সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। গুলিতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত ও আহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহন শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে প্রয়োজন হয় বিভিন্ন গ্রম্নপের রক্তের। রক্তের সংবাদ পাওয়া মাত্রই গুলিবিদ্ধ আহত শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন গ্রম্নপের রক্ত মেনেজ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বস্নাড ফাইটার ফর হিউম্যানিটি সংগঠনের স্পেশাল রেসপন্স টিম। বর্তমানে রাজধানী ঢাকাসহ গাজীপুর, রংপুর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর জেলায় সব গ্রম্নপের রক্তদাতা প্রস্তুত আছে আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের জন্য। আহত শিক্ষার্থীদের জন্য যেকোনো গ্রম্নপের রক্তের প্রয়োজন হওয়া মাত্র টিমের সদস্যদের জানানোর আহ্বান করেন।
কোটা আন্দোলন বেগবান হতে থাকলে (১৫ জুলাই) সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শাকিল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে (স্পেশাল রেসপন্স টিম) গঠন করা হয়। টিমের মাধ্যমে আহত শিক্ষার্থীদের জন্য যেকোনো গ্রম্নপের রক্তের জোগান দেওয়া হচ্ছে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন আসাদুল ইসলাম আসাদ, রাসেল হোসাইন, রিপন, মুক্তাদির, আয়েশা সিদ্দিকা, তায়েবা ও বর্ষা প্রমুখ।
টিমের অন্যতম লিডার বোরহান উদ্দিন বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের জন্য রক্ত ম্যানেজ করে যাচ্ছি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় রক্তদাতা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে দেওয়া হচ্ছে।
উলেস্নখ্য, ২০২০ সাল থেকে সংগঠনটি মানুষকে বিনামূল্যে রক্ত ও সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
আন্দোলনে গুলিবিদ্ধদের রক্ত ম্যানেজ করতে কাজ করছেন নারী ভলান্টিয়ার
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে স্বৈরাচারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায় সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ বাহিনী ও পুলিশ। গুলিতে আহত হন অনেক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে রক্ত ম্যানেজ করে দিতে ১৫ জুলাই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'বস্নাড ফাইটার ফর হিউম্যানিটি' স্পেশাল রেসপন্স টিম গঠন করেন। টিমের সদসরা রক্তদাতা প্রস্তুত করেন এবং আহত শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে রক্ত ম্যানেজ করে দেন। টিমের মাধ্যমে রক্তের জোগান দিতে কাজ করছেন, রাজধানী ঢাকার টিকাটুলি এলাকার সেন্ট্রাল ইউমেন্স কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা রূপালি, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কুমুদিনী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তায়েবা খান, একই উপজেলার টাঙ্গাইল কালেক্টরেট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবিদা সুলতানা বর্ষা।
আয়েশা সিদ্দিকা রূপালি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রক্ত দিয়ে পাশে দাঁড়াতে পেরেছি, এটা্ই আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তির। তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। সারাজীবন এভাবে নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবা করতে চাই।
অন্য দুইজন নারী ভলান্টিয়ার তায়েবা ও বর্ষা বলেন, আমরা রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় রক্তদাতা প্রস্তুত করেছি। আন্দোলনকারী আহত শিক্ষার্থী ও সাধারণ রোগীদের রক্তের সাপোর্ট দিতে আমরা ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। রক্তের সাপোর্ট দিয়ে আমরা আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমাদের এমন মানবিক কার্যক্রমের কারণে গর্বিত আমাদের বাবা-মা।
তিনজনই এবার চলমান এইচএসসি ২০২৪-এর পরীক্ষার্থী। পাশাপাশি তারা মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। মানবিক তরুণ-তরুণীদের মাধ্যমে তৈরি হবে আগামীর নতুন মানবিক বাংলাদেশ- এমনটাই প্রত্যাশা করেন নারী বস্নাড ভলান্টিয়াররা।