সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের রাষ্ট্র চাই
মারিয়া সুলতানা
কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ,
গণ-বিশ্ববিদ্যালয়।
আগামীর বাংলাদেশকে আমরা দেখতে চাই উন্নত, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে। বাংলাদেশ একটি বহুজাতিক ও বহু-ধর্মীয় সমাজের দেশ। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থান দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অঙ্গ। বাংলাদেশকে আমরা সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যপূর্ণ দেখতে চাই। এ জন্য দরকার পারস্পরিক সম্মান, সহমর্মিতা ও সহযোগিতা। প্রত্যেক ধর্ম, বর্ণ ও জাতির মানুষের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষিত রাখতে হবে। আমাদের প্রজন্মকে সাম্প্রদায়িকতার বিষ থেকে মুক্ত রাখতে হবে এবং জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে হবে। সুশিক্ষা ও সচেতনতার মাধ্যমে ঘৃণা ও বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রয়োজন। এমন একটি বাংলাদেশের কামনা করি, যেখানে বৈষম্য, দারিদ্র্য এবং অশিক্ষার জায়গায় থাকবে সমতা, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা এবং সুশিক্ষার প্রসার। সবার জন্য সমান সুযোগ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের সুরক্ষায় বাংলাদেশ হবে একটি মডেল রাষ্ট্র।
স্বতন্ত্র বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা জরুরি
জেসিকা সুলতানা
আইন বিভাগ,
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি স্বতন্ত্র বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন, যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত থাকবে। আমাদের আদালতগুলো নিষ্পত্তি করবে ন্যায়বিচার ও আইন অনুসারে, যা ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার মূলমন্ত্রে পরিচালিত হবে। মানুষের জন্যই সরকার, মানুষ সরকারের জন্য নয় এই মতবাদ থেকে আইনানুগ ন্যায়বিচার নীতি জন্ম লাভ করেছে। আইনানুগ ন্যায়বিচার একটি গণতান্ত্রিক চেতনা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পরম নির্দেশনা নিরপেক্ষ, সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ ট্রাইবু্যনাল গঠন করতে হবে, যাতে বৈষম্যের মামলা সমাধান করা যায়। নাগরিকদের আইনগত প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কমিউনিটি আ্যডভাইজরি বোর্ড এবং বিচারব্যবস্থার ও আইন প্রয়োগের স্বচ্ছতার ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। এই পরিকল্পনা একটি নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করবে। যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার আমাদের গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ হবে। সবাই মিলে এমন একটি জাতি গড়ি, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের কণ্ঠস্বর শোনা যাবে। প্রতিটি অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং সবাই আইনের কাছে সমান হবে।
জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে
মীর ইবরার আলী
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ,
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
সুখী ও সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বাংলাদেশকে একটি দারিদ্র্যমুক্ত, মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, স্বাধীনতার এত বছর পরও আমরা এটা নিশ্চিত করতে পারিনি। বিপুল সম্ভাবনাময়ী জনসংখ্যা থাকার পরও, এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করার ব্যর্থতা, দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করার ব্যর্থতা এবং আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া এর মূল কারণ। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের কামনা, আমাদের এই মাতৃভূমি সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতির বলয় মুক্ত হয়ে দারিদ্র্যমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। সব ক্ষেত্রেই দেশের প্রতিটি নাগরিককে মৌলিক চাহিদা পূরণের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে এই দেশকে একটি মানবিক রাষ্ট্রে পরিণত করা হোক।
দুর্নীতি মুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়তে হবে
অমর্ত্য সেন
আইন ও বিচার বিভাগ,
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি।
আমাদের দেশে বহু ধর্মের মানুষ রয়েছে। প্রত্যেক ধর্ম যেন সুষ্ঠু, স্বাভাবিক এবং স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে। ধর্মীয় দাঙ্গা, কটূক্তিকারীদের তৎক্ষণাৎ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কোনো ধর্মে মৌলবাদী চেতনা জাগ্রত হলে তা নিঃসরণে দৃঢ় ভূমিকা পালন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যারা আছেন বা এখনো নিযুক্ত বা যোগ দিবেন তারা যাতে অস্থিতিশীল পরিবেশ দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করতে না পারে, সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। রাষ্ট্র দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হলেও আবার যেন দাঙ্গা, জুলুম এবং মানবাধিকার লংঘনের স্বীকার না হয়, সেটা অবশ্যই সরকারকে সঠিক নীতিনির্ধারণের মাধ্যমে সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা নিতে হবে। আমদের রাষ্ট্র সরকার গঠনে যদি সর্বদা জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে দেশ একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাতি অর্জন করবে।
এ ছাড়া ট্রেডিং ইকোনোমিক্স অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের দুর্নীতি র?্যাংকিংয়েও আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি। যদি অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে দুর্নীতি দমন করা যায়, তবে বাংলাদেশকে এক সুযোগ্য, মানবিক ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব।