাগ্রত করে তোলে, যেন আমরা কুসংস্কার ও ঘৃণার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে পারি। জগন্নাথ আমাদের শিখাবে মুক্তচিন্তা করতে, শিক্ষা গ্রহণে সাহসী হতে। সে আমাদের মনের অবরুদ্ধ অন্ধকার দূর করে আলোর পথ দেখাতে, যাতে আমরা বিদ্যার তেজ নিয়ে পাহাড়ের মতো উঁচু শিরে চলতে পারি। এখানে আমরা পরিণত হই আলোকিত মানুষে, একেকজন হয়ে উঠি মানবতার প্রকৃত ধারক ও বাহক।
উত্তম জীবন গঠনের নির্ভরযোগ্য স্থান হোক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
তাসমিয়া সরকার
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের নবীনদের স্বপ্নপূরণের নতুন অধ্যায় হয়ে উঠেছে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশেষ গর্বের সঙ্গে উজ্জ্বল পথে অগ্রসর হচ্ছে। এই নতুন অধ্যায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা প্রত্যাশা করি সিনিয়র ভাইয়া আপুদের থেকে স্নেহশীল আচরণ, তাদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে ভাগাভাগির সুযোগ, পরস্পরের প্রতি সম্মান এবং বন্ধুত্বসুলভ আচরণ এবং ভয়হীন একটি সম্পর্ক। আমরা চাইর্ যাগিং নামক অপসংস্কৃতি যেন আমাদের সুন্দর ও মলিন সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক নষ্ট করতে না পারে। আমরা পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের কাছে থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ ও উৎসাহমূলক আচরণ প্রত্যাশা করি। আমরা যেন কোনো প্রকার ভয়-ভীতি ছাড়াই শিক্ষকদের প্রশ্ন করে অনেক কিছু শিখতে পারি। আমরা চাই পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা আমাদের সঙ্গে সব সময় সমান আচরণ করবেন এবং পক্ষপাতিত্ব এড়িয়ে চলবেন। আমরা বিশ্বাস করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল, সাহসী ও উদ্ভাবনী পার্শ্ব প্রকল্পগুলো গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করবে।
আমরা জবিয়ান, আমরাই সেরা
জান্নাতুল মাওয়া ছিমিন
শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ
ভর্তি যুদ্ধ নামক এক দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ করে নবীন সমাজ। তাই স্বভাবতই এই প্রাঙ্গণ নবীন সমাজের চোখে রোমাঞ্চকর। ১৯তম আবর্তনের পদচারণায় মুখরিত হতে চলেছে দেশসেরা বিদ্যাপীঠ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। একজন নবীন জবিয়ান হিসেবে উচ্ছ্বাসময়ী চোখে এক আকাশসম স্বপ্ন নিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি বহু প্রতিক্ষীত ইউনিভার্সিটি জীবন।
ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং শিক্ষার গুণগত মানের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি আমার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। স্বপ্নময়ী চোখে দেখি অপূর্ব এক ক্যাম্পাস, যা সহস্র শিক্ষার্থীর সংগ্রাম ও সফলতার কথা বহন করে। বিশ্বব্রহ্মান্ডে নিজ ক্যাম্পাসকে শীর্ষস্থানে নিয়ে যেতে সম্মানীয় শিক্ষকবৃন্দ ও সিনিয়র ভাই-আপুদের সঙ্গে একনিষ্ঠভাবে পরিশ্রম করতে নতুন জবিয়ানরা বদ্ধপরিপকর। আমাদের ছোট-বড় ভুলগুলোকে সিনিয়ররা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা করছি। পরিশেষে সবার মধ্যকার ঐক্য এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে নিজ ক্যাম্পাসকে সর্বোচ্চ স্থানে নিয়ে যেতে পারব, তখন আমরা বুক উঁচু করে বলতে পারব।
ক্যাম্পাস পরিবেশ শিক্ষামুখরের হোক
হিমেল হোসেন মারুফ
ইতিহাস বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে একটি স্বপ্নের ঠিকানা, আমিও ব্যতিক্রম না। ভর্তিযুদ্ধের মাত্র কয়েক হাজার পরিশ্রমী এবং ভাগ্যবান শিক্ষার্থী সুযোগ পায় এই স্বপ্নস্থলে নিজের আসন করে নিতে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন কেমন হবে সেটা নিয়ে অনেক কৌতূহল রয়েছে তবে আমিও পড়াশোনার পাশাপাশি একটা সুন্দর ক্যাম্পাসের স্বপ্ন দেখতাম। এটি আমার দ্বিতীয় বাড়ি। হাসিকান্না, আনন্দ-বেদনা, আড্ডা সবকিছুর অন্যতম কেন্দ্রস্থল। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে আমার ভাবনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হোক। রাজনৈতিক কিংবা দলীয় মতাদর্শ যেন কোনোভাবেই আমাদের সংকুচিত করে না দেয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে র?্যাগিং একটি নিয়মিত ঘটনা। মনের মধ্যে একটু ভয় কাজ করে তাই র?্যাগিংয়ের মতো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন যাতে হতে না হয় আমি এইটাই চাই। বর্তমান সময়ে সেশনজট অভিশাপ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে সেজন্য সেশনজটমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আমাদের শিক্ষক/শিক্ষাকারা আমাদের পিতা-মাতার মতোই উনারাও আমাদের সন্তানের মতোই আগলিয়ে রাখুক, আমাদের প্রতি যত্নশীল ও আন্তরিক হোক।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্র হোক
ইসমাইল হোসেন
শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
বুকভরা স্বপ্ন, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। আমরা এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয় চাই যেখানে জ্ঞান, বিজ্ঞান, গবেষণাকে মূল্যায়ন করা হবে। লাইব্রেরিতে অধিকতর বিশ্বমানের বইপুস্তক সংযোজন করতে হবে। ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী হওয়ায় মেসে থাকার খরচ এবং রাস্তাঘাট চেনা কষ্টকর হয়ে যায় তাই দ্রম্নত হলগুলো উদ্ধার করে আমাদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে অথবা হল উদ্ধারে সময় লাগলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের ভবনগুলো ভাড়া নিয়ে আবাসন ব্যবস্থা করতে হবে। আরও চাই শিক্ষকরা আমাদের প্রকৃত অভিভাবক হয়ে উঠুক এবং চিন্তাভাবনা উন্নত ও বিশ্বমানের হোক। সিনিয়ররা আমাদের সাহসী, চিন্তাশীল ও বিচক্ষণ করতে সহায়তা করুন এবং সব ধরনের মানসিক নির্যাতন থেকে দূরে থাকুন।